ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সিঙ্গাপুরের উদ্যোক্তাদের ৫০০ একর জমি বরাদ্দ : বাণিজ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০২:০১, ১১ জুলাই ২০১৮

সিঙ্গাপুরের উদ্যোক্তাদের ৫০০ একর জমি বরাদ্দ : বাণিজ্যমন্ত্রী

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য সিঙ্গাপুরের উদ্যোক্তাদের ৫০০ একর জমি বরাদ্দ দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। তিনি বলেন, সিঙ্গাপুরের বিনিয়োগ আনতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগ্রহে এই জমি বরাদ্দ দেয়া হবে। তবে ভবিষ্যতে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াতে জমি বরাদ্দের পরিমাণ আরও বাড়ানো হতে পারে। সিঙ্গাপুরের ব্যবসায়ীগণ বাংলাদেশে তথ্য প্রযুক্তি, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি এবং আবাসন খাতে বিনিয়োগ করতে বেশি আগ্রহের কথা জানিয়েছে। বুধবার ঢাকার প্যানপ্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে বাংলাদেশে সফররত সিঙ্গাপুর বিজনেস ফেডারেশনের ব্যবসায়ীদের সাথে মতবিনিময়ের পর সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। সিঙ্গাপুর ইন্ডিয়া চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং বাংলাদেশ সফররত বিজনেস ডেলিগেশনের ডেপুটি চিফ প্রসুন মুখার্জীর নেতৃত্বে বাণিজ্য প্রতিনিধি দলে ছিলেন- বাংলাদেশ বিজনেস চেম্বার অব সিঙ্গাপুর এর প্রেসিডেন্ট মোহা. শহিদুজ্জামান, ফেডারেশনের এ্যাসিসটেন্ট এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর কোডি লি, ডিরেক্টর আলান টান, এ্যাসিসটেন্ট ম্যানেজার মার্ক ইয়ো, সিঙ্গাপুরস্থ বিএফএন ফুডস লি. এর চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার মোহাম্মদ বাবুল আক্তারসহ প্রতিনিধিদলের অন্যান্য সদস্যবৃন্দ। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, সিঙ্গাপুরের ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশের স্পেশাল ইকোনমিক জোনে বড় ধরনের বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। সিঙ্গাপুর বাংলাদেশের ঘনিষ্ট বন্ধু ও ব্যবসায়ীক অংশীদার। সিঙ্গাপুরের সাথে বাংলাদেশের চলমান বাণিজ্য চার বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি। তিনি বলেন, আগামী দিনগুলোতে বাণিজ্যের পরিমান আরো বৃদ্ধি পাবে। এখন বাংলাদেশের ১৫০টির বেশি কোম্পানি সিঙ্গাপুরে বাণিজ্য করছে। সিঙ্গাপুর বিজনেস ফেডারেশনের ব্যবসায়ীগণ ৭-১৩ জুলাই বাংলাদেশ সফর করছেন। এই সময়ে ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদল বাংলাদেশে ব্যবসার পরিবেশ যাচাই-বাচাই করেছেন। বিভিন্ন অঞ্চল পরিদর্শন করেছেন এবং সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ গুলোর সাথে মতবিনিময় করেছেন। বাংলাদেশ সরকার বিনিয়োগের জন্য বিশেষ সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে। এখন শতভাগ বিনিয়োগ করার সুযোগ রয়েছে, যে কোন সময় বিনিয়োগকৃত অর্থ লাভসহ ফিরিয়ে নিতে পারবেন। বিনিয়োগকারীদের এ অধিকার আইন পাস করে সংরক্ষণ করা হয়েছে। সিঙ্গাপুরের বিনিয়োগকারীগণ বাংলাদেশে বিনিয়োগ করলে লাভবান হবেন। সিঙ্গাপুরের ব্যবসায়ীগণ বাংলাদেশে আইটি, পাওয়ার ও হাউজিং সেক্টরে বিনিয়োগ করতে বেশি আগ্রহী। ইতোমধ্যে উদ্যোক্তারা বিনিয়োগের প্রস্তুতি নিয়েছে। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের রফতানি এখন প্রায় ৩৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। দিনদিন রফতানির পরিমান বৃদ্ধি পাচ্ছে। দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন ১৮ হাজার মেগাওয়াট ছাড়িয়ে গেছে। নতুন নতুন গ্যাস ক্ষেত্র আবিস্কৃত হয়েছে, এলএনজি আমদানি শুরু হয়েছে। পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ে তোলা হচ্ছে। এ কারণে শিল্প কলকারখানায় বিদ্যুৎ ও গ্যাসের কোন সমস্যা হবে না। সরকার সেভাবেই সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে ১০০টি স্পেশাল ইকোনমিক জোন গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছেন। বেশ কয়েকটি ইকোনমিক জোনের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। সিঙ্গাপুরকে একটি স্পেশাল ইকোনমিক জোন বরাদ্দ প্রদান করা হবে। তোফায়েল আহমেদ বলেন, সফররত বিজনেস ডেলিগেশনের সদস্যগণ বাংলাদেশ সফর করে সন্তোষ প্রকাশ করেছে। বিনিয়োগের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম সম্পন্ন করা হবে। বাংলাদেশ সরকার সিঙ্গাপুরের বিনিয়োগের বিষয়ে প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহযোগীতা প্রদান করা হবে।
×