ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

আরও চীনা পণ্যের ওপর শুল্কের হুমকি ট্রাম্পের

প্রকাশিত: ০৬:৪৮, ২০ জুন ২০১৮

   আরও চীনা পণ্যের ওপর   শুল্কের হুমকি ট্রাম্পের

চীনের পণ্যের ওপর নতুন করে আরও বিশ হাজার কোটি ডলারের আমদানি শুল্ক বসানোর হুমকি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সোমবার রাতে এক বিবৃতিতে ট্রাম্প বলেছেন, যদি চীন নিজেদের অবস্থান পরিবর্তন না করে তাহলে ১০ শতাংশ শুল্ক বসানো হবে। এই বক্তব্যের ফলে দেশ দুটির মধ্যে চলমান বাণিজ্য যুদ্ধের আশঙ্কা আরও বেড়ে গেল। বিশ্বের এক নম্বর এবং দুই নম্বর অর্থনীতির মধ্যে এই বাণিজ্য যুদ্ধের পরিণতি নিয়ে বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ গভীর থেকে গভীরতর হচ্ছে। -খবর বিবিসির ট্রাম্প আগে থেকে বলে আসছেন, চীনের কাছে বাজার খুলে দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তিনি এক হিসাব দিয়ে বলেছেন যে, ২০১৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতি ছিল ৮শ’ বিলিয়ন বা ৮০ হাজার কোটি ডলার। আর এই ঘাটতির প্রধান কারণ চীনের সঙ্গে বাণিজ্যে ক্রমবর্ধমান ভারসাম্যহীনতা। চীন দুই দেশের মধ্যকার বাণিজ্য ঘাটতির সুযোগে অন্যায্যভাবে সুবিধা নিচ্ছে বলে তিনি বলছেন। গত সপ্তাহে তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন, চীন থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি করা পাঁচ হাজার কোটি ডলারের পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ হারে আমদানি শুল্ক আরোপ করা হবে। জবাবে চীন জানিয়েছিল, যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা সমপরিমাণ পণ্যের ওপর তারাও শুল্ক আরোপ করবে। এসব পণ্যের মধ্যে রয়েছে কৃষি পণ্য, গাড়ি ও সামুদ্রিক পণ্য। ট্রাম্প সেই হুমকির জবাবে বলেছিলেন, চীন মার্কিন কোম্পানি, শ্রমিক ও কৃষকের ওপর ‘বদলা’ নিতে চাইছে, যারা কোন দোষ করেনি। সর্বশেষ তিনি পাল্টা হুমকি দিয়ে বললেন, বেজিং যদি মার্কিন পণ্যে শুল্ক বসানোর সিদ্ধান্ত থেকে সরে না আসে তাহলে যুক্তরাষ্ট্র আরও চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক বসাবে। ট্রাম্পের কথামতো এই পদক্ষেপ নেয়া হলে তা চলমান বাণিজ্যিক দ্বন্দ্বকে আরও বাড়িয়ে তুলে তা যুক্তরাষ্ট্র ও চীনকে বাণিজ্য যুদ্ধে জড়িয়ে ফেলবে বলে ধারণা বিশেষকদের। ট্রাম্পের এই হুমকির প্রতিক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র ‘ব্ল্যাকমেল’ করছে অভিযোগ করে পাল্টা ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছে চীন। ওই বিবৃতিতে ট্রাম্প জানিয়েছেন, অতিরিক্ত আর কোন চীনা পণ্যের ওপর নতুন করে শুল্ক বসানো যায় তা চিহ্নিত করতে বাণিজ্য উপদেষ্টাদের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। তিনি বলেছেন, ‘যদি চীন তার ধরন পাল্টাতে অস্বীকার করে এবং সম্প্রতি ঘোষিত নতুন শুল্ক আরোপের বিষয়ে অনঢ় থাকে তবে নতুন এই শুল্ক কার্যকর করা হবে। ইতোমধ্যেই চীনের বার্ষিক ৩৪ বিলিয়ন ডলার বাণিজ্যের আওতাভুক্ত আট শতাধিক পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। আগামী ৬ জুলাই থেকে ওই শুল্ক আদায় শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। এসব খবরে মঙ্গলবার এশিয়ার বাজারগুলোতে দরপতন হয়। যুক্তরাষ্ট্র-চীনের বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও নাজুক হয়ে পড়বে আশঙ্কায় সোমবার থেকেই স্টক মার্কেটগুলোতে দরপতন শুরু হয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্রের আরোপ করা শুল্কের কারণে দেশটির কয়েকটি খাত ক্ষতির মুখে পড়বে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন দেশটির অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীরা। যুক্তরাষ্ট্রে প্রশাসন এসব খাত রক্ষার চেষ্টা করছে, কিন্তু খাতগুলো চীনা পার্টস ও সংযোজন শিল্পের ওপর নির্ভরশীল।
×