ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

শিক্ষক-কর্মচারীদের আন্দোলন রহস্যজনক ॥ মাউশি সচিব

এমপিওভুক্তির দাবিতে দু’একদিনের মধ্যে অনশনে যাওয়ার হুমকি

প্রকাশিত: ০৫:০৭, ২০ জুন ২০১৮

এমপিওভুক্তির দাবিতে দু’একদিনের মধ্যে অনশনে যাওয়ার হুমকি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বৃষ্টি উপেক্ষা করেই মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে দশম দিনের মতো আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন নন-এমপিও শিক্ষক-কর্মচারীরা। এমপিওকরণের দাবিতে নানা স্লোগান আর বিক্ষোভ কর্মসূচী পালন করছেন তারা। আন্দোলন থেকে ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’, ‘এমপিও না দিলে বাড়ি ফিরে যাব না’, ‘একদফা এক দাবি এমপিওভুক্তিকরণ চাই’- স্লোগান তুলেছেন শিক্ষক-কর্মচারীরা। দু’একদিনের মধ্যে অনশনে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা। এদিকে শর্ত সাপেক্ষে নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তিতে সরকারের প্রতিশ্রুতির পরও আন্দোলন করাকে রহস্যজনক বলে মন্তব্য করেছেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মোঃ সোহরাব হোসাইন। মঙ্গলবার এ আন্দোলনের দশতম দিন পূর্ণ হয়েছে। নিজেদের অধিকার আদায়ে বিভিন্ন জেলা থেকে আগত নারী-পুরুষ শিক্ষক-কর্মচারীরা আন্দোলনে যুক্ত হয়েছেন। তারা বলেছেন, আমরা বেতন-ভাতার জন্য পরিবার ছেড়ে রাজপথে নেমেছি। ঈদের দিনেও পরিবারের সঙ্গে থাকতে পারিনি। একটু মিষ্টি মুখে দেয়ার ভাগ্য হয়নি। শিক্ষকতা করে কি আমরা অপরাধ করছি? ন্যায্য দাবি আদায়ে আমাদের স্ত্রী-সন্তান ছেড়ে রাস্তায় থাকতে হচ্ছে। আন্দোলনকারীরা অভিযোগ করেন, দীর্ঘ ১৫ থেকে ২০ বছর ধরে শিক্ষকতা করে এখনও বেতন-ভাতা পাচ্ছেন না। পরিবারের মৌলিক চাহিদা মেটাতে পারেন না। সমাজে তাদের কোনো সম্মান নেই। টিউশনি করিয়ে যা অর্থ আয় হয় তা দিয়ে অর্ধাহারে-অনাহারে দিন কাটাতে হয়। আন্দোলনকারী সংগঠন নন-এমপিও শিক্ষক-কর্মচারীদের ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যক্ষ গোলাম মাহমুদুন্নবী ডলার বলেন, আমাদের এমপিওভুক্তির জন্য প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি দিলেও তা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে না। উল্টো বিভিন্ন আইন তৈরি করে আমাদের বঞ্চিত করার চেষ্টা চলেছে। এ কারণে আমরা রাজপথে নামতে বাধ্য হয়েছি। আমরা বেতন-ভাতার দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে চলছি। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী এমপিওকরণের ঘোষণা দেয়ায় আমরা আন্দোলন স্থগিত করে বাড়ি ফিরে যাই। বলা হয়েছিল চলতি বছরের বাজেটে এমপিওভুক্তির বিষয়ে বরাদ্দ দেয়া হবে। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। উল্টো এমপিও নীতিমালার নামে আমাদের বিভক্ত করার চেষ্টা চলছে। তিনি ঘোষণা দেন এমপিওকরণের সুনির্দিষ্ট আশ্বাস ছাড়া শিক্ষক-কর্মচারীরা বাড়ি ফিরে যাবেন না। প্রতিদিন এ আন্দোলন তীব্র থেকে তীব্রতর হয়ে উঠছে। এতেও যদি আমাদের দাবি মেনে নেয়া না হয় তাহলে, রাজপথে বসেই আমাদের লাগাতার অনশন কর্মসূচী পালিত হবে। জীবন গেলেও আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব। ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ ড. বিনয় ভূষণ রায় বলেন, কোন অবস্থাতেই আমরা জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের রাজপথ ছাড়ব না। আমরা আশা করছি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তার প্রতিশ্রুতি দ্রুত বাস্তবায়ন করবেন। যতক্ষণ পর্যন্ত আমাদের দাবি বাস্তবায়ন না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত রাজপথ ছাড়ব না। গত ১০ জুন থেকে ননএমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশনের ডাকে পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান ও বিক্ষোভ কর্মসূচী চালিয়ে আসছেন শিক্ষকরা। তিনদিন রাস্তার ওপরই ইফতার করেছেন। ঈদের দিনে ভুখা মিছিল করেছেন। শিক্ষকদের এ আন্দোলন কর্মসূচী মঙ্গলবার ১০ দিনে গড়ালেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কেউ এখনো তাদের খোঁজখবর নেয়নি। জাতীয় প্রেসক্লাবের বিপরীতে পাশের সড়কে সকাল থেকে তারা অবস্থান নেন।
×