সংসদ রিপোর্টার ॥ বাড়ীওয়ালা ও ভাড়াটিয়ার মধ্যে বাড়ী ভাড়া নিয়ে সৃষ্ট পরিস্থিতি নিরসনের লক্ষ্যে ভাড়াটিয়াদের সুযোগ-সুবিধার দিক খেয়াল রেখে বাড়ি ভাড়া নিয়ন্ত্রন আইন, ১৯৯১ পাস হয়। এ আইনে বাড়ির মালিক ও ভাড়াটিয়ার মধ্যে সম্পর্ক বিনষ্টকারী ভাড়া বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে সুনিদিষ্ট বিধান রয়েছে। কোন ভাড়াটিয়া সংক্ষুদ্ধ হলে তার প্রতিকার প্রাপ্তির সুব্যবস্থা আছে। এ আইনের আশ্রয় নেওয়া গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত সাড়ে ৩ হাজার মামলা আদালতে বিচারাধিন আছে এবং ওই বছরে ৫৬৫টি মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে।
স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে রবিবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে টেবিলে উত্থাপিত প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকার দলীয় সংসদ সদস্য মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরীর প্রশ্নের লিখিত জবাবে এ তথ্য জানান আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী এ্যাডভোকেট আনিসুল হক।
সংসদ সদস্য শামীম হায়দার পাটোয়ারির প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী জানান, দেওয়ানী আদালতের মামলা জট কমাতে সংস্কারমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। পুরাতন দেওয়ানী মামলাগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিষ্পত্তির লক্ষ্যে প্রত্যেক আদালতে সমন জারী নিশ্চিত করা এবং দ্রুততম সাক্ষ্য গ্রহণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। পুরাতন মামলাগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিষ্পত্তির লক্ষ্যে সলিসিটরের নেতৃত্বে মনিটরিং সেল কাজ করছে। প্রতি জেলায় কেস ম্যানেজমেন্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে।
মন্ত্রী জানান, মামলার জট নিরসন করার লক্ষ্যে মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ নিরবিচ্ছিন্ন করা, ৩ বছরের অধিক পুরাতন মামলা অপিরহার্যতা ব্যতিত মুলতবী না দেওয়া ও অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পুরাতন মামলা নিষ্পত্তির বিষয়ে নিদের্শনা দেয়া হয়েছে। মামলার সংখ্যাধিক্য ও বিচারপ্রার্থী জনগণের সুবিধার বিষয়টি বিবেচনায় রেখে মামলার দীর্ঘসূত্রিতা নিরসনকল্পে বিভিন্ন ব্যাচে ধারাবাহিকভাবে সহকারী জজ নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। পাশাপাশি বিচারকের নতুন পদ সৃজনের বিষয়ে প্রক্রিয়া গ্রহণ করা হচ্ছে।
আইনমন্ত্রী বলেন, বিচার ব্যবস্থায় আধুনিক তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিচারপ্রার্থী জনগণের সুবির্ধার্থে সরকার ইতোমধ্যে বাংলাদেশ সুপ্রীমকোর্টসহ ১৩টি জেলায় ডিজিটাল ডিসপ্লে বোর্ড এর মাধ্যমে আদালতের দৈনিক কার্যতালিকা প্রদর্শনের প্রক্রিয়া গ্রহণ করা হয়েছে। দেওয়ানী আদালতের অবকাঠামো উন্নয়নে বিচারকদের এজলাস শেযার করতে না হয়, সে লক্ষ্যে ২৭টি জেলায় জেলা জজ আদালত ভবন উর্ধ্বমুখি সম্প্রসারণ করা হয়েছে। নি¤œ আদালতের বিচারকদের দক্ষতা বৃদ্ধি করে বিচার প্রক্রিয়াকে গতিশীল করার লক্ষ্যে সরকার তাদের বিদেশে প্রশিক্ষণের কার্যক্রম গ্রহণ করেছে।
মন্ত্রী বলেন, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে মামলা জট নিরসনে ট্রাক এলোকেশন সিষ্টেমে মামলাগুলোকে স্মল ট্র্যাক, ফাস্ট ট্র্যাক বা মাল্টি ট্র্যাকে ভাগ করা হয়। সাধারণত সেসব দেশ মামলা আর্থিক মূল্যবান অনুযায়ী গুরুত্ব ও জটিলতা বিবেচনায় মামলা এলোকেশন করেন।
সরকার দলীয় সংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী জানান, আইন কমিশনকে শক্তিশালী ও কার্যকর এবং গতিশীল করার লক্ষ্যে ৩টি পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। এগুলোর মধ্যে আইন কমিশনের স্থায়ী ও নিজস্ব অফিস স্থাপনের জন্য বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট ভবনের ১১-১২ তলা উর্ধ্বমুখি ভবনের কাজ চলমান রয়েছে। এ ভবন নির্মাণের জন্য ১৪ কোটি ৭২ লাখ টাকা বরাদ্ধ আছে এবং কমিশনের গতিশীলতা ফেরাতে ৩১টি গবেষকসহ বিভিন্ন ক্যাটাগরির নতুন পদ সৃজনের প্রক্রিয়া চলমান আছে।