ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

চুক্তিভিত্তিক গাড়ি চালানো বন্ধের ঘোষণা মালিকদের

প্রকাশিত: ০১:০১, ৮ আগস্ট ২০১৮

চুক্তিভিত্তিক গাড়ি চালানো বন্ধের ঘোষণা মালিকদের

স্টাফ রিপোর্টার ॥ চুক্তিভিত্তিক গাড়ি চালানো বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাকাভিত্তিক পরিবহন মালিকদের সংগঠন ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি। প্রস্তাবিত সড়ক পরিবহন আইনকে পূর্ণ সমর্থন দিয়ে এ ঘোষণা দিয়েছেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্যাহ। পাশাপাশি বৃহস্পতিবার থেকে রাজধানীর প্রতিটি বাস টার্মিনালে ফিটনেসবিহীন গাড়ি ও চালকের লাইসেন্স পরিদর্শনে নামবেন বাস মালিকরা। বুধবার বিকেলে বিআরটিসি ভবনে অবস্থিত সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, আমরা পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা সবাই এই আইনের পূর্ণ সমর্থন করি। এই আইন ১৯৮৩ সালের আইন থেকে অনেক সময়োপযোগী ও গ্রহণযোগ্য। আমরা সমর্থন জানাই। তবে এই আইনে জরিমানার পরিমাণ অনেক বেশি। আমরা কিছু সংশোধনী প্রস্তাব দেব। এগুলো সরকার মানলেও সমর্থন থাকবে, না মানলেও সমর্থন থাকবে। এনায়েত উল্যাহ বলেন, আগে বাস কোম্পানিগুলো ক্ষতিপূরণ দিতো না বললেই চলে। কিন্তু এই আইনে ক্ষতিপূরণ না দেয়ার সুযোগ নেই। ক্ষতিপূরণ দিতেই হবে। তিনি আরও বলেন, আগামীকাল থেকে কোনও গাড়ি চুক্তিভিত্তিক চলবে না। এভাবে চললে পারাপারি বেশি হয়, দুর্ঘটনা বাড়ে। আমরা এটা করতে দেবো না। যে কোম্পানি এটা মানবে না তার লাইসেন্স বাতিল করার জন্য আমরা সুপারিশ করবো। আর আমাদের সমিতির আওতায় হলে সাংগঠনিক ব্যবস্থাও নেবো। তিনি আরও বলেন, আগামীকাল থেকে আমরা প্রতিটি টার্মিনালে চেক করবো কোনও গাড়ি ফিটনেস সনদ, চালকের লাইসেন্স ছাড়া চলে কি না। কারও (চালকের) কাগজপত্রের ঘাটতি থাকলে তাকে চলতে দেয়া হবে না। এই অভিযান অব্যাহত থাকবে। তিনি বলেন, আমরা আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মালিকদের সময় দিচ্ছি তারা যেন এর মধ্যে সব কিছু ঠিক করে নেয়। এ সময় তিনি টার্গেটভিত্তিক গাড়ি চালানো বন্ধ করতে সড়কের পাশে টিকেট কাউন্টারের ব্যবস্থা রাখার জন্য সিটি করপোরেশনকে আহ্বান জানান। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন মহাখালী বাস মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কালামসহ পরিবহন মালিক ও শ্রমিক নেতারা। সড়কে দুর্ঘটনা কমিয়ে আনার চেষ্টায় বিভিন্ন উদ্যোগের অংশ হিসেবে রাজধানীতে আর চালকদের সঙ্গে দৈনিক চুক্তি বা জমার ভিত্তিতে বাস না চালানোর সিদ্ধান্ত নিল মালিকপক্ষ। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আমরা চাই চালকরা বাস চালিয়ে সারাদিনের আয় মালিকের হাতে তুলে দেবেন। আর মালিক তার বাসের চালক-শ্রমিকদের নির্ধারিত হারে মজুরি দেবেন। এনায়েত বলেন, আমাদের সিদ্ধান্ত অমান্যকারী মালিক যদি সমিতির সদস্য হয়, তাহলে ওই মালিককে আমাদের সমিতি থেকে বহিষ্কার করা হবে। কোনো বাস চালক চুক্তিতে বাস চালাচ্ছে কি না সেটা কীভাবে জানা যাবে- এই প্রশ্নে মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক বলেন, প্রতিটি রাস্তায় কোম্পানির চেকার থাকবে। তাছাড়া মালিক সমিতি ‘কৌশল’ ব্যবহার করবে। এনায়েত উল্যাহ বলেন, রাজধানীতে বাস চলাচলে আবার ‘কাউন্টার সার্ভিস’ চালু করা হবে। কাউন্টারের জায়গা চেয়ে সিটি করপোরেশনে চিঠি পাঠানো হবে। কাল থেকে রাজধানীর সড়কে কোনো ফিটনেসবিহীন বাস চলতে দেয়া হবে না। এজন্য সবাইকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি। তাছাড়া টার্মিনাল থেকে বাস ছেড়ে যাওয়ার আগে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে। সমিতির সাধারণ সম্পাদক বলেন, প্রতিটি টার্মিনালে মালিক ও শ্রমিক পক্ষের নেতাদের নিয়ে কমিটি গঠন করা হবে। ওই কমিটি বাস ছাড়ার আগের চালকের লাইসেন্স, গাড়ির কাগজপত্র এবং গাড়িটি চলাচলের উপযোগী কিনা তা দেখবে। কোনো ব্যত্যয় থাকলে ওই গাড়ি চলতে দেয়া হবে না। এই কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। রংচটা, লক্কড়ঝক্কড় মার্কা বাস মেরামত করার জন্য ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময় দেয়া হয়েছে।
×