ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

কোটা আন্দোলন ॥ প্রশ্ন প্রধানমন্ত্রীর

প্রকাশিত: ০৫:৪৭, ১৮ জুলাই ২০১৮

কোটা আন্দোলন ॥ প্রশ্ন প্রধানমন্ত্রীর

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী নির্বাচনে যুদ্ধাপরাধীরা যেন রাষ্ট্র পরিচালনা ও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে না আসতে পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। যদি আল্লাহ চান এবং জনগণ যদি নৌকায় ভোট দেন তাহলে আবার ক্ষমতায় আসব, না দিলে আসব না। কিন্তু তার আগে আমার কাজগুলোকে সুরক্ষিত করতে চাই। যাতে আমার দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে কেউ আর ছিনিমিনি খেলতে না পারে এবং তাদের কাছ থেকে কেউ যেন আর টাকা কেড়ে নিতে না পারে। মানুষের পাশে থাকা ও তাদের সেবা করাই আমাদের একমাত্র লক্ষ্য। মঙ্গলবার গণভবন থেকে ডিভিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানী ভাতা ইলেকট্টনিক পদ্ধতিতে সরাসরি (জিটুপি)’র মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যাংক হিসাবে প্রদান এবং সামাজিক নিরাপত্তা বলয় কর্মসূচীর আওতায় সুবিধাভোগীদের ভাতাসমূহ ইলেকট্টনিক পদ্ধতিতে (জিটুপি-গবর্মেন্ট টু পার্সন) বিতরণ কার্যক্রমের পৃথক কর্মসূচীর উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী এসব এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ২ লাখ ৩০ হাজার ৪৩৮ জন গেজেটেড মুক্তিযোদ্ধার মধ্যে ১ লাখ ৮৬ হাজার ৪০৪ জন এই ডিজিটাল পদ্ধতিতে সরাসরি তাদের ব্যাংক এ্যাকাউন্টের মাধ্যমে এই ভাতা পাবেন। প্রত্যেকে ১০ হাজার করে টাকা পাবেন। সঙ্গে বাংলা নববর্ষের ভাতাসহ দুই ঈদে দুটি উৎসব ভাতাও থাকবে। অন্যদিকে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচী প্রসঙ্গে জানানো হয়, এই কর্মসূচীর আওতায় প্রবীণ, শারীরিক প্রতিবন্ধী ও বিধবাসহ প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর প্রায় ৬৭ লাখ ভাতাপ্রাপ্ত মানুষ প্রতি মাসের নির্দিষ্ট সময়ে মোবাইল ফোনে এসএসএম পাওয়ার পর সরাসরি ব্যাংক থেকে তাদের প্রাপ্ত ভাতা তুলতে পারবেন। দুটি কর্মসূচীর উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা চাই বাংলাদেশ হবে ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত। বাংলাদেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে আমরা গড়ে তুলব। প্রতিটি গ্রামে মানুষ শহরের মতো সুবিধা পাবে। তিনি বলেন, সামাজিক নিরাপত্তার আওতায় সরকারী ভাতা দেয়ার পদ্ধতিতে স্বচ্ছতা সৃষ্টি করা হচ্ছে। যাতে দরিদ্র মানুষের ভাগ্য নিয়ে আর কেউ ছিনিমিনি খেলতে না পারে। তাদের সম্পদ ও টাকা পয়সা, কেউ কেড়ে নিতে না পারে। শেখ হাসিনা বলেন, আগে ভাতার টাকা ব্যাংক ও পোস্ট অফিসের মাধ্যমে যেত। এখন ডিজিটাল বাংলাদেশ। আজ আমরা সেই ডিজিটাল পদ্ধতিতে যার যা প্রাপ্য তার কাছেই পৌঁছে দেব। কেউ আর কমিশন খেতে পারবে না। সরাসরি টাকা আপনার হাতে পৌঁছে যাবে। তিনি বলেন, টাকা প্রাপকদের নামের একটি ডাটাবেজ করে রাখা হবে, যাতে কেউ তাদের নিয়ে কোনরকম খেলা খেলতে না পারেন। সরকারের পক্ষ থেকে ব্যক্তির কাছে অর্থাৎ ‘গবর্মেন্ট টু পার্সন’ এই ভাতা পৌঁছে যাবে। সরকারী ভাতার ওপর নির্ভর করে কর্মবিমুখ না হতে হতদরিদ্রদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষ যেন না খেয়ে কষ্ট না পায় সে জন্য আমরা সহযোগিতা দিচ্ছি। পুরো সংসারের দায়িত্ব আমরা নেব না। মানুষ যাতে পুরোপুরি ভাতার ওপর নিভর্রশীল না হয়, কর্মবিমুখ না হয়। এমন পরিমাণে ভাতা দেয়া হবে যা দিয়ে আপনি খাদ্য কিনতে পারবেন। কিন্তু আপনাকে কাজ করতে হবে। শুধু ভাতার ওপর নির্ভরশীল হলে চলবে না। যারা কর্মক্ষম তারা কাজ করবেন। একজন বয়স্ক মানুষ যখন ভাতার টাকাটা পান, সংসারে গুরুত্ব বাড়ে; ছেলে, ছেলের বউ, নাতি পুতি যারাই থাকুক তারা গুরুত্ব দেয়। সরকারপ্রধান বলেন, বিএনপি-জামায়াতের আমলে দুস্থ মানুষ সেবার বদলে বারবার নিগৃহীত হয়েছে। তখন সামাজিক ভাতা ১০০ টাকা দিলে মাঝখান থেকে ৫/১০ টাকা নিয়ে নিত। এখানেও দুর্নীতি ছিল। এমন ব্যবস্থা চালু করে যাচ্ছি যাতে মানুষকে আর ভোগান্তি পোহাতে না হয়। সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় ২০০৫ সালে ১৩ শতাংশ হতদরিদ্র মানুষ থাকলেও, ২০১৮ সালে ২৮ শতাংশ প্রান্তিক মানুষ এখন সুবিধা পাচ্ছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর ছয় বছর প্রবাস জীবন শেষে ১৯৮১ সালে আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দেশে ফেরার সময়কার স্মৃতিচারণ করে শেখ হাসিনা বলেন, তখন সারাদেশে ছুটে বেরিয়েছি। দেখেছি হাড্ডিসার, কঙ্কালসার মানুষ ক্ষুধার তাড়নায়, চিকিৎসার অভাবে ধুঁকে ধুঁকে মৃত্যুবরণ করছে। এসব দুর্ভাগা মানুষের জন্যই স্বাধীনতা, তাদের কল্যাণ করাই ছিল আমার বাবার (বঙ্গবন্ধু) রাজনীতি। তাদের জন্যই তিনি সারাজীবন জেল, জুলুম, অত্যাচার সহ্য করে গেছেন। দেশেকে ভালবাসা, দেশের মানুষকে ভালবাসার শিক্ষা তিনি বাবার কাছ থেকেই পেয়েছেন উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমার জীবনের একটাই লক্ষ্য এদেশের মানুষের জন্য কিছু করা। তিনি সুষ্ঠুভাবে দেশসেবার জন্য সকলের দোয়া প্রত্যাশা করেন। নরসিংদী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, গোপালগঞ্জের প্রান্তিক এলাকার সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচীর আওতায় উপকারভোগীদের সঙ্গে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় আরও ৭টি জেলা অনুষ্ঠানের সঙ্গে সংযুক্ত ছিল। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, উপকারভোগীদের ব্যাংক হিসাবে টাকা পৌঁছার খবর তাদের মোবাইল ফোনে চলে যাবে এবং স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ থেকে তারা টাকা তুলতে পারবেন। যেসব দুস্থ মানুষ টাকা আনতে ব্যাংকে বা ইউনিয়ন পরিষদে যেতে পারবেন না, তারা সমাজকল্যাণ অফিসকে জানালে বাড়িতে টাকা পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা করা হবে। ভাতাভোগীরা মধুমতি, এনআরবি, ব্যাংক এশিয়ার মাধ্যমে এই টাকা উত্তোলন করতে পারবেন। ভিসির বাড়িতে হামলার কথা ভাবতেও লজ্জা লাগে ॥ কক্সবাজার জেলার ভাতাভোগী মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনে হামলার ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটা ভাবতেও লজ্জা লাগে। এরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এটা আরও লজ্জার। কারণ আমিও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলাম। তিনি বলেন, যারা বিসিএস দেয় তারা কি মেধাবী নয়? তারা সকলেই তো মেধাবী। আর মেধাবী ছাড়া কি কেউ প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা দিতে পারে? পরীক্ষা তো যথেষ্ট কঠিন। বিশেষ করে পাবলিক সার্ভিস কমিশনে অনেক কঠিন পরীক্ষা দিতে হয়। মেধাবী ছাত্রছাত্রী ছাড়া তো কেউ এই পরীক্ষায় পাস করতে পারে না। আন্দোলনকারীদের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এরা (আন্দোলনকারীরা) এমনকি মেধাবী হয়ে গেল যে যারা পরীক্ষা দিচ্ছে, পাস করছে তারা মেধাবী নয়? এ ধরনের কথা-বার্তা এরা বলে কিভাবে বা এ নিয়ে হঠাৎ আন্দোলনে যাওয়ারই বা কি দরকার আছে? সেটা আমরা বুঝি না। আর আন্দোলন করলে আন্দোলন করবে, কিন্তু সেখানে ভাংচুর করা, ভিসির বাড়ি আক্রমণ করা, সেখানে ভিসি পরিবার লুকিয়ে কোন মতে জীবন বাঁচিয়েছে। আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েয় ছাত্রী। আমরাও আন্দোলন করেছি। দেখেছি খুব বেশি হলে ভিসির বাড়ির একটা ফুলের টব ভাঙ্গা হতো। কিন্তু কখনও ছাত্রছাত্রীরা এটা চিন্তাও করতে পারেনি, যে ভিসির বাড়ির মধ্যে ঢুকে গাড়িতে আগুন দেবে, ভাংচুর করা, বেডরুম পর্যন্ত ঢুকে গিয়ে লুটপাট করা, চুরি করা, এ ধরনের জঘন্য কাজ কোন শিক্ষার্থী করতে পারে না। তিনি বলেন, সাম্প্রতিক কোটাবিরোধী আন্দোলন দেখে মনে হয় প্রচ্ছন্নভাবে সরকারী চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের কোটার বিরুদ্ধেই আন্দোলন। মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের প্রয়োজনীয় সংখ্যায় পাওয়া না গেলে সুপ্রীমকোর্টের একটি নির্দেশনার আলোকে তাঁর সরকার মেধা তালিকা থেকে শূন্য পদ পূরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তিনি বলেন, আমরা তো আদালতের নির্দেশ অমান্য করতে পারি না এবং মুক্তিযোদ্ধাদের কোটা বাতিল করতে পারি না। কাজেই কেবিনেট সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করে দিয়েছি এ বিষয়টি দেখার জন্য। মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানী ভাতার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যাদের মহান আত্মত্যাগে স্বাধীনতা, সেই মুক্তিযোদ্ধারা সম্মানিত। তাঁদের ভাতার ব্যবস্থা করেছি। আমি জানি ভাতা দিয়ে সম্মান দেয়া যায় না। তবে আমি চাই না তাদের কেউ কখনও কষ্ট পান। উচ্চ আদালতের রায়ের পরও শিক্ষকসহ সমাজের জ্ঞানীরা কোটা আন্দোলনকারীদের কী করে সমর্থন দিচ্ছেন, এমন প্রশ্নও তোলেন প্রধানমন্ত্রী। একই সঙ্গে যুদ্ধাপরাধীরা যেন রাষ্ট্র পরিচালনা ও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে না আসতে পারে- সেদিকেও খেয়াল রাখতে তিনি সবার প্রতি আহ্বান জানান। ‘আপনি যেন বারবার কইরা ক্ষমতায় আসতারেন’ ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেন আবার ক্ষমতায় আসতে পারেন, সেটি কামনা করেছেন সরকারের সামাজিক কর্মসূচীর আওতায় কয়েকজন ভাতাভোগী। এই ভাতার ব্যবস্থা করে দেয়ায় সবাই প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, আগে তাদের জীবন ছিল দুর্বিষহ। এখন পরিবারে তাদের অবস্থান এখন আগের চেয়ে ভাল। প্রধানমন্ত্রীর ভিডিও কনফারেন্স অনুষ্ঠানে গোপালগঞ্জ থেকে যোগ দেন সুবিধাভোগী বাবুল গাজী। দুটি পা নেই তার। তিনি বলেন, ভাতা পাওয়ার আগে নিজেকে অসহায় মনে করতাম। যেদিন থেকে ভাতা পাই, সেদিন থেকে নিজেকে আর অসহায় মনে করি না। তিনি বলেন, আমার মা, আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী আমার মতো অচল সন্তানদের পাশে আছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী আমাদের জন্য কত কি করছেন। আমি সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় ঋণ নিয়ে ছোট্ট একটা ব্যবসা করছি, তাতে আমি ভাল আছি। আমার সংসারের সবাই আগের থেকে ভাল আছে। আমি কোন বোঝা না যে আমি কারও ওপর নির্ভর করব। বাবুল বলেন, আল্লাহর কাছে দোয়া করি, আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রীকে আল্লাহ অনেক দিন আমাদের মাঝে বাঁচিয়ে রাখুক এবং সে যেন বারবার নির্বাচিত হয়ে আমার মতো দুস্থদের, প্রতিবন্ধীদের পাশে দাঁড়াতে পারেন। আল্লাহর আছে আরও দোয়া করি, তিনি যেন প্রধানমন্ত্রীকে সকল বিপদ আপদ থেকে রক্ষা করেন। তিনি (প্রধানমন্ত্রী) যেন দেশ ও দশের জন্য কাজ করতে পারেন। এরপর নরসিংদী থেকে যোগ দেন প্রতিবন্ধী ভাতা পাওয়া একজন পুরুষ। নিজের নাম না জানিয়ে তিনি বলেন, আমার আগে অনেক কষ্ট হইত, আপনি আসার পর আমি ভাতাটা পাই। আমার পরিবার নাই, আমার ছেলে মেয়ে নেই। এই ভাতাটা নিয়া আমি আগের থেকে অনেক ভাল আছি। আপনি (প্রধানমন্ত্রী) আমাদের অনেক উৎসাহ দিছেন। এই উৎসাহে আমি অনেক খুশি, আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই। আপনি যেন বারবার আমাদের সামনে প্রধানমন্ত্রী হয়ে আসতে পারেন, সেই জন্য দোয়া করি। একই জেলা থেকে বিধবা ভাতা পাওয়া একজন নারী বলেন, আপনার বিধবা ভাতা পাওয়ার পর আমি অনেক খুশি মা। আপনি অনেক ভাল। আপনি বারবার ক্ষমতায় আয়েন যেন আমাদের আরও ভাল রাখতে পারেন। দোয়া করি মা, আপনি যেন বারবার কইরা ক্ষমতায় আসতারেন। ইলেক্ট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার সুবিধা চালু হওয়ায় ধন্যবাদ জানিয়ে এই ভাতাভোগী বলেন, আগে অনেক কষ্ট পাইতাম মা, এখন আর কোন কষ্ট নাই। এখন মোবাইলে টেকা আসবে। এখন কোন গেঞ্জাম নাই। কিশোরগঞ্জ থেকে বিধবা ভাতাভোগী রহিমা আক্তার প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশে করে বলেন, আপনি যে সহযোগিতা করেছেন, আমার খুব উপকার হয়েছে। আমি সংসারের কাজে লাগাই, ওষুধপত্র খাই। এই অর্থ পেয়ে আমার খুব উপকার হয়েছে। আরও উপকার হয়েছে, আগে শহরে যেতে হতো, লাইন ধরতে হতো, অর্থ খরচ করতে হতো, খুব কষ্ট হতো। এখন মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ম্যাসেজ পাইয়া ইউনিয়ন পরিষদ থেইকা এইটা নিয়া আসব, আমাদের কষ্ট হবে না, অর্থ খরচ হবে না। এই জন্য আমি আপনাকে আমি অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে ধন্যবাদ জানাইলাম। অনেক দেয়া করি, আপনি যেন দীর্ঘজীবী হোন, আপনি যেন আবার ক্ষমতায় থাকতে পারেন, আপনারে যেন আমরা দেখতে পারি। প্রথম কর্মসূচীর উদ্বোধনকালে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব অপরূপ চৌধুরী এই প্রকল্প এবং মন্ত্রণালয়ের কর্মকা-ের ওপর একটি প্রেজেন্টেশন অনুষ্ঠানে উপস্থাপন করেন। মুখ্য সচিব মোঃ নজিবুর রহমান অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচীর অনুষ্ঠানে সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ বক্তৃতা করেন। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব জিল্লার রহমান প্রকল্পের অর্থ প্রদান সম্পর্কিত একটি প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মোঃ নজিবুর রহমান গণভবন প্রান্তে অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন এবং গোপালগঞ্জ, নরসিংদী, কিশোরগঞ্জ ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের জেলা প্রশাসক ভিডিও কনফারেন্সে অংশগ্রহণ করেন। এ সময় আরও ৭টি জেলা অনুষ্ঠানের সঙ্গে সংযুক্ত ছিল। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, সরকার চলতি অর্থবছর সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সামাজিক নিরাপত্তাবলয় কর্মসূচীর আওতায় ৪ হাজার ৩১৭ কোটি টাকা বেদে, হরিজন, চা শ্রমিক এবং দুরারোগ্য ব্যাধি যেমন ক্যান্সার, কিডনি, লিভার সমস্যায় আক্রান্তদের সহযোগিতার জন্য বরাদ্দ করেছে। সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডাঃ মোজাম্মেল হক, অর্থ প্রতিমন্ত্রী আব্দুল মান্নানসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের উর্ধতন কর্মকর্তারা গণভবনে উপস্থিত ছিলেন।
×