ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

সংসদে বাজেট আলোচনা

সমৃদ্ধ দেশ গড়ায় প্রধানমন্ত্রীকে টানা তৃতীয়বার বিজয়ী করবে জনগণ

প্রকাশিত: ০৭:৩৫, ২২ জুন ২০১৮

 সমৃদ্ধ দেশ গড়ায় প্রধানমন্ত্রীকে টানা তৃতীয়বার বিজয়ী করবে জনগণ

সংসদ রিপোর্টার ॥ প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে সংসদ সদস্যরা বিএনপির সহায়ক সরকারের দাবি নাকচ করে দিয়ে বলেছেন, সংবিধান অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের অধীনেই আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আগামী নির্বাচন বানচাল করতে বিএনপিকে নির্বাচনে অনিবার্য করার ষড়যন্ত্র চলছে। কিন্তু নির্বাচনে কোন দল গেল বা না গেল সেজন্য নির্বাচন বসে থাকবে না। সন্ত্রাস-জঙ্গীবাদ-মাদক, অগ্নিসন্ত্রাস-জ্বালাও-পোড়াও মুক্ত উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণে দেশের জনগণ বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে টানা হ্যাটট্রিক প্রধানমন্ত্রী করতে উন্মুখ। বিএনপি-জামায়াতসহ স্বাধীনতাবিরোধী কোন অপশক্তিই শেখ হাসিনার বিজয় রথকে থামাতে পারবে না। প্রথমে স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এবং পরে ডেপুটি স্পীকার এ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বি মিয়ার সভাপতিত্বে বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত ২০১৮-১৯ সালের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক, সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ, সরকারী দলের আবদুর রহমান, এবি তাজুল ইসলাম, মুজিবুর রহমান মানিক, মাহবুব আলী, ইউনুস আলী সরকার, আবদুল মালেক, ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা, সাবিনা আক্তার তুহিন, সেলিনা বেগম, বেগম ওয়াশিকা আয়শা খান, সেলিনা জাহান লিটা, জাতীয় পার্টির (জেপি) মোঃ রুহুল আমিন এবং জাতীয় পার্টির শরিফুল ইসলাম জিন্নাহ, নুরুল ইসলাম তালুকদার, পীর ফজলুর রহমান প্রমুখ। আলোচনায় অংশ নিয়ে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুর রহমান আগামী নির্বাচনকে বানচাল করতে একটি রাজনৈতিক দলকে (বিএনপি) নির্বাচনে অনিবার্য করে তোলার ষড়যন্ত্র চলছে উল্লেখ করে বলেন, এদেশে অনেক নিবন্ধিত দল আছে। নিবন্ধিত সকল রাজনৈতিক দল নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। স্বাধীন নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের অধীনেই নির্বাচন হবে। নির্বাচনের সময় যে নির্বাচনকালীন সরকার দায়িত্ব পালন করবে সেই সরকারের প্রধান হবেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাই কোন ষড়যন্ত্রে কাজ হবে না। নির্বাচন বানচাল করা যাবে না। যারা ষড়যন্ত্র করছেন তারা ষড়যন্ত্রের পথ ছেড়ে দিন। প্রতিমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ বলেন, উন্নয়নের কথা স্বীকার করে আগামী নির্বাচনেও দেশের জনগণ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভোট দিয়ে পুনর্বার নির্বাচিত করবে। নিরঙ্কুশ বিজয় নিয়ে দেশের জনগণের অবশিষ্ট স্বপ্ন পূরণ করে দেশকে উন্নয়ন-অগ্রগতির মহাসোপানে নিয়ে যাবেন। বাংলাদেশ আজ সারাবিশ্বের সামনে অপ্রত্যাশিত উন্নয়নের মডেল। কোন ষড়যন্ত্রই এই অগ্রযাত্রা রুখতে পারবে না। জাতীয় পার্টির শরিফুল ইসলাম বলেন, প্রস্তাবিত বিশাল বাজেট বাস্তবায়ন করা বিশাল চ্যালেঞ্জ। এক্ষেত্রে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও নৈতিক শক্ত অবস্থানের প্রয়োজন রয়েছে। ব্যাংকগুলোতে অনিয়ম, দুর্নীতি ও হরিলুটের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে তার কোন তথ্য এই বাজেটে নেই। প্রতিবছরই বিপুল সংখ্যক মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়ছে। এদের কর্মসংস্থানেরও কোন দিক-নির্দেশনা নেই বাজেটে। প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বাস্থ্য খাতে বাজেট বরাদ্দের দাবি জানিয়ে বলেন, বর্তমান সরকারের গত ১০ বছর দেশের যে বিস্ময়কর উন্নয়ন-অগ্রগতি হয়েছে, তা দেশে বিশ্বনেতারাও বঙ্গবন্ধুর ভাষায় বলছেন বাঙালী জাতিকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না। বাংলাদেশ আজ জঙ্গী-সন্ত্রাস, অগ্নিসন্ত্রাস, জ্বালাও-পোড়াও মুক্ত। একমাত্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আছে বলেই তা সম্ভব হয়েছে। তাই দেশের মানুষ আগামী নির্বাচনে আবারও নৌকায় ভোট দিয়ে বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় আনতে উন্মুখ। বিএনপি-জামায়াতসহ অপশক্তিরা শত ষড়যন্ত্র করেও শেখ হাসিনাকে আটকাতে পারবে না। জাতীয় পার্টির পীর ফজলুর রহমান বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে অর্থমন্ত্রী সরকারের জয়গান গাইলেও ব্যর্থতার ব্যাপারে নিশ্চুপ থেকেছেন। নিজের মন্ত্রণালয়ের ব্যর্থতাও সরকারের কাঁধে ফেলে দিয়েছেন। বাংলাদেশ বহুদূর এগিয়ে গেলেও অনেক ক্ষেত্রেই ত্রুটি-বিচ্যুতি রয়েছে। ৬০ হাজার টাকার ঋণ মাথায় নিয়ে একটি শিশুর জন্ম হচ্ছে। ধনীরা আরও ধনী হচ্ছে, দেশের সব সম্পদ কিছু মানুষের হাতে চলে যাচ্ছে। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছে কাক্সিক্ষত সাফল্য পৌঁছাচ্ছে না। সাবেক প্রতিমন্ত্রী এবি তাজুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশে এমন কোন জায়গা নেই যেখানে বর্তমান সরকারের উন্নয়নের ছোঁয়া পড়েনি। দেশ যখন সব দিক থেকে এগিয়ে যাচ্ছে, তখন পরাজিত অপশক্তি বিএনপি-জামায়াত দেশে-বিদেশে নানা ষড়যন্ত্র-চক্রান্তে মেতে উঠেছে। সংবিধান অনুযায়ী যথা সময়ে নির্বাচন হবে। সেই নির্বাচনে কে এলো বা কে এলো না, এটা আওয়ামী লীগ কিংবা সরকারের কোন ব্যাপার নয়। এটি যে কোন রাজনৈতিক দলের নিজস্ব সিদ্ধান্ত। আওয়ামী লীগ কখনও পেছনের দরজা, ষড়যন্ত্র কিংবা সেনা ছাউনির সহযোগিতায় ক্ষমতায় আসেনি। আওয়ামী লীগ প্রতিবারই ক্ষমতায় এসেছে গণতান্ত্রিক উপায়ে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের মাধ্যমে। আগামী নির্বাচনের মাধ্যমেও জনগণ ফের আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আনবে। জাতীয় পার্টির সদস্য নুরুল ইসলাম তালুকদার বলেন, ব্যাংক থেকে শত শত কোটি টাকা লুট হয়ে গেল, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি হয়ে গেল, পুঁজিবাজার কেলেঙ্কারি ঘটল, কিন্তু দোষী কাউকেই ধরা হলো না, শাস্তি হলো না। যে অন্যায় করে, আর যারা অন্যায় প্রশ্রয় দেয় তারা উভয়েই দোষী। কিন্তু বাজেটে এ নিয়ে কোন কথা নেই। সরকারী দলের মুহিবুর রহমান মানিক বলেন, রাশিয়ার মানুষ ভøাদিমির পুতিনকে ২৫ বছর দেশ পরিচালনার সুযোগ দিয়েছে, মালয়েশিয়ার মাহাথির মোহাম্মদ টানা ২২ বছর ক্ষমতায় থাকার পর আবার তিনি ক্ষমতাসীন হয়েছে। এ কারণেই দেশ দুটির এত উন্নতি। বাংলাদেশের মানুষও আগামী নির্বাচনে উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশে পৌঁছানোর জন্য শেখ হাসিনার অব্যাহত শাসন নিশ্চিত করবে। ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা বলেন, বিএনপি খালেদা জিয়া মহান মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, সেনাবাহিনী, নির্বাচন কমিশনের প্রতি কোন আস্থা-বিশ্বাস নেই, তাঁর একমাত্র আস্থা পরাজিত পাকিস্তান। বিএনপির ধানের শীষ আজ মরণ শীষে পরিণত হয়েছে। আগামী নির্বাচনে না এলে দলটির অস্তিত্বই খুঁজে পাওয়া যাবে না।
×