ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

জবির ভর্তি পরীক্ষা হবে লিখিত পদ্ধতিতে

প্রকাশিত: ০৬:১৫, ২২ জুলাই ২০১৮

জবির ভর্তি পরীক্ষা হবে লিখিত পদ্ধতিতে

হাসান ইমাম সাগর ॥ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) ভর্তি পরীক্ষায় এবার আমূল পরিবর্তন আনা হয়েছে। ৪৪তম একাডেমিক কাউন্সিল সভায় গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ভর্তি পরীক্ষাসহ সকল পরীক্ষায় এমসিকিউ পদ্ধতি বাতিল করা হয়েছে। বিধায় এ বছর ভর্তি পরীক্ষা লিখিত পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত হবে। এতে ভর্তি জালিয়াতি, কোচিং সেন্টার বাণিজ্য ও গাইড বই মুক্ত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে বলে মনে করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন শিক্ষক। লিখিত পরীক্ষার মাধ্যমে কিভাবে সঠিক মেধার মূল্যায়ন সম্ভব এমন প্রশ্নের জাবাবে জবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান দৈনিক জনকণ্ঠকে বলেন, লিখিত পরীক্ষায় এমনভাবে প্রশ্ন প্রণয়ন করা হবে যাতে একজন মেধাবীকে সঠিকভাবে মূল্যায়ন করা যায়। প্রতিটি খাতা তিনজন শিক্ষক আলাদাভাবে মূল্যায়ন করবেন। তারা গোপনীয়ভাবে আলাদা করে মার্কস জমা দিবেন। তাদের মার্কস সিলগালা অবস্থায় প্রাপ্তির পর তার একটি গড় হিসাব বের করে ক্রম অনুসারে ফল প্রকাশ করা হবে। এবারের ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম ধাপে ন্যূনতম যোগ্যতা অর্জনকারী শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারলেও দ্বিতীয় ধাপে মাত্র ৩০ হাজার শিক্ষার্থীকে প্রবেশপত্র দেয়া হবে। এ ক্ষেত্রে কোন বৈষম্য সৃষ্টি হবে কী না তা জানতে চাইলে উপাচার্য বলেন, সমস্ত শিক্ষার্থী প্রথমে অনলাইনে আবেদন করতে পারবে। পরে একটি নির্দিষ্ট গ্রেড পয়েন্ট ধরে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় সর্বোচ্চ স্কোরধারীদের মধ্য থেকে ৩০ হাজার শিক্ষার্থীকে বাছাই করে প্রবেশপত্র দেয়া হবে। এতে যদি ওই নির্দিষ্ট গ্রেড পয়েন্টে ৩০ হাজারের কিছু বেশিও হয় তাহলে তাদেরকে প্রবেশপত্র দেয়া হবে। এবারের পরীক্ষায় কেন ৩০ হাজারের বেশি শিক্ষার্থীকে প্রবেশপত্র দেয়া হবে না এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এমসিকিউ পদ্ধতিতে বহু সংখ্যক শিক্ষার্থী অংশ নেয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে বিভিন্ন কেন্দ্রে পরীক্ষা নিতে হয়। তাতে ভর্তি জালিয়াতির একটি সুযোগ থাকে। তাই এ ধরনের জালিয়াতি ঠেকাতে এবারের পরীক্ষা বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে নেয়া হবে। এতে জায়গার সঙ্কুলানের জন্য দুই সিফটে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম সিফট সকালে ১৫ হাজার এবং দ্বিতীয় সিফট বিকেলে ১৫ হাজার পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা নেয়া হবে। এবার প্রতিটি ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষার জন্য সময় দেয়া হবে দেড় ঘণ্টা। ভর্তি পরীক্ষার মোট ১০০ নম্বরের মধ্যে লিখিত পরীক্ষায় থাকবে ৭২ নম্বর, অবশিষ্ট ২৮ নম্বর এসএসসি ও এইচএসসি থেকে প্রচলিত নিয়মানুযায়ী আনুপাতিক হারে নেয়া হবে। তবে চারুকলা, সঙ্গীত, নাট্যকলা ও ফিল্ম এ্যান্ড টেলিভিশন-এই চারটি বিভাগে কোন লিখিত পরীক্ষা হবে না। এই চারটি বিভাগে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের শুধুমাত্র ব্যবহারিক ও মৌখিক পরীক্ষা নেয়া হবে। আসন্ন ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি পরীক্ষা সম্পর্কে জানতে গেলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য এ সব তথ্য দেন। তিনি আরও বলেন, এমসিকিউ পদ্ধতিতে নকল করার সম্ভাবনা বেশি থাকে। শিক্ষার্থীরা কানের মধ্যে, শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করে সুযোগ নেয়। এটা করার কোন সুযোগ থাকবে না। আমি সর্বপ্রথম এমসিকিউ পরীক্ষা বাদ দিয়ে লিখিত পরীক্ষার মাধ্যমে প্রকৃত মেধাবীদের ভর্তির সুযোগ তৈরি করে দিয়েছি।
×