ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

নওগাঁয় প্রসূতির ৬টি সন্তান ভুমিষ্ঠ হওয়ার পরই সবগুলোর মৃত্যু

প্রকাশিত: ০০:৪০, ২১ জুলাই ২০১৮

নওগাঁয় প্রসূতির ৬টি সন্তান ভুমিষ্ঠ হওয়ার পরই সবগুলোর মৃত্যু

নিজস্ব সংবাদদাতা, নওগাঁ ॥ শনিবার সকালে নওগাঁয় এক প্রসূতি একসঙ্গে ৬টি সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। ভুমিষ্ঠ হওয়ার পর পরই শিশুগুলো মারা যায়। নওগাঁ সদর হাসপাতালে প্রসূতি ও শিশুগুলোকে দেখার জন্য শত শত উৎসুক নারী পুরুষ হাসপাতালের গাইনী ওয়ার্ডে ভিড় জমান। নওগাঁ শহরের খাস নওগাঁ মহল্লায় বসবাসরত জনৈক আলম শেখ ওরফে রানার স্ত্রী মৌসুমী আকতার এই ৬ শিশুর জন্ম দিয়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন। রানা জানান, ২০১০ সালে মান্দা উপজেলার ভরট্ট কাঠের ডাঙ্গা গ্রামের ফজের আলীর কন্যা উক্ত মৌসুমীর সঙ্গে তার বিয়ে হয়। গত ৭ বছরে তাদের কোন সন্তান হয় না। গত এপ্রিল মাসে জানতে পারেন যে তার স্ত্রী প্রথমবারের মত সন্তান সম্ভবা হয়েছেন। স্থানীয় একজন ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী আলট্রাসনোগ্রাফী করে জানতে পারেন, তার স্ত্রীর গর্ভে ৬টি সন্তান রয়েছে। এর পর থেকে একজন গাইনী ডাক্তারের চিকিৎসাধীন রাখা হয় তার স্ত্রীকে। এর মধ্যে মৌসুমীর গর্ভের সন্তানদের বয়স ৪ মাস অতিক্রম করে। এরই এক পর্যায়ে শুক্রবার উক্ত মৌসুমী অসুস্থতা বোধ করেন। এই অবস্থায় সন্ধ্যায় বাসাতেই একটি সন্তান প্রসব করেন। প্রথম অবস্থায় শিশুটির স্পন্দন পরিলক্ষিত হলেও পরে সেটি মৃত্যুবরন করে। পরে এদিন রাত ৮টায় তাকে নওগাঁ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সারারাত সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় থাকার পর শনিবার সকাল ৯টার পর থেকে ২/৩ মিনিট পর পর পর্যায়ক্রমে আরো ৫টি সন্তানের জন্ম দেন। প্রসবকালীন সময়ে চিকিৎসককে সহযোগিতা প্রদানকারী সিনিয়র স্টাফ নার্স জাহানারা বেগম জানান, শিশুগুলো ভুমিষ্ঠ হওয়ার সময় জীবিত ছিল। তাদের স্পন্দন লক্ষ করা গেছে। কিন্তু পরবর্তীতে সেগুলো ক্রমেই মৃত্যুবরন করেছে। তবে প্রসুতী মৌসুমী আকতার সম্পূর্নভাবে সুস্থ্য রয়েছেন বলে উক্ত ষ্টাফ নার্স জাহানারা বেগম জানিয়েছেন। শনিবার বেলা ২টা পর্যন্ত পাঁচটি শিশুকে নওগাঁ সদর হাসপাতালের গাইনী ওয়ার্ডে রাখা ছিল। এ ব্যপারে বিশেষজ্ঞ পর্যায়ের বক্তব্য জানতে গিয়ে হাসপাতালে কাউকে পাওয়া যায়নি। হাসপাতালের আরএমও ডাঃ মনির আলী আকন্দ অসুস্থতাজনিত কারনে ছুটিতে ছিলেন। তত্বাবধায়ক ডাঃ রওশন আরা খানম হাসপাতালে ছিলেন না। কোথায় গেছেন তা সেখানকার কোন চিকিৎসক, কর্মকর্তা কর্মচারী কেউই বলতে পারেন নি। প্রসুতিকে চিকিৎসা প্রদানকারী গাইনী বিশেষজ্ঞ ডাঃ তাসকিন জাহান ইথার ওই সময় সন্তানকে রাখতে স্কুলে গেছেন। কখন ফিরবেন তার কোন নিশ্চয়তা পাওয়া যায়নি। ফলে এই প্রসূতি ও সন্তানদের মৃত্যুর কোন সুস্পষ্ট কোন মেডিক্যাল কারন জানা সম্ভব হয় নি।
×