ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

৬৭ অভিবাসীকে আশ্রয় দিলেন ইতালির প্রেসিডেন্ট

প্রকাশিত: ১৯:০১, ১৮ জুলাই ২০১৮

৬৭ অভিবাসীকে আশ্রয় দিলেন ইতালির প্রেসিডেন্ট

অনলাইন ডেস্ক ॥ সমুদ্র থেকে উদ্ধার করা ৬৭ অভিবাসীকে ইতালির বন্দরে নামার প্রশ্নে ভূমিকা রেখেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট সার্জিও মাত্তারেল্লা। যদিও ইতালির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাথেও সালভিনি ওই অভিবাসীদের বন্দরে নামতে না দেওয়ার বিষয়ে অনড় ছিলেন। তবে ওই জাহাজটি দেশটির যোগাযোগমন্ত্রীর অনুমতি নিয়েই গত সোমবার বন্দরে নোঙর করেছিল। এই অচলাবস্থা নিরসনে প্রেসিডেন্ট সার্জিও মাত্তারেল্লা বৃহস্পতিবার ফোন করেন ইতালির প্রধানমন্ত্রীকে। গতকাল শুক্রবার প্রেসিডেন্টের অনুরোধে উদ্ধারকারী কোস্টগার্ডের জাহাজে থাকা ব্যক্তিদের বন্দরে নামার অনুমতি দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী গুইসেপ কন্তে। যদিও দেশটির রাজনৈতিক বিষয়ে প্রেসিডেন্টের হস্তক্ষেপ বিরল ঘটনা এবং অভিবাসীদের নিয়ে এই প্রথম। ফলে এ ঘটনায় দেশ জুড়ে চলছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো এ নিয়ে বিশেষ প্রতিবেদন প্রচার করছে। এদিকে ৪৫০ জন অভিবাসী নিয়ে অন্য আরেকটি জাহাজও ইতালির সমুদ্র সীমায় অবস্থান করছে। অভিবাসী হতে ইচ্ছুক ওই ব্যক্তিদের লিবিয়া উপকূল থেকে ইতালির পতাকাবাহী একটি জাহাজ গত সোমবার উদ্ধার করেছিল। তারপর তাদেরকে কোস্টগার্ডের জাহাজে তুলে দেওয়া হয়। সেই জাহাজ ভেড়ে সিসিলির বন্দরে। অভিবাসীদের নিয়ে বন্দরে ঢোকা কোস্টগার্ডের জাহাজটি পরিবহনমন্ত্রী দানিলো তোনিনেল্লির অনুমতি নিয়েছিল। কিন্তু স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সালভিনি জানিয়ে দিয়েছিলেন, ওই জাহাজে থাকা উদ্ধারকৃতদের বিরুদ্ধে অপরাধ সংগঠনের জড়িত থাকার অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কেউ জাহাজ থেকে বন্দরে নামতে পারবেন না। শুক্রবার সালভিনি মন্তব্য করেছিলেন, তদন্তে যদি ওই অভিবাসীদের বিষয়ে খারাপ কিছু পাওয়া যায়, তাহলে তাদেরকে ইতালির বন্দরে আনার পরিণাম ভুগতে হবে সংশ্লিষ্টদের। প্রেসিডেন্ট মাতারেল্লা প্রধানমন্ত্রী গুইসেপ কন্তের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন বৃহস্পতিবার। জাহাজে আটকে থাকা ৬৭ জন উদ্ধারকৃত ব্যক্তিকে বন্দরে নামার অনুমতি দিতে তিনি অনুরোধ করেছিলেন প্রধানমন্ত্রীকে। তার অনুরোধে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর অনড় অবস্থান সত্ত্বেও বন্দরে নামার সুযোগ পায় জাহাজে থাকা ওই অভিবাসীরা। প্রেসিডেন্ট সার্জিও মাত্তারেল্লা অভিবাসীদের বন্দরে নামার পক্ষে ভূমিকা রাখায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন সালভিনি। এ ব্যাপারে ফাইভ ষ্টার মুভমেন্ট দলের নেতা উপ-প্রধানমন্ত্রী লুইজি ডি মাইয়ো বলেন, প্রেসিডেন্টের সিদ্ধান্তের প্রতি আমাদের সম্মান দেখানো উচিত। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সালভিনির দল নির্বাচনের আগে ভোটারদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, অভিবাসীদের বিরুদ্ধে কঠিন ভূমিকা গ্রহণ করবেন তারা। নৌকা দিয়ে সাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে ঢুকতে চাওয়া আফ্রিকার অধিবাসীরা অনেক সময়ই দুর্ঘটনায় পড়েন। তাদের বহনকারী নৌকাগুলো মাঝ সাগরে ডুবে গেলে তাদেরকে উদ্ধার করে ইতালির বন্দরে পৌঁছে দেওয়া হয় প্রায়ই। অন্য দেশের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোর মতোই ইতালির নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের সদস্যরাও এ কাজে সহায়তা করে আসছিল। কিন্তু নতুন সরকার গঠিত হওয়ার পর থেকে দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এভাবে অভিবাসীদের উদ্ধার করে ইতালিতে নিয়ে আসার বিরুদ্ধে কঠিন অবস্থান গ্রহণ করেছেন। সাগর থেকে অভিবাসীদের উদ্ধার করার বিষয়ে তিনি বলেছেন, মানব পাচার বন্ধ করতে হবে। আর যেসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান অনুমোদনহীন অভিবাসীদের নিয়ে কাজ করে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
×