ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বুদ্ধিমান বাড়ি

প্রকাশিত: ০৭:৪২, ২০ জুলাই ২০১৮

বুদ্ধিমান বাড়ি

বুদ্ধি কি শুধু প্রাণীদের মধ্যেই বিদ্যমান? এর খুবই সহজ ও স্বাভাবিক উত্তর হ্যাঁ সূচক হলেও এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে একটি জড় পদার্থের নাম। বিস্ময়ে চোখ কপালে উঠে যাচ্ছে নিশ্চয়! বিস্মিত হলেও শুনুন সেই বুদ্ধিমান বাড়ির কথা। দক্ষিণ কোরিয়ার কয়েক হাজার বাড়িতে এই বুদ্ধিমান বাড়ি স্থাপন করা হয়েছে। বুদ্ধিমান বাড়িগুলো দেখতে অন্যান্য এ্যাপার্টমেন্ট বা ভবনের মতোই মনে হয়। বর্তমান প্রযুক্তির কথা মাথায় রেখেই তৈরি করা হয়েছে রাজধানী সিউলের এসব নতুন বাড়ি। প্রতিটি বাড়ির দেয়ালে বসানো আছে একটি কন্ট্রোল প্যানেল, যা দিয়ে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নেয়া যাবে বা সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে। শুধু তাই নয়, এয়ার পিউটিফাইয়িং ইউনিটে চাপ দিয়ে সহজেই বিভিন্ন কক্ষের বায়ু নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা নির্ণয় করা যায় এসব বুদ্ধিমান বাড়িতে। পাশাপাশি এই প্যানেলে বিদ্যুত ব্যবহার পর্যবেক্ষণ করা, বিল পরিশোধ করা এবং প্রতিবেশী কিংবা ইন্টারনেট থেকে আসা ভিডিও বার্তাও সংরক্ষণ করা সম্ভব এই বুদ্ধিমান বাড়িতে। চমক এখানেই শেষ নয়! প্রতিটি ফ্ল্যাটের ইলেকট্রিসিটি কেবল অর্থাৎ বিদ্যুতের তারগুলো বিদ্যুতের পাশাপাশি তথ্য আদান-প্রদান করতে সক্ষম। ঘরের প্রতিটি যন্ত্রই ‘হোমনেট’ নামের একটি সিস্টেম বা নেটওয়ার্কের সঙ্গে সুসঙ্গত। হোম টিভিও এই সিস্টেমের সঙ্গে সংযুক্ত। ঘরে রাখা টিভি বলে দিতে পারবে ওয়াশিং মেশিনে কখন কাপড় ধোয়া শেষ হয়েছে কিংবা দরজায় কেউ এসেছে কিনা বা দাঁড়িয়ে আছে কিনা- যা দেখে সহজেই সিদ্ধান্ত নেয়া যাবে। এ্যাপার্টমেন্ট বা ভবনের বাইরে থেকে রিমোট কন্ট্রোলের সাহায্যে এসব যন্ত্র নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এমন কি বাড়ির মালিকের অনুপস্থিতিতে কেউ এসেছিল কিনা কিংবা কখন এসেছিল তাও জানা যায় এই বুদ্ধিমান বাড়িতে। দক্ষিণ কোরিয়ার টপ টেক ফার্ম গত ২০০৬ সাল থেকে এসব বুদ্ধিমান বাড়ি তৈরি করে আসছে। স্থানীয় ইলেকট্রনিক পণ্য নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এলজি এই প্রকল্পের পেছনে কাজ করছে। ২০০৮ সাল থেকেই প্রতিষ্ঠানটি ঘোষণা দিয়ে আসছিল যে, ভবিষ্যতের বাড়িগুলোতে সংযোজন করা হবে আরও নতুন সব তাক লাগানো প্রযুক্তি। এসব বুদ্ধিমান বাড়িগুলোতে যেন চমকের শেষ নেই। বাড়িতে যারা থাকছেন তাদের হাতঘড়িতে থাকা মিনি পিসি প্রযুক্তি সারাক্ষণ যে কোনো জিনিসই চালু বা বন্ধ করতে পারে, দরজা খুলতে পারে এবং বিভিন্ন জিনিস অনুসন্ধান করতেও পারে। এখানে সবকিছুই কণ্ঠস্বরে নিয়ন্ত্রিত। বুদ্ধিমান বাড়ির ফ্রিজ জানাতে পারে এর ভেতরে রাখা খাবারগুলো নির্দিষ্ট সময়সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে কিনা অর্থাৎ পুরনো হয়ে যাচ্ছে কিনা। তাছাড়া সবচেয়ে মজার ব্যাপার হচ্ছে, ফ্রিজে রাখা খাবার দিয়ে কী কী খাদ্য তৈরি করা যায় তাও পুরোপুরি জানিয়ে দিতে পারে এই ফ্রিজ। অন্যদিকে, শয়নকক্ষে রাখা ওয়ার্ডরোবের আয়না বলে দিতে পারে সারাদিনের সিডিউল। পছন্দের পোশাকটি বের করতে বা নির্বাচন করতে সাহায্য করে ওয়ার্ডরোবের এই আয়না। আরও আছে- ওয়ার্ডরোবে রাখা পোশাকগুলো কখন কোনটা ধোয়ার প্রয়োজন এবং আদৌ ধোয়ার প্রয়োজন আছে কিনা কিংবা সময়োপযোগী পোশাকের বিভিন্ন ডিজাইনও দেখিয়ে দিতে সক্ষম ওয়ার্ডরোবের এই আয়না। প্রদীপ সাহা
×