ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

নাটোরে জিহাদী বইসহ তিন জেএমবি সদস্য গ্রেফতার

প্রকাশিত: ১৯:৩১, ১৯ জুলাই ২০১৮

নাটোরে জিহাদী বইসহ তিন জেএমবি সদস্য গ্রেফতার

নিজস্ব সংবাদদাতা, নাটোর ॥ নাটোর সদর উপজেলা থেকে জিহাদী বই সহ নিষিদ্ধ জঙ্গী সংগঠন জামাআতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি) এর তিনজন সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র্যা ব-৫। বুধবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে সদর উপজেলার রইয়েরভাগ এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে র্যা ব-৫, সিপিসি-২’র নিজস্ব কার্যালয়ে গ্রেফতারকৃতদেরকে সাংবাদিকদের সামনে হাজির করা হয়। গ্রেফতারকৃত জেএমবি সদস্যরা হলো, নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার মহারাজপুর এলাকার সাইফুল ইসলামের ছেলে জাহিদুল ইসলাম(৩০), বড়াইগ্রামের গোনাইহাটি গ্রামের আমির হোসেনের ছেলে আমজাদ হোসেন(৪২), লালপুরের চৌষডাঙ্গা গ্রামের মৃত গাজিউর রহমানের ছেলে জহির উদ্দিন(৪০)। র্যা ব-৫, সিপিসি-২, নাটোর ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার মেজর শিবলী মোস্তফা জানান, গত ১৪ মে ২০১৮ তারিখ রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ী থানার রামনগর এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার সদর থানার পশ্চিম কোদালকাটি মধ্যচর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে জিহাদী বই, লিফলেট এবং জিহাদী ডাইরীসহ নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী সংগঠন জেএমবি’র ৪ জন সক্রিয়রসদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। পরে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাদের আরো সহযোগীরা রাজশাহী, চাঁপাই, নাটোর ও নওগাঁ সহ বিভিন্ন অঞ্চলে কাজ করছে বলে জানায় তারা। জিজ্ঞাসাবাদে এমন তথ্য পাওয়ার পরে নজরদারিতে নামে র্যা ব। ক্রমাগত নজরদারীর ধারাবাহিকতায় র্যা ব আরো জানতে পারে যে, নিষিদ্ধ ঘোষিত জেএমবি সংগঠনের কিছু সক্রিয় সদস্য প্রায়ঃশই চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী ও নাটোর জেলার বিভিন্ন এলাকায় গোপন স্থানে জমায়েত হয় এবং নাশকতামূলক কর্মকান্ড চালানোর পরিকল্পনা করছে। এরই মধ্যে নাটোর সদর উপজেলার রুইয়েরভাগ এলাকায় জেএমবি সদস্যদের গোপন মিটিং হবে এমন গোপন সংবাদে ভিত্তিতে বুধবার রাতে অভিযান চালায় র্যা ব। অভিযানকালে ৫টি জিহাদী বই, ১টি মোবাইল সেট ও ১টি সীম কার্ডসহ জাহিদুল ইসলাম(৩০), আমজাদ হোসেন(৪২) ও জহির উদ্দিন(৪০)কে গ্রেফতার করে র্যা ব। তবে এসময় তাদের ১০/১২ জন সাথী পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা নিজেদের নিষিদ্ধ ঘোষিত জেএমবি সংগঠনের সক্রিয় সদস্য হিসেবে স্বীকারোক্তি দেয়। কোম্পানি কমান্ডার মেজর শিবলী মোস্তফা আরো জানান, তারা পূর্বেই পুলিশ কর্তৃক গ্রেফতার হওয়া আমির হামজার নেতৃত্বে তাদের সংগঠনকে নাটোর অঞ্চলকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে দলীয় মিটিং, উগ্রবাদী বই বিতরণ, ইয়ানতের টাকা আদায়, জিহাদী দাওয়াত ইত্যাদি বিভিন্ন কর্মকান্ডে স্বতঃস্ফুর্তভাবে অংশগ্রহণ করে এবং দেশে ইসলামী শাসন প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে আলোচনা করে। আমজাদ ও জহির দলের পক্ষে সদস্যদের কাছ থেকে ইয়ানতের টাকা আদায় করত এবং আদায়কৃত ইয়ানতের টাকা দলীয় বিভিন্ন কর্মকান্ডে ব্যয় করত। এছাড়া তারা নতুন সদস্য সংগ্রহ ও জিহাদী দাওয়াত প্রচারে নিয়োজিত ছিল। নিজস্ব আগ্রহের কারণে তারা কারাগারে আটক জাহাঙ্গীর নামক এক জেএমবি নেতার অনুপ্রেরণা ও দীক্ষায় জেএমবি নামক নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী সংগঠনের যোগদান করে এবং ধীরে ধীরে দলের সক্রিয় কর্মী হিসেবে দায়িত্বশীলদের আস্থাভাজন হয়ে উঠে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে র্যা ব আরো জানতে পারে যে, জাহিদুল মহারাজপুর এলাকায় ইয়ানত ও কর্মী সংগ্রহের দায়িত্বে নিয়োজিত ছিল। বর্তমানে কারগারে আটক আমির হামজার সাথে সে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করে চলত। আমজাদ গোনাইহাটি এলাকায় সংগঠন পরিচালনা করত। ইয়ানত সংগ্রহ ও কর্মীদের বয়ান করত সে। একই ভাবে জহির তার এলাকায় সদস্যদের বয়ান করত এবং ইয়ানত সংগ্রহ করে আমির হামজাকে সরবরাহ করত। নাটোর, নওগাঁ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও রাজশাহী এলাকার অনেকেই এখনও তাদের মত সক্রিয় ভাবে সংগঠনকে শক্তিশালী ও কার্যকরী করতে সদস্য সংগ্রহ, নিয়মিত ইয়ানতের টাকা সংগ্রহ, ছবি/ভিডিও প্রভূতি দেখিয়ে গ্রামের সহজ সরল ধর্ম ভীরু মুসলমানদেরকে সংগঠনের সাথে যুক্ত করা করার জন্য কাজ করে যাচ্ছে বলে দাবি করেছে র্যা ব।
×