ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

বাউফলে ৬টি স্লুইসগেট এখন কৃষকের গলার কাটা

প্রকাশিত: ০২:৫৬, ২০ জুন ২০১৮

বাউফলে ৬টি স্লুইসগেট এখন কৃষকের গলার কাটা

নিজস্ব সংবাদদাতা, বাউফল ॥ বাউফলে ৬টি স্লুইচগেট এখন কৃষকের গলার কাটায় পরিণত হয়েছে। জোয়ারের পানি নিরসন ও জলবদ্ধতা হাত থেকে কৃষকদের রক্ষার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডে স্লুইচগেটগুলো নির্মাণ করলেও এখন তা কাজে লাগছেনা। কর্তৃপক্ষের তদারকি ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে স্লুইচ গেটের কপাট ভেঙ্গে গেছে এবং মুখে পলি পড়ে ভড়াট হয়ে গেছে। ফলে পানি উঠানামা করতে পারছেনা। জানা গেছে, উপজেলার নওমালার মৈশাদী খাল, বগা ইউনিয়নের বগা ও নওমালা খালের মুখে, হাজিরহাট খালের মুখে, ছোনখোলা খালের মুখে , শৈলা খালের মুখে, এবং কাশিপুর খালের মুখে ১৯৯০ সালে প্রায় ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে এ স্লুইচগেট গুলো নির্মিাণ করা হয়। পটুয়াখালী পানি উন্নয়ন বোর্ড এ স্লুইচগেটগুলো নির্মাণ করেন । এসব স্লুইচগেট অপরেট করার জন্যে পানি উন্নয়ন বোর্ডের একজন চাবি অপরেটর থাকার কথা । কিন্তু কোন অপরেটর নিয়োগ না দিয়ে চাবি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি বা মাতব্বরের কাছে দেয়ায় জটিলতার সৃষ্টি হয়। এসব স্লুইচ গেটের মধ্যে ছোনখোলা ও মৈশাদী স্লইচগেটের কপাট ভেঙ্গে গেছে । অপর একটি কপাট দিয়ে স্থানীয় লোকজন জোঁয়ারের ও ভাটার সময় ফাঁদ পেতে মাছ শিকার করে । হাজির হাটের স্লইচগেটের একই অবস্থা হয়েছে । শৈলা খালের স্লুইচগেটটি অপরিকল্পিত ভাবে নির্মিত হওয়ায় তা কোন কাজে লাগছেনা। বগা ইউনিয়নের বগা খালের মুখে স্লুইচগেটটির চাবি এলাকার এক মাতব্বরের কাছে থাকায় তাকে উৎকোচ দিয়ে পানি নিরসন করতে হচ্ছে । অভিযোগ রয়েছে পটুয়াখালী জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণে এ স্লুইট গেটগুলোর বেহাল অবস্থায় হয়েছে । ফলে ব্যাহত হচ্ছে কৃষকের আউশ ,আমন ও রবি ফসল চাষ । এসব স্লইচগেট দিয়ে জোঁয়ার ও ভাটার পানি অপসরন না হওয়ায় খালগুলো এখন মরে যাচ্ছে। আবার বর্ষা মৌসুমে জলবদ্ধার সৃষ্টি হয়ে ব্যাপক ফসলহানী ঘটে। রবি মৌসুমে পানির অভাবে চাষাবাদ ব্যাহত হয়। আদাবাড়িয়ার চেয়ারম্যান সামসুল হক ফকির বলেন,কাশিপুর ও হাজির হাট এবং শৈল খালের তিনটি স্লইচগেটের মধ্যে শৈলা স্লুইচগেটটি আতুর ঘড়ে বন্ধ রয়েছে । এ ছাড়া কাশিপুর ও হাজিরহাট স্লুইচগেট দিয়ে পানি অপসরণ হচ্ছে না । একসময় হাজির হাট খালটি খরস্রোতা হলেও বর্তমানে তা মরা খালে পরিণত হয়েছে। তিনি আরও জানান, কাশিপুর খালের বাঁধ কেটে দিয়ে ওই স্থানে একটি সেতু হলে দুটি ইউনিয়নের ফসলি জমি আবাদে কৃষকের সুফল বয়ে আনবে । এ ব্যাপারে পটুয়াখালী জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রকৌশলী মোঃ হাসানুজ্জামান বলেন, জনবল না থাকায় স্থাণীয় সরকার প্রতিনিধিদের হাতে স্লুইচগেটেরে চাবি দেয়া হয় । যথাসময়ে পানি নিরসনের জন্য তাদেরকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে । বেশ কয়েকটি স্লুইচগেটের মুখ পলি পরে বন্ধ এবং কপাট নষ্ট হয়ে যাওয়ার কথা তিনি স্বীকার করে বলেন, ওইসব স্লুইচগেটের সংস্কারের জন্য উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে । বরাদ্দ করা হলে ব্যবস্থা নেয়া হবে ।
×