ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

জামায়াতের উস্কানিতেই কোটা সংস্কার আন্দোলন ॥ হানিফ

প্রকাশিত: ০৭:২১, ২১ জুলাই ২০১৮

জামায়াতের উস্কানিতেই কোটা সংস্কার আন্দোলন ॥ হানিফ

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ জামায়াত সর্বপ্রথম কোটা সংস্কারের দাবি করেছিল বলে দাবি করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ। শুক্রবার বিকেলে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে এক বর্ধিত সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি এ দাবি জানান। হানিফ বলেন, ২০০১ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে জামায়াতে ইসলামী তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে মুক্তিযোদ্ধাদের কোটা বাতিলের দাবি করেছিল। এটা হয়ত অনেকে ভুলে গেছেন। ২০০২ সালে বিএনপি-জামায়াত যখন ক্ষমতায় ছিল তখনও রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনীত আলোচনায় জাতীয় সংসদে জামায়াত আমির মতিউর রহমান নিজামী মুক্তিযোদ্ধাদের কোটা বাতিলের দাবি করে বক্তব্য রেখেছিলেন। সেটা সংসদে সংরক্ষিত আছে। এছাড়া ২০০৩ সালে সংসদে বাজেটের ওপর আলোচনার সময় যুদ্ধাপরাধী সাঈদীও মুক্তিযোদ্ধাদের কোটা বাতিলের দাবি করে। মুক্তিযোদ্ধাদের কোটা বাতিলের দাবিটা হঠাৎ বা নতুন করে শিক্ষার্থীদের মাথায় আসেনি মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের এ নেতা বলেন, এটা ২০০১ সাল থেকে জামায়াতের দাবি, সেটাকে তারা আগে বাস্তবায়ন করেনি। কিন্তু এখন সুপরিকল্পিতভাবে ছাত্রদের উসকে দিয়ে কৌশলে কোটা সংস্কার নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে ফায়দা চরিতার্থ করতে চাচ্ছে। ২০০৯ সাল থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সরকার পরিচালনায় পদে পদে ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে এগিয়ে যেতে হয়েছে মন্তব্য করে হানিফ বলেন, এই পথচলা কিন্তু মসৃণ ছিল না। সেই ষড়যন্ত্র এখনও আছে। ষড়যন্ত্র কিন্তু থেমে নেই। তাদের একটা ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হয়। নতুন করে আরেকটা ষড়যন্ত্র করে। নতুন করে আরেকটি ইস্যুর ওপর ভর করে। কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনটা হঠাৎ করে কেন এত বিস্ফোরণের মতো চলে এলো? কারা এর পেছনে আছে? এটা কাদের মনের দাবি? এটা কিন্তু অনেকের কাছেই অজানা রয়ে গেছে। যারা এই কোটা সংস্কারের দাবি করছেন তাদের দাবিটা কি, তারা কী সংস্কার চান? কোন্ কোন্ জায়গায়, কতটুকু, কি চানÑসেটা পরিষ্কার করে বলে না, কোথায় তারা সংস্কার চান? হানিফ বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের ৩০ শতাংশ কোটা আছে। এটা বাতিল চান? নারীদের জন্য সংরক্ষিত আছে, সেটা বাতিল চান? নাকি অনগ্রসর এলাকার জন্য যে কোটা থাকে, সেটা বাতিল চান? কত শতাংশ বাতিল চান, সেই কথা কিন্তু পরিষ্কারভাবে বলে না। সরকার যেটাই করে দেবে এরা বলবে যে, আমরা এভাবে চাই না, আমরা মানি না। কোটা সংস্কার আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের কাঁধে ভর করে সরকারকে অস্থিতিশীল করার জন্য একাত্তরের পরাজিত শক্তি ষড়যন্ত্রের একটি অংশ মন্তব্য করে হানিফ বলেন, বিষয়টা নিয়ে আর কথাবার্তা না বলাই ভাল। না হলে, আপনাদের (আন্দোলনকারী) ভূমিকার কারণে আপনাদের মনের অজান্তেই হয়ত যুদ্ধাপরাধী স্বাধীনতাবিরোধীদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন হয়ে যেতে পারে। ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গণসংবর্ধনা সফলের লক্ষ্যে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ এই বর্ধিত সভার আয়োজন করে। দক্ষিণের সভাপতি আবুল হাসনাতের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ প্রমুখ।
×