ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

নেতাকর্মীদের পদ্মা সেতু দিয়ে চলাচলে নিষেধ করেছেন খালেদা ॥ নৌমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৫:৫২, ১১ আগস্ট ২০১৮

  নেতাকর্মীদের পদ্মা সেতু দিয়ে  চলাচলে নিষেধ করেছেন খালেদা ॥ নৌমন্ত্রী

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া, ১০ আগস্ট ॥ নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান বলেছেন, আমাদের সরকার যখন দেশ থেকে মাদক নির্মূলে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে, তখন বিএনপি এই মাদকবিরোধী যুদ্ধের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। বিএনপি-জামায়াত জোটকে উদ্দেশ করে মন্ত্রী আরও বলেন, ওনাদের অর্জন ছিল দুর্নীতি। বাংলাদেশ থেকে টাকা পাচার করা। খাম্বা তৈরি করে বিদ্যুত না দেয়া। পেট্রোল দিয়ে মানুষ খুন করা। তারা যানবাহনের ৯২ ড্রাইভার, ১৭ পুলিশসহ শত শত মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। তিনি বিএনপি জামায়াতের নেতাকর্মীদের পরামর্শ দেন পদ্মা সেতু নির্মাণ সম্পন্ন হলে আপনারা ওই সেতুর ওপর দিয়ে চলাচল করবেন না। কারণ আপনাদের নেত্রী খালেদা জিয়া পদ্মা সেতু দিয়ে চলাচল করতে নিষেধ করেছেন। পদ্মা সেতুতে উঠতে নিষেধ করেছেন। মন্ত্রী আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শত বাধা-প্রতিবন্ধকতা উপেক্ষা করে দুঃসাহসিক চ্যালেঞ্জ নিয়ে নিজেদের অর্থায়নে পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ করে যাচ্ছেন। তখন ড. ইউনুসসহ বিএনপি চক্র সেতু নির্মাণে বাধা দিয়েছেন। ষড়যন্ত্র করেছেন সেতুর নির্মাণ কাজ বন্ধের জন্য। শুক্রবার বেলা ১১ টায় দেশের তৃতীয় পায়রা সমুদ্র বন্দরের পাঁচতলা নবনির্মিত প্রশাসনিক ভবন ও পায়রা বন্দর নির্মাণে জমি অধিগ্রহণে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের ১৮-৩৫ বছরের সদস্যদের পুনর্বাসনের লক্ষ্যে কর্মসংস্থানে কর্মদক্ষতার উন্নয়নে শুরু করা তিনটি ক্যাটাগরির প্রশিক্ষণ কর্মসূচীর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন পরবর্তী সমাবেশে এসব কথা বলেছেন। বিশেষ অতিথির হিসেবে বক্তব্য রাখেন, সাবেক প্রতিমন্ত্রী আলহাজ মাহবুবুর রহমান এমপি, পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক ড. মোঃ মাছুমুর রহমান। সভাপতির বক্তব্য রাখেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ আব্দুস সামাদ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ চেয়ারম্যান কমডোর এম জাহাঙ্গীর আলম, বিএন। বিশেষ অতিথি ছিলেন পটুয়াখালীর পুলিশ সুপার মঈনুল ইসলাম। এ সময় উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল মোতালেব তালুকদার, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ তানভীর রহমান, কলাপাড়া পৌরসভার মেয়র বিপুল চন্দ্র হাওলাদার, কুয়াকাটা পৌরসভার মেয়র আব্দুল বারেক মোল্লাসহ বন্দর কর্তৃপক্ষের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের দেয়া তথ্যমতে, ১২ কোটি ৭০ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত প্রশসনিক ভবনটির প্রত্যেক ফ্লোরের আয়তন ৫৮০০ বর্গফুট। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের ১৫০ জনকে প্রথম পর্যায়ে কম্পিউটার বেসিক, রাজমিস্ত্রি এবং ড্রাইভিং তিনটি কোর্সের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু করা হয়। তিন মাসব্যাপী এই প্রশিক্ষণার্থীরা দৈনিক ৩০০ টাকার ভাতা পাবেন। পাবেন নাস্তার সুবিধা। পর্যায়ক্রমে অধিগ্রহণে ক্ষতিগ্রস্ত অন্তত ৩৫০০ জনকে ৩৫টি ক্যাটাগরিতে প্রায় তিন বছর এই প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চলমান থাকবে। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মন্ত্রী আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে তিনি স্থানীয় এমপি মাহবুবুর রহমানকে নিয়ে রাবনাবাদ চ্যানেল দফায় দফায় পরিদর্শন করেন। বিভিন্ন ধরনের বাস্তবতা এবং সমীক্ষা চালিয়ে ২০১৩ সালের ১৯ নবেম্বর এই বন্দরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, এই আন্ধারমানিক নদীতে একটি সেতুসহ মূল বন্দরের সঙ্গে সংযোগ সড়ক করা হবে। আগামী মাসের মধ্যে পায়রা বন্দরের মূল চ্যানেলে ক্যাপিটাল ড্রেজিংএর কাজ শুরুর লক্ষ্যে প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। এলক্ষ্যে এ বছরের ১৯ মার্চ মন্ত্রীসভায় জাতীয় অগ্রাধিকার প্রকল্প (এনপিপি) হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এই অগ্রাধিকার প্রকল্পটি পিপিপি পদ্ধতিতে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক ড্রেজিং কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি সম্পাদনের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ চেয়ারম্যান জানান, ক্যাপিটাল ড্রেজিং, কয়লা টার্মিনাল (ড্রাই বাল্ক) এবং জিওবির অর্থায়নে একটি টার্মিনাল নির্মাণ কাজ ২০২১ সালের মধ্যে সম্পন্ন করে পায়রা বন্দরকে আন্তর্জাতিক সমুদ্র বন্দর হিসেবে পুরোপুরি চালু করা হবে। এছাড়া অন্যান্য মন্ত্রণালয় আনুষঙ্গিক সুবিধাদি সৃষ্টি করে ২০২৫ সালের মধ্যে পায়রা সমুদ্র বন্দরকে একটি পুর্ণাঙ্গ সমুদ্র বন্দরে রূপান্তরের চুড়ান্ত পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান, পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ পরিচালক (প্রশাসন) মহিউদ্দিন আহমেদ খান।
×