ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

নারায়ণগঞ্জে ৩টি দোকানে ডাকাতি

প্রকাশিত: ০০:৪২, ২১ জুলাই ২০১৮

নারায়ণগঞ্জে ৩টি দোকানে ডাকাতি

স্টাফ রিপোর্টার, নারায়ণগঞ্জ ॥ নারায়াণগঞ্জের বন্দর উপজেলার উত্তর লক্ষণখোলা এলাকায় তিনটি ব্যাটারির দোকানে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ডাকাতরা রায়হান উদ্দিন (৬৫) ও মোতালেব মিয়া (৫৫) নামে দুই নৈশ প্রহরীকে হত্যা করে তিনটি ব্যাটারীর দোকান থেকে ২৭ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে। এদিকে নিহত দুই নৈশ প্রহরীর বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। ক্ষতিগ্রস্ত দোকান মালিকরা ও নিহতদের পরিবারসহ স্থানীয় এলাকাবাসী এ ঘটনার জন্য পুলিশের কর্তব্যে অবহেলাকে দায়ী করে এর সুষ্ঠু বিচার দাবী করেছে। তবে পুলিশ বলছে, সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনা করে ডাকাতদের শনাক্ত করে তাদেরকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার গভীররাতে। পুলিশ ও এলাকাবাসী জানান, শুক্রবার রাতে উপজেলার মদনগঞ্জ-ঢাকা সড়কের উত্তর লক্ষণখোলা বাজারে প্রতিদিনের মতো রাতে দায়িত্ব পালন করছিলেন নৈশপ্রহরী রায়হান উদ্দিন ও মোতালেব মিয়া। শুক্রবার গভীর রাত থেকে শনিবার ভোররাত পর্যন্ত যে কোন সময় একদল ডাকাত দেশীয় অস্ত্র দিয়ে নৈশপ্রহরীদের উপর হামলা চালায়। ভোরে বাজারের পরিচ্ছন্ন কর্মী এক নারী বাজার ঝাঁড়– দিতে এসে দুইজনকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে এলাকাবাসীদের খবর দেয়। পরে আশপাশের লোকজন এসে অচেতন অবস্থায় রায়হানউদ্দিন ও মোতালেব মিয়াকে উদ্ধার করে বন্দর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রায়হানকে মৃত ঘোষণা করেন এবং মোতালেবকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়া হয়। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মোতালেব মিয়াকে ডাক্তারা মৃত ঘোষণা করেন। এর আগে ডাকাতরা তিনটি দোকানের তালা ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করে প্রায় চার থেকে পাঁচ ঘন্টাব্যাপী বিসমিল্লাহ ব্যাটারি স্টোর, সততা মেলা ব্যাটারি ও সততা ব্যাটারি সার্ভিসিং সেন্টারে ডাকাতি করে বিভিন্ন ধরণের মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। ডাকাতির শিকার হওয়া দোকানগুলোর মালিকপক্ষের দাবি ডাকাতেরা তাদের দোকানের ২৭ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়েছে। দোকান মালিকরা তাদের লন্ঠিত মালামাল উদ্ধারসহ এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবী করেছেন। শনিবার সকালে ডাকাতির খবর পেয়ে জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মনিরুল ইসলাম, খ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খোরশেদ আলম সহ অন্যান্য উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তবে এ ঘটনার খবর শুনে সকাল থেকেই শত শত এলাকাবাসী এসে ঘটনাস্থলে ভীড় জমান সেখানে। এদিকে নিহত নৈশপ্রহরী রায়হান উদ্দিন ও মোতালেব মিয়ার বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। তারা দুইজনের হতদ্ররিদ্র পরিবারের সন্তান। তাদের আয় দিয়েই সংসার চলতো তাদের। নিহত রায়হান উদ্দিনের ভাই রওশন আলী মৃধা জানান, তার আয়ের উপর নির্ভর করে চলতো সংসার । কিন্তু এখন কি ভাবে চলবে তাদের সংসার, কে দেখাবে ছেলে মেয়েরদের। বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম শাহীন মন্ডল জানান, এলাকার বিভিন্ন স্থানের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করে ডাকাতদের শনাক্ত করাসহ তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। নিহত রায়হান উদ্দিনের লাশ ময়না তদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে এবং মোতালেব মিয়ার লাশ ঢাকা মেডিকেলে ময়নাতদন্তের পর আনা হবে। এ ব্যাপারে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানান তিনি। এ ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার মঈনুল হক গণমাধ্যকে জানান, ঘটনাটি দু:খজনক। ওই সময় টহল পুলিশ ছিলো কিন্তু তার পরও কিভাবে ঘটনাটি ঘটলো তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কারো গাফিলতি থাকলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি বলেন, ডাকাতি হওয়া একটি দোকানের পাশের দোকানে থাকা সিসিটিভির ভিডিও ফুটেজ দেখে ডাকাতদের সনাক্তের চেষ্টা চলছে। তিনি বলেন, থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
×