ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মানবতাবিরোধী অপরাধে ৪ রাজাকারের মৃত্যুদণ্ড

প্রকাশিত: ১৮:৫৮, ১৭ জুলাই ২০১৮

মানবতাবিরোধী অপরাধে ৪ রাজাকারের  মৃত্যুদণ্ড

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাত্তরে মৌলভীবাজারের রাজনগরে মানবতাবিরোধী অপরাধে যুক্ত থাকার দায়ে তখনকার রাজাকার বাহিনীর চার সদস্যকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত। আজ মঙ্গলবার বিচারপতি শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এ মামলার রায় ঘোষণা করে। আসামিদের মধ্যে ৭৯ বছর বয়সী আকমল আলী তালুকদার কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন। বাকি তিন আসামি আব্দুন নূর তালুকদার ওরফে লাল মিয়া (৬৬), আনিছ মিয়া (৮০) ও আব্দুল মোছাব্বির মিয়া (৬৭) পলাতক। রায়ে বলা হয়, আসামিদের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের আনা দুটি অভিযোগই প্রমাণিত হয়েছে। এর মধ্যে একটি অভিযোগে চার আসামির সবাইকে মৃত্যুদণ্ড এবং অন্য অভিযোগে সবাইকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। মৃত্যু পর্যন্ত ফাঁসির দড়িতে ঝুলিয়ে চার যুদ্ধাপরাধীর সাজা কার্যকর করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে রায়ে। আদালতের নথির তথ্য অনুযায়ী, ওই চার জন একাত্তরে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতায় রাজাকার বাহিনীর সদস্য হিসেবে রাজনগরের পাঁচগাও গ্রামে বিভিন্ন মানবতাবিরোধী অপরাধ ঘটায়। তাদের মধ্যে মাদ্রাসা শিক্ষক আকমল ও লাল মিয়া সে সময় মুসলিম লীগের রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন। আকমল ছিলেন পাঁচগাও ইউনিয়ন শান্তি কমিটির সদস্য। বছর দুই আগে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে বিচারের মুখোমুখি করতে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হলে লাল মিয়া, আনিছ ও মোছাব্বির পালিয়ে যান। তার আগে তারা জামায়াতে ইসলামীর সক্রিয় সদস্য ছিলেন বলে প্রসিকিউশনের ভাষ্য। পলাতক তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করে সাজা কার্যকর করতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পুলিশের আইজিকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে ট্রাইব্যুনালের রায়ে। নিয়ম অনুযায়ী ট্রাইব্যুনালের মামলায় রায়ের এক মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ আদালতে আপিল করা যায়। তবে পলাতক আসামিকে সে সুযোগ নিতে হলে আত্মসমর্পণ করতে হবে। অভিযোগ গঠনের মধ্যে দিয়ে গত বছরের ৭ মে এ মামলার বিচার শুরু করে ট্রাইব্যুনাল। প্রসিকিউশন ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে গত ২৭ মার্চ মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ (সিএভি) রাখা হয়। ট্রাইব্যুনালে এ পর্যন্ত রায় আসা ৩৩টি মামলার ৭৮ আসামির মধ্যে পাঁচজন বিচারাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। মোট ৭৩ জনের সাজা হয়েছে, যাদের মধ্যে ৪৬ যুদ্ধাপরাধীর সর্বোচ্চ সাজার রায় এসেছে।
×