ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সুদের হার ‘সিঙ্গেল ডিজিটে’ আনার সিদ্ধান্ত বিএবির

প্রকাশিত: ০১:৪৩, ২০ জুন ২০১৮

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সুদের হার ‘সিঙ্গেল ডিজিটে’ আনার সিদ্ধান্ত বিএবির

স্টাফ রিপোর্টার ।। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিটে নামিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বেসরকারি ব্যাংক উদ্যোক্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স (বিএবি)। সংগঠনটির সভাপতি নজরুল ইসলাম মজুমদার জানিয়েছেন, আগামী ১ জুলাই থেকে ৯ শতাংশের বেশি সুদ নেয়া হবে না। দেশের অর্থনীতি ও উন্নয়নের ধারা চাঙা করতে এই সিদ্ধান্ত। বুধবার রাজধানীর গুলশানে জব্বার টাওয়ারে সংগঠনটির এক জরুরি বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এ সময় বিভিন্ন বেসরকারি ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও উদ্যোক্তা পরিচালকরা উপস্থিত ছিলেন। বিএবি সভাপতি বলেন, জুলাইয়ের ১ তারিখ থেকে তিন মাস মেয়াদি আমানতের সর্বোচ্চ সুদের হার হবে ৬ শতাংশ আর ঋণের সুদহার হবে ৯ শতাংশ। এর চেয়ে কোনো ব্যাংক সুদ বেশি নিতে পারবে না। যেসব ব্যাংক এ সিদ্ধান্ত মানবে না তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এর আগে মঙ্গলবার দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে বিনিয়োগে মুনাফার হার সিঙ্গেল ডিজিটে বা এক অঙ্কে নামিয়ে আনার ঘোষণা দেয় ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড। আগামী ১ জুলাই থেকে এ হার কার্যকর হবে। একই সঙ্গে আরও চারটি ব্যাংক একই ঘোষণা দেয়। বুধবার এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার বলেন, ইতোমধ্যে আগামী ১ জুলাই থেকে বেসরকারি খাতের পাঁচটি ব্যাংক ঋণের সুদহার এক অঙ্কে নামানোর ঘোষণা দিয়েছে। এর মধ্যে ইসলামী ব্যাংক, এসআইবিএল, ইউনিয়ন ব্যাংক, ফাস্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক ও আল-আরাফা ইসলামী ব্যাংক রয়েছে। এসব ব্যাংক প্রায় ৫০ শতাংশ ব্যাংক খাতের প্রতিনিধিত্ব করে। তারা যদি সিঙ্গেল ডিজিটে ঋণ নেয়ার ঘোষণা দেয় তাহলে আমরা কেন পারব না? তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আমাদের সিঙ্গেল ডিজিটে ঋণের সুদহার নামাতেই হবে। বিএবির সিদ্ধান্ত যদি কোনো ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকরা (এমডি) না মেনে বেশি সুদে আমানত রাখে তাদের বিরুদ্ধে পরিচালক ও চেয়ারম্যানরা ব্যবস্থা নেবে। এ ক্ষেত্রে যদি কোনো সমস্যা হয় তাহলে আমরা (উদ্যোক্তারা) দেখব। প্রধানমন্ত্রী আমাদের পাশে আছেন। উনি আমাদের সুযোগ-সুবিধা দেখবেন। ইউনিয়ন ব্যাংকের পরিচালক ও জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু এ সময় সুদহার কমানোর এ সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত পোষণ করেন। এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক লিমিটেডের (এনজিবি) চেয়ারম্যান নিজাম চৌধুরী বলেন, বৈঠকের সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত তবে এখন কম সুদে ঋণ দিলে ব্যাংক ব্যবসায় যে ক্ষতি হবে তা পূরণে কী করা যায় তার সিদ্ধান্ত নিতে হবে। একই সঙ্গে আমানত সংগ্রহে যে অসুস্থ প্রতিযোগিতা হয় তা বন্ধের দাবি জানান তিনি। সাউথইস্ট ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান ও পরিচালক আজিম উদ্দিন আহমেদ বলেন, ব্যাংকগুলো একদিকে কম সুদে আমানত নিতে পারছে না। অন্যদিকে বেশি সুদে ঋণ দিলে ব্যবসার ক্ষতি হচ্ছে। এখন আমরা ব্যাংক টেকাব নাকি ব্যবসা টেকাব- এ নিয়ে চিন্তায় আছি। বিষয়টি বিবেচনা করতে হবে। এনআরবি কমার্শিয়াল (এনআরবিসি) ব্যাংকের চেয়ারম্যান তমাল এস এম পারভেজ বলেন, ব্যাংকের সুদহার কমানোর পাশাপাশি সঞ্চয়পত্রের দিকে নজর দিতে হবে। এখানে সুদহার বেশি তাই অনেক ব্যবসায়ী সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করছেন। এটি বন্ধ করতে হবে। তা না হলে ব্যাংকের সুদহার কমিয়ে লাভ হবে না। এ সময় বিএবি সভাপতি বলেন, যেসব বিষয়ে প্রশ্ন উঠেছে আমরা এগুলো দেখব। এছাড়া সুদহার কমানোর সিদ্ধান্তের বিষয় প্রধানমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে জানাব। আশা করছি বাংলাদেশ ব্যাংক সুদহার কমানোর বিষয়ে সহযোগিতা করবে। বেসরকারি ব্যাংকগুলো আজকের এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করবে।
×