ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

এসডিজি বাস্তবায়নে দক্ষতা উন্নয়নের তাগিদ

প্রকাশিত: ০২:২৮, ৮ আগস্ট ২০১৮

এসডিজি বাস্তবায়নে দক্ষতা উন্নয়নের তাগিদ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ নিজস্ব অর্থায়নে এসডিজি বাস্তবায়নে দক্ষতা উন্নয়নের তাগিদ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। ১৫ বছর মেয়াদি এসডিজি বাস্তবায়নে বাংলাদেশের আগামী ১২ বছরে বাড়তি ৯২৮ বিলিয়ন ডলার অর্থায়ন প্রয়োজন হবে। যার মধ্যে ৮৫ শতাংশ অর্থ অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে পাওয়ার আশা করছে সরকার। বাকি ১৫ শতাংশ উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে পাওয়ার আশা করা হচ্ছে। তবে উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে এই অর্থও পাওয়া যাবে কি না তা নিয়ে সংশয় রয়েছে সংশ্লিষ্টদের। এ কারণে নিজস্ব অর্থায়নের পাশাপাশি দক্ষতা উন্নয়নের উপর জোর দেয়া হয়েছে। বুধবার এসসিজি অর্জনে দক্ষতা উন্নয়ন শীর্ষক ওয়ার্কশপের আয়োজন করে ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ (আইডিইবি)। সংস্থাটির সভাপতি একেএম এ হামিদের সভাপতিত্বে কাকরাইলের নিজস্ব কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ওই ওয়ার্কশপে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক মো. আবুল কালাম আজাদ, কারিগরি শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অশোক কুমার বিশ্বাস প্রমুখ। প্রসঙ্গত, জাতিসংঘ ঘোষিত ১৫ বছর মেয়াদি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) ১৭টি অভীষ্ট এবং ১৬৯টি লক্ষ্য বাস্তবায়ন করতে হবে। সংশ্লিষ্টদের মতে, এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের ৪৬টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশে জিডিপির অনুপাতে কর আদায়ের হার সবচেয়ে কম। মাত্র ১০ শতাংশ। অথচ নেপালের মতো দেশেও রাজস্ব আদায়ের হার জিডিপির অনুপাতে ১৮ শতাংশ। একই সঙ্গে এসডিজি বাস্তবায়নে দক্ষতা উন্নয়ন ও মানব সম্পদ উন্নয়নের উপর জোর দেয়া হয়েছে। চলতি অর্থবছরের বাজেটেও দক্ষতা উন্নয়নে সরকার বেশকিছু প্রকল্প গ্রহণ করেছেন। এমডিজির মতো এসডিজি অর্জনে সাফল্য পেতে হলে দক্ষ মানব সম্পদ জরুরী। আবুল কালাম আজাদ বলেন, এসডিজি অর্জনে বাংলাদেশের আগামী ১২ বছরে বাড়তি ৯২৮ বিলিয়ন ডলার অর্থায়ন লাগবে। যার মধ্যে ৮৫ শতাংশ অর্থ অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে পাওয়ার আশা করছে সরকার। কিন্তু প্রশ্ন হলো, বাকি অর্থ কে দেবে? জাতিসংঘের অধিভুক্ত ১৯৪টি দেশই তো এসডিজি বাস্তবায়ন করছে। তাই আমাদের নিজস্ব টাকা দিয়েই এসডিজি বাস্তবায়ন করতে হবে। তিনি বলেন, আমাদের কিছু সম্ভাবনাময় খাত রয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে ঔষধশিল্প, নীল সমুদ্র অর্থনীতি, লেদার এবং কারিগরি শিক্ষা। এসব কাজে লাগাতে পারলে বাংলাদেশের চেহারার আমূল পরিবর্তন ঘটবে। তবে দরকার সক্ষমতা বাড়ানো। সেটির কাজও চলছে। একসময় দেশে এডিপির আকার ছিল ৩০ হাজার কোটি টাকা। এখন সেই এডিপির আকার বেড়ে ছয় গুণ হয়েছে। সারা দেশে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার কাজ জোরোশোরে চলছে। একই ছাদের নিচে সব সেবা দেয়ার প্রক্রিয়াও শেষ পর্যায়ে। তবে এসডিজি বাস্তবায়নে অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আদায়ের হার বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই বলেও মত দেন তিনি। তিনি আরও বলেন, বর্তমান বিশ্বে উন্নয়নের পূর্বশর্ত হচ্ছে দক্ষতা উন্নয়ন। দক্ষতা ব্যতিত কোন জাতি উন্নয়ন করতে পারে না। আগামীর পৃথিবী হবে দক্ষতার পৃথিবী। বর্তমান সরকারের উদ্যোগে দেশে অনেকগুলো প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া খুব অল্প সময়ে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। এর মূলে রয়েছে দেশগুলো দক্ষ মানব সম্পদ। আমাদেরও সেই দিকে এগিয়ে যেতে হবে। মো. আলমগীর বলেন, দক্ষতা উন্নয়নে সরকার কারিগরি শিক্ষাকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে। এদেশ কে এগিয়ে নিতে হলে দক্ষ মানব সম্পদ সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। আমাদের সম্পদ সীমিত। এই সম্পদের উপযুক্ত ব্যবহারের মাধ্যমে নিজস্ব অর্থায়নে এসডিজি বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে। একেএমএ হামিদ বলেন, শিক্ষা জীবনের শুরুতেই বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও দক্ষতার প্রতি ছেলেমেয়েদের মনযোগ আকর্ষণ করতে হবে। শিক্ষার অর্থই হবে শিক্ষার্থীদের দক্ষ করে গড়ে তোলা। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত ২০২১ সালের মধ্যে রূপকল্প এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত রাষ্ট্রের স্বপ্ন বাস্তবায়নে দক্ষ মানব সম্পদ সবচেয়ে বেশি জরুরী। এলক্ষ্যে সরকারের পাশাপাশি আইডিইবি কাজ করছে। তিনি দক্ষতা উন্নয়নে সংস্থাটির পক্ষ থেকে বেশকিছু সুপারিশ উপস্থাপন করেন।
×