ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

গুপ্তধন সন্ধানে সেই টিনশেড বাড়িটির খনন কাজ দ্বিতীয় দিনের মতোও স্থগিত

প্রকাশিত: ০৩:০৩, ২২ জুলাই ২০১৮

গুপ্তধন সন্ধানে সেই টিনশেড বাড়িটির খনন কাজ দ্বিতীয় দিনের মতোও স্থগিত

স্টাফ রিপোর্টার ॥ গুপ্তধনের সন্ধানে রাজধানীর মিরপুরের একটি টিনশেড বাড়িতে শুরু হওয়া খনন কাজ দ্বিতীয় দিনের মতোও স্থগিত করা হয়েছে। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) প্রকৌশলীদের সঙ্গে পরামর্শ করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। রবিবার দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাজওয়ার আকরাম সাকাপি ইবনে সাজ্জাদ এ কথা জানান। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাজওয়ার আকরাম সাকাপি জানান, বাড়িটি বিশেষজ্ঞদের দ্বারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে চিঠি দেয়া হবে। বিশেষজ্ঞরা বিষয়টি নিশ্চিত করলে আবারও উদ্ধার কাজ শুরু হবে। সে পর্যন্ত বাড়িটি পুলিশ হেফাজতে থাকবে। তিনি বলেন, বাড়িটি অনেক পুরনো ও ঝুঁকিপূর্ণ। ঘরের মধ্যে খননের ফলে ভেঙে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ইতিমধ্যেই চার ফিট খনন করা হয়েছে। জাতীয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত অধিদফতরের একজন ইঞ্জিনিয়ার খনন করা স্থান পরিদর্শন করেছেন। তার পরামর্শেই উদ্ধার কাজ স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে দ্রুতই পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। কেন আগে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে খনন কাজ শুরু করা হলো না? -সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ম্যাজিস্ট্রেট তাজওয়ার আকরাম জানান, এ বাড়ির নিচে গুপ্তধন রয়েছে -এমন সংবাদ এলাকাবাসীর মধ্যে ছড়িয়ে পড়ায় সকলের মধ্যে এক ধরনের উদ্বেগ উৎকণ্ঠা বিরাজ করছিল। এ কারণে পুলিশের সহায়তা প্রাথমিকভাবে গুপ্তধন উদ্ধারে কাজ শুরু করা হয়। যেহেতু চার ফিট মাটি খনন করার পরও কিছু পাওয়ায় যায়নি। সে কারণে এখন বিশেষজ্ঞদের পারামর্শ নেয়া প্রয়োজন। মিরপুর মডেল থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দাদন ফকির জানান, বুয়েটের প্রকৌশলীদের সঙ্গে পরামর্শ করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। পাশাপাশি খনন কাজে স্ক্যানার ব্যবহার করা হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানান, গুপ্তধন মিলবে-এমন গুঞ্জনে মিরপুর ১০ নম্বরের সি ব্লকের ১৬ নম্বর সড়কের ১৬ নম্বর বাড়িতে এলাহী কাণ্ড ঘটে। নিচে দুই মণের বেশি স্বর্ণালঙ্কার ও দামি জিনিসপত্র থাকতে পারে- এমন খবর ছড়িয়ে পড়ার পর শনিবার সকাল ১০টা থেকে গুপ্তধন রয়েছে এমন দাবিতে খনন কাজ শুরু করা হয়। এসময় একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ২২ জন শ্রমিক দুইটি রুমের খনন কাজ শুরু করেন। সাড়ে চার ফুট খনন করার পর গুপ্তধন পাওয়া যায়নি। তার ওপর বাড়িটির প্রাচীর দুর্বল হয়ে পড়ায় ম্যাজিস্ট্রেট আনোয়ারুজ্জামান ওই দিনের মতো উদ্ধার কাজ সাময়িক স্থগিত করেন। দ্বিতীয়দিনের মতো রবিবার গুপ্তধন খুঁজতে দায়িত্ব পান জেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাজওয়ার আকরাম সাকাপি ইবনে সাজ্জাদ। তবে সকাল থেকে বৃষ্টির কারণে কাজ শুরু হয়নি। পরে দুপুরে তিনি ঝুঁকির আশঙ্কা জানিয়ে দ্বিতীয়দিনের মতো কাজ সাময়িক স্থগিত করে দেন। দ্বিতীয়দিনের মতো গুপ্তধন খোঁজা স্থগিত করার পরও উৎসুক লোকজন ভিড় কমেনি। নিচে দুই মণের বেশি স্বর্ণালঙ্কার ও দামি জিনিসপত্র থাকতে পারে- এমন খবর ছড়িয়ে পড়ার পর দু’দিন ধরে উৎসুক মানুষের ভিড় লেগেই ছিল। আর এই কারনে পুলিশ বাড়িটির চারপাশ ঘিরে রেখেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, মুক্তিযুদ্ধের সময় এই বাড়িটি জল্লাদখানার মতো ছিল। গত ১০ জুলাই ওই বাড়িতে গুপ্তধন রয়েছে মর্মে আবু তৈয়ব নামে একলোক থানায় অভিযোগ করেন। তিনি নিজেকে সেই সময়ের ওই বাড়ির মালিকের আত্মীয় দাবি করেন। এরপর ১৪ জুলাই ওই বাড়ির বর্তমান মালিকের সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়ে থানায় একটি জিডি করা হয়। দুই পক্ষই বাড়িতে গুপ্তধন থাকার কথা জানিয়ে জিডি করায় পুলিশ বিষয়টি আদালত ও প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতরকে জানায়। এরপর আদালতের নির্দেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতিতে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে বাড়িটিতে খনন কাজ শুরু হয়। দ্বিতীয়দিনের গুপ্তধন পাওয়া যায়নি।
×