ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

ফতুল্লায় শিশু গৃহকর্মীকে বর্বর নির্যাতনে দম্পত্তি গ্রেফতার

প্রকাশিত: ০২:২৮, ২১ জুলাই ২০১৮

ফতুল্লায় শিশু গৃহকর্মীকে বর্বর নির্যাতনে দম্পত্তি গ্রেফতার

স্টাফ রিপোর্টার, নারায়ণগঞ্জ ॥ ফতুল্লার পূর্ব মাসদাইর এলাকায় মাহি (৮) নামে এক শিশু গৃহপরিচারিকাকে বর্বর নির্যাতন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয় জনতা ওই শিশুকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে নির্যাতনকারী দম্পতিকে উত্তম মাধ্যম দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে। শুক্রবার মধ্য রাতে ফতুল্লা থানার পূর্ব মাসদাইর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ শিশু মাহিকে উদ্ধার করে খানপুর ৩শ’ শয্যা হাসাপাতালে ভর্তি চিকিৎসা দিচ্ছে। শিশুটির শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাতের চিহ্ন ও খুন্তির ছ্যাকা দেয়ার ক্ষত চিহ্ন রয়েছে। দুই চোখ ফুলে গেছে। শিশুটি উপর প্রায় প্রতিদিনই অমানুষিক নির্যাতন করতো উর্মি ও তার স্বামী আতাউল্লা দম্পতি। শনিবার বিকেলে নারী ও শিশু নির্যাতন মামলায় পুলিশ আটক নির্যাতনকারী দম্পতি আতাউল্লাহ ও তার স্ত্রী উর্মি আদালতে পাঠালে আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের এস আই কামাল হোসেন। এদিকে গুরুতর আহত শিশু মাহিকে পুলিশ উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জ তিন’শ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করেছে। ফতুল্লা মডেল থানার এস আই ইলিয়াস জানান, শুক্রবার মধ্য রাতে ওই দম্পতি শিশুটিকে নির্যাতন করার সময় তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন গৃহকর্তা আতাউল্লাহর ঘরে গিয়ে কি হয়েছে জানতে চায়। এসময় ওই দম্পতি ঘরের দরজা না খুলে প্রতিবেশীদের সাথে অশোভন আচরণ করেন। পরে প্রতিবেশীরা ঘরের দরজা ভেঙ্গে নির্যাতিত শিশুটিকে উদ্ধার করে। এসময় এলাকাবাসি তাদের উত্তম মাধ্যম দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। এস আই আরো জানায়, গত তিন মাস আগে গৃহকত্রী উর্মি তার মা লাভলী বেগমের মাধ্যমে শিশু মাহিকে তার বাড়ির গৃহপরিচারিকার কাজে নেয়। শিশু মাহি’র পালক বাবা মা গাজীপুরের একটি গার্মেন্টস ফ্যাক্টরীতে কাজ করে। নির্যাতনকারী উর্মী ও তার স্বামী দুজনেরই দ্বিতীয় বিয়ে। উর্মীর আগের ঘরে দুই সন্তান এবং আতাউল্লাহর আগের ঘরে তিন সন্তান রয়েছে। তারা দুজনই আগের ঘরের সন্তানদের মায়া ত্যাগ করে নতুন জীবন শুরু করেছে। শিশু মাহি জানান, কাজ করতে গিয়ে একটু ভুল ত্রুটি হলেই খালা উর্মি এবং খালু আতাউল্লাহ চর থাপ্পর কিল ঘুষি লাথি মারতো। আর উমি খুন্তি গরম করে শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছ্যাঁকা দিতো। গত তিন মাস ধরে স্বামী স্ত্রী দুজননেই নির্যাতন করে আসছে। নির্যাতনের সময় জোরে কান্না করলে মুখে কাপড় গুজে দিতো। যাতে আওয়াজ বাইরে না যায়। শিশু মাহির সারা শরীরের আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। শিশুটির দু হাতে খুন্তির পোড়া ছ্যাঁকা দেয়ার দাগ রয়েছে। এ ব্যাপারে ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি এস এম মঞ্জুর কাদের জানান, শিশুটিকে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। শিশুর পরিবারকে খবর দেয়া হয়েছে। এ ঘটনায় ওই দম্পতির বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
×