ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ইয়াবার ভুক্তভোগী মিয়ানমারও

বিজিবি-বিজিপি বৈঠক ॥ সীমান্তে মাইন থাকলে অপসারণ

প্রকাশিত: ২২:৫৮, ১২ জুলাই ২০১৮

বিজিবি-বিজিপি বৈঠক ॥ সীমান্তে মাইন থাকলে অপসারণ

অনলাইন ডেস্ক ॥ দেশজুড়ে ইয়াবার আগ্রাসনের প্রসঙ্গে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মিয়ানমারের দিকে আঙুল তুললেও মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি) বলছে ভিন্নকথা। তাদের দাবি, মিয়ানমারও ইয়াবার আগ্রাসনে ভুক্তভোগী। এদিকে, রোহিঙ্গা সংকটের পর বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে মাইন পুঁতে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেলেও অস্বীকার করেছে বিজিপি। বাহিনীটি বলছে, মিয়ানমার সিকিউরিটি ফোর্স কখনও মাইন বা ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি) ব্যবহার করে না। তারপরেও সীমান্তে মাইন পাওয়া গেলে যৌথভাবে সেগুলো অপসারণের কথা জানান তারা। বৃহস্পতিবার রাজধানীর পিলখানায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদর দফতরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে একথা জানায়। গত ৯ জুলাই থেকে পিলখানায় চার দিনব্যাপী শুরু হওয়া বিজিবি-বিজিপি সিনিয়র পর্যায়ের সীমান্ত সম্মেলনের বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে যৌথভাবে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে মিয়ানমার প্রতিনিধিদের পক্ষে দোভাষীর সহায়তায় সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন বিজিবি’র অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মজিবুর রহমান। ইয়াবার অন্যতম যোগানদাতা মিয়ানমার থেকে চোরাইপথে ইয়াবা প্রবেশ বন্ধে বিজিপি'র উদ্যোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মিয়ানমারও ইয়াবার আগ্রাসনে ভুক্তভোগী বলে জানিয়েছে। ইয়াবাসহ যেকোন মাদক চোরাচালান রোধে পারস্পরিক সহযোগিতার বিষয়ে বিজিপি আশ্বাস দিয়েছে। ইয়াবা পাচার রোধে তারা তাদের তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে বলেও জানিয়েছে। মাদকের বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযানের পর বাংলাদেশ থেকে অনেক গডফাদার মিয়ানমারে আশ্রয় নিয়েছে-এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাংলাদেশ থেকে এমন মাদক ব্যবসায়ীদের একটি তালিকা মিয়ানমারকে দেওয়া হয়েছে। তাদের ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। সীমান্তে মাইন পুঁতে রাখার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মিয়ানমার সিকিউরিটি ফোর্স মাইন বা আইইডি ব্যবহার করে না বলে জানিয়েছে। তারপরেও পাওয়া গেলে তারা বিজিবি'র সঙ্গে যোগাযোগ করে সমন্বিতভাবে সেগুলো নিষ্ক্রিয় করার কথা বলেছে। দুই বাহিনীর মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নের চ্যালেঞ্জের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের সম্পর্ক আগের চেয়ে অনেক ভালো। নিচের দিকে বিওপি লেভেলে যোগাযোগে ভাষাগত সমস্যা হলেও অফিসার লেভেলে দিন দিন সম্পর্ক উন্নয়নের দিকে যাচ্ছে। আমরা উভয়পক্ষ আন্তরিকতার সঙ্গে চেষ্টা করছি। এছাড়া, উভয়পক্ষ বর্ডার লিয়াজোঁ অফিসের কার্যক্রম দ্রুত বাস্তবায়নের উপর গুরুত্ব দিয়েছে। যার মাধ্যমে দুই বাহিনীর সম্পর্ক উন্নয়নের সঙ্গে সীমান্ত ব্যবস্থাপনায় নতুন দিগন্তের সূচনা হবে বলেও মনে করছে উভয়পক্ষ। রোহিঙ্গা নাগরিকদের নির্যাতনের অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখায় বিজিপি'র প্রতিনিধিরা। এ সময় ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মজিবুর রহমান বলেন, রোহিঙ্গা সংকটের বিষয়টি অনেক বড়। এটা নিয়ে দুই দেশের সরকারের উচ্চপর্যায়ে আলোচনা হচ্ছে। এ বিষয়ে জাতিসংঘ কথা বলছে। এ বিষয়ে আমাদের এই সম্মেলনে কোন আলোচনা হয়নি, সীমান্ত নিরাপত্তা ও অবৈধ গমনাগমনের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। মিয়ানমারের চিফ অব পুলিশ জেনারেল স্টাফ, পুলিশ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মায়ো থানের নেতৃত্বে মিয়ানমারের ১১ সদস্যের প্রতিনিধিদল সীমান্ত সম্মেলনে অংশ নিয়েছে। অন্যদিকে, বাংলাদেশের পক্ষে বিজিবির অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আনিছুর রহমানের নেতৃত্বে ১৫ সদস্যের প্রতিনিধিদল অংশ নিয়েছে।
×