ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

চক্রান্ত করে জনগণকে বিভ্রান্ত করা যাবে না- নির্বাচন হবেই ॥ নাসিম

প্রকাশিত: ০৫:৫৩, ১১ আগস্ট ২০১৮

 চক্রান্ত করে জনগণকে  বিভ্রান্ত করা যাবে  না- নির্বাচন হবেই ॥ নাসিম

স্টাফ রিপোর্টার, সিরাজগঞ্জ ॥ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, ১৪ দলের মুখপাত্র এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বিএনপিকে উদ্দেশ করে বলেছেন, কোন চক্রান্ত করে জনগণকে বিভ্রান্ত করা যাবে না। নির্বাচন ভন্ডুল করার ক্ষমতা কারও নেই। জনগণের ওপর আস্থাহীন বিএনপি ভোটের মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে পরাজিত করতে পারবে না বলেই দেশী-বিদেশী চক্রান্তের পথে পা দিচ্ছে, বিএনপি দেশকে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিচ্ছে। তাদের এই চক্রান্ত সফল হবে না। এ দেশের জনগণ শান্তি ও উন্নয়নের পক্ষে থাকবে। যে কোন অশুভ শক্তির চক্রান্ত নস্যাত করে দেবে। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন ঘোষিত নির্ধারিত সময়েই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং তা সংবিধান অনুযায়ী বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনেই হবে। শুক্রবার কাজীপুরের যমুনা নদীবেষ্টিত চরগিরিশ ইউনিয়নের সিন্দুরআটা মাঠে তিনি এক বিশাল জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতা দেন। এর আগে তিনি স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর বাস্তবায়িত পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন ও দুর্গম চরে নির্মাণাধীন পাকা সড়ক ও কালভার্ট নির্মাণ কাজের অগ্রগতি পরিদর্শন করেন। যমুনা নদীর মধ্যখানে জেগে ওঠা স্থায়ী চর ঘনবসতিপূর্ণ সিঁন্দুরআটা চরে স্থাপিত পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র নির্মাণ করায় তৃণমূলে বসবাসকারী মা ও শিশু স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত হবে। এ জন্য দুর্গম এ চরের মানুষ বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের দীর্ঘায়ু কামনা করে বিশেষ দোয়া করেছেন। চরগিরিশ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় সভাপতিত্ব করেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি গাজী আব্দুস সামাদ। অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা দেন সাবেক এমপি ডাঃ মুরাদ হাসান, পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের মহাপরিচালক ডাঃ কাজী মোস্তফা সারোয়ার, স্বাস্থ্য বিভাগের অতিরিক্ত মহাপরিচালক এনায়েত হোসেন, কাজীপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খলিলুর রহমান, চরগিরিশ ইউপি চেয়ারম্যান জহুরুর হক মিন্টু এবং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সম্পাদক আকতারুজ্জামান মিল্টন প্রমুখ। বিকেল তিনটার এই জনসভায় উপস্থিত হতে তিনি হেলিকপ্টার নিয়ে দুর্গম চরের টুক্কার মোড়ে অবতরণ করেন দুপুর দুটায়। এর পরঘোড়ার গাড়িতে আরোহণ করে তিনি জনসভার স্থলে আসেন। তাকে দেখার জন্য চরের অসংখ্য শিশু নারী-পুরুষ জনসভায় উপস্থিত হন। ২০১৩-১৪ সালে ওরা মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছে উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম জনসভায় বলেছেন- তাদের আমলেই জঙ্গীবাদের সৃষ্টি হয়েছে। হাওয়া ভবন সৃষ্টি করে দেশের সম্পদ লুটপাট করা হয়েছে। ওরা ক্ষমতায় এলে দেশের সার্বিক উন্নয়ন স্থবির হয়ে যাবে। তাই দেশের স্বার্থে জনগণের স্বার্থে উন্নয়ন ও জঙ্গী দমনের সফল নেতা বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার সরকারকে ক্ষমতায় রাখতে হবে। এ জন্য জনগণকে সহযোগিতা করারও আহ্বান জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। কাজীপুরের দুর্গম চরাঞ্চলে স্বাস্থ্যখাতসহ বিভিন্নমুখী উন্নয়নচিত্র তুলে ধরে তিনি বলেছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় না থাকলে দেশের চলমান উন্নয়ন বন্ধ হয়ে যাবে। জনগনকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে মোহাম্মদ নাসিম আরও বলেছেন- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে অন্ধকার বাংলাদেশকে আলোকিত করেছেন। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে জঙ্গী দমন করেছেন। অদম্য সাহস নিয়ে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু করেছেন। সেই স্বপ্নের সেতু এখন সূর্য্যরে আলোর মতো দৃশ্যমান হয়েছে। চলমান উন্নয়ন, দেশের শান্তি ও স্থিতিশীলতা অব্যাহত রাখতে আগামী নির্বাচনে আবারও আওয়ামী লীগকে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে বিজয়ী করার জন্য তার নির্বাচনী এলাকা কাজীপুরসহ দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে নাসিম বলেছেন উন্নয়নে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার কোন বিকল্প নেই। এক হাজার হজযাত্রীর হজে যাওয়া অনিশ্চিত! স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্রতারণার শিকার হওয়া ১২৫ হজযাত্রীকে বিশেষ ব্যবস্থায় হজে পাঠানোর উদ্যোগ নিয়েছে হাব। তবে বৃহস্পতিবার ভিসা প্রদানের সর্বশেষ দিনেও ভিসা পাননি ৬৭৮ হজযাত্রী। এদিকে বিমানের ১৬টি ফ্লাইট বাতিল হওয়ার পরও অবিক্রীত রয়ে গেছে বেশ কিছু টিকেট। এসব কারণে শেষের দিকে হাজারখানেক হজযাত্রীর হজে যাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। সৌদি আরব যদি পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী অতিরিক্ত সøট না দেয়- তাহলে বিমানের কিছু সংখ্যক যাত্রী অন্য এয়ারলাইন্সে পাঠাতে হবে। শুক্রবার পর্যন্ত হজে গিয়েছে ১ লাখ ৩ হাজার ৯৮০। এ সব বিষয়ে শুক্রবার আশকোনা হজ অফিসে গিয়ে জানা যায়, ৬৭৮ জনের ভিসা না হওয়ায় পরস্পরবিরোধী দোষারোপ চলছে। সংসদীয় কমিটির সভাপতি বজলুল হক হারুণ বলেছেন, এজেন্সির প্রতারণা নাকি অন্য কোন কারণে তাদের ভিসা হয়নি সেটা খতিয়ে দেখতে হবে। অন্যদিকে হাব মহাসচিব শাহাদত হোসেন তসলিম বলেছেন, ‘তারা স্বেচছায় হজে যেতে চায়নি বলেই ভিসা হয়নি। তারপরও সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে দায়ী এজেন্সির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। এদিকে ১২৫ হজযাত্রীর কাছ থেকে হজের টাকা নিয়ে পালিয়েছে প্রতারক মিনার ট্যুর এ্যান্ড ট্রাভেলস (লাইসেন্স নং-১০৩৩)। ১৫ দিনেরও বেশি সময় ধরে মালিক খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। প্রতিষ্ঠানটির ই-হজ সিস্টেমের ইউজার নেম এবং পাসওয়ার্ড পাওয়া না যাওয়ায় বিশেষ ব্যবস্থা নেয় হাব। এ অবস্থায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়েও বিশেষ উদ্যোগ নেয়ার নির্দেশ দেয়া হলে হাব মহাসচিব সৌদি আরবে দেনদরবার চালিয়ে শেষ দিনে এদের বিপরীতে বারকোড আনতে সক্ষম হন। তারপর ঢাকায় শাহাদত হোসেন তসলিম ওই এজেন্সির পলাতক মালিককে তলব করে এনে ভিসার আবেদন জমা দেয়ার ব্যবস্থা করেন। এবং বৃহস্পতিবার তাদেরকেই সর্বশেষ ভিসা দেয়া হয়। এরপর টিকেটেরও ব্যবস্থা করা হয়। এ বিষয়ে হাব মহাসচিব শাহাদত হোসেন তসলিম শুক্রবার আশকোনা হজ অফিসে জনকণ্ঠকে বলেন, তাদেরকে বিশেষ ব্যবস্থায় সর্বোচ্চ গুরত্ব দিয়ে হজে পাঠানো হচ্ছে। কারণ অনেকে সারা জীবনের আয়ের একটি অংশ রাখেন হজে যাওয়ার নিয়তে। অল্প অল্প করে জমান টাকা। এই টাকার প্রতি মায়া একটু আলাদাই। তাই ভুক্তভোগী হজযাত্রীদের যে কোন মূল্যে হজে পাঠানো হচ্ছে। সরকারের ভাবমূর্তির কথা ভেবে আমরা সেটা করেছি। হাবের পক্ষ থেকে প্রতারক এজেন্সির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। গত কদিন ধরে এ নিয়ে চরম পেরেশানিতে কেটেছে। তবে শেষ মুহূর্তে হলেও তাদের সঙ্কট কেটেছে। হজ অফিস সূত্রে জানা যায়, মিনার ট্যুর এ্যান্ড ট্রাভেলস নামে এজেন্সি এ বছর কত জনের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে, কতজনকে হজে পাঠিয়েছে কতজন প্রতারিত হতে যাচ্ছেন-প্রাথমিক তদন্তে তা নিশ্চিত হওয়া গেছে। হজ অফিসে গিয়ে মিনার বিরুদ্বে অভিযোগ দিয়েছেন- ভুক্তভোগী- মোঃ শরিফ উদ্দিন খান, দেওয়ান আব্দুল বাকী, দেওয়ান আফিফা বেগম, সাদিক মিয়া, মোঃ মিলন মিয়া, মিজানুর রহমান, আাসিফ রেজা, আরশাদ আলী, হাফিজা খানম। এ বিষয়ে একজন কর্মকর্তা জানান, মিনার ট্যুর এ্যান্ড ট্রাভেলস এ বছর সবমিলে ২২৫ জন হজযাত্রীর কাছ থেকে টাকা নিয়েছে। হজ ফ্লাইট শুরুর প্রথম কয়েক দিনে ৯২ হজযাত্রীকে ফ্লাইট দেয়া হয়েছিল। এরপর থেকে তাদের ফকিরাপুলের অফিস বন্ধ রাখে। প্রতিষ্ঠানের মালিক জাহাঙ্গীর আলম ও তার স্ত্রী পারভীন আক্তার আত্মগোপনে আছেন। প্রতিষ্ঠানটি ২০০৯ সালে প্রতারণার দায়ে শাস্তি পাওয়া সাউথ এশিয়ান ওভারসিজ নেটওয়ার্কের মালিক মাহফুজ বিন সিরাজ ভুক্তভোগীদের মোনাজ্জেম। সাউথ এশিয়ান ছাড়াও রহমানিয়া ও জামালপুর ট্রাভেলস নামে তিনটি বিতর্কিত ও বন্ধ প্রতিষ্ঠান মিনার ট্যুর এ্যান্ড ট্রাভেলসের মাধ্যমে এ বছর হজযাত্রী পাঠানোর চুক্তি করে। জানা গেছে, শেষের দিকে বিমান হাজারখানেক যাত্রী নিয়ে বিপাকে পড়তে পারে। আগামী ১৬ আগস্ট বিমানের শেষ হজফ্লাইট হলেও এখনো বেশ কিছু টিকেট অবিক্রীত রয়ে গেছে। পর্যাপ্ত যাত্রী না পাওয়ায় এরই মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ১৬ ফ্লাইট বাতিল হয়েছে। আরও কমপক্ষে আটটি ফ্লাইটের টিকিট অবিক্রীত রয়েছে এয়ারলাইন্সটির। এসব ফ্লাইটের টিকিট যথাসময়ে বিক্রি না হলে ঝুঁকিতে পড়বেন কমপক্ষে ১ হাজার হজ গমনেচ্ছু। হজ এজেন্সিগুলো হজযাত্রীদের সৌদি আরবে বাড়ি ভাড়া ও ভিসা জটিলতায় এ সঙ্কট তৈরি হয়েছে। বিমানের কর্মকর্তারা বলছেন, এ বছর সৌদি সরকার অতিরিক্ত হজ ফ্লাইটের অনুমোদন দেবে না। ফলে এখনও নির্ধারিত যেসব ফ্লাইটের টিকিট অবিক্রীত রয়েছে, সেগুলো বিক্রি না হলে অনিশ্চতা বাড়বে। হজ অফিস জানিয়েছে, ১০আগস্ট সকাল নয়টা পর্যন্ত বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের মাধ্যমে সৌদি আরব পৌঁছেছেন ৫৩ হাজার ২৮৪ জন, সৌদি এয়ারলাইন্সে পৌঁছেছেন ৫০ হাজার ৬৭৮। হাব মহাসচিব শাহাদাত হোসাইন তসলিম বলেন-এ বছর যারা হজে যাওয়ার জন্য রেজিস্ট্রেশন করেছেন সবাই যেতে পারবেন। কেউ বাদ পড়বেন না। শঙ্কার কোন কারণ নেই। বিমানের যদি কোন টিকিট অবিক্রীত থাকে সেটি তাদের তাদের সমস্যা, এজন্য হজযাত্রায় কোন সমস্যা হবে না। ভিসা না পাওয়ার বিষয়ে বজলুল হক হারুণ বলেছেন, ১ লাখ ২৭ হাজার হজযাত্রীর মধ্যে সাড়ে ৬শ’ জনের ভিসা হয়নি। এটা তো খুবই স্বাভাবিক। পাসপোর্টের জটিলতা, অসুস্থতা ও স্বেচ্ছায় কেউ যদি হজে না যায় তা হলে সরকার জোর করে পাঠাবে? তারপরও খতিয়ে দেখা হবে যেতে চেয়েও কেউ বাদ পড়েছেন কিনা। আজ সিলেটের দুই কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্টাফ রিপোর্টার ॥ সিলেট সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে স্থগিত দুটি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ করা হচ্ছে আজ শনিবার। ইসি জানিয়েছে সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ করা হবে এবং বিরতি ছাড়াই বেলা চারটা পর্যন্ত চলবে। কমিশনের পক্ষ থেকে স্থগিত কেন্দ্রে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। দুটি কেন্দ্রে মেয়র পদ ছাড়াও কাউন্সিলর পদে ভোট গ্রহণ করা হবে। ইসি জানিয়েছে স্থগিত দুই কেন্দ্র ছাড়াও সিটির সংরক্ষিত ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে দুই প্রার্থী সমভোট পাওয়ায় এই ওয়ার্ডের ৯২ থেকে ১০৫ নম্বর পর্যন্ত ১৪ ভোট কেন্দ্রে নতুন করে ভোটগ্রহণ করা হচ্ছে আজ। গত ৩০ জুলাই রাজশাহী বরিশাল সিটির পাশাপাশি সিলেট সিটি কর্পোরেশনে ভোটগ্রহণ করা হয়। ১৩৪ ভোট কেন্দ্রের মধ্যে অনিয়মের কারণে দুটি ভোট কেন্দ্রের নির্বাচন স্থগিত করে দেয় কমিশন। কিন্তু মেয়র পদে দুই প্রার্থীর ভোটের ব্যবধানের চেয়ে স্থগিত কেন্দ্রের ভোট বেশি হওয়ায় ফল ঘোষণাও স্থগিত রাখা হয়। শনিবার দুই কেন্দ্রে ভোটগ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সিলেটে মেয়র পদে ৭ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয় বিএনপির প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরীর সঙ্গে আওয়ামী লীগ প্রার্থী বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের হয়। ১৩২টি কেন্দ্রের মধ্যে বিএনপি মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী ধানের শীষ প্রতীকে পেয়েছেন ৯০ হাজার ৪৯৬ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ প্রার্থী বদর উদ্দিন আহমদ কামরান নৌকা প্রতীকে পেয়েছেন ৮৫ হাজার ৮৭০ ভোট। আরিফুল হক চৌধুরী ৪ হাজার ৬২৬ ভোটে এগিয়ে রয়েছেন। অন্যদিকে স্থগিত হওয়া দুটি কেন্দ্রের মোট ভোটার ৪ হাজার ৭৮৭। ভোটের এই ব্যবধানের কারণে আজ নতুন করে ভোট নেয়া হচ্ছে। ইসি জানিয়েছে, নগরীর ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের গাজী বোরহান উদ্দিন গরম দেয়ান সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ২৭নং ওয়ার্ডের হবিনন্দি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে আজ ভোট নেয়া হবে। এর মধ্যে দুটির প্রথম কেন্দ্রের ভোটার সংখ্যা ২ হাজার ২২১ আর দ্বিতীয়টির ভোটার সংখ্যা ২৫৬৬ জন। এদিকে আজ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী গত বৃহস্পতিবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদার সঙ্গে সাক্ষাত করে দুটি কেন্দ্রে সুষ্ঠুভাবে ভোট গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন। এ সময় তিনি কেন্দ্র দুটিতে মৃত ভোটারের তালিকা এবং প্রবাসী ভোটারের তালিকা সিইসির কাছে হস্তান্তর করেন। তিনি বলেন, দুটি স্থগিত কেন্দ্রে মোট ভোটার রয়েছে ৪ হাজার ৭৮৭। এর মধ্যে মৃত ভোটার রয়েছে ১১৮ জন। আর প্রবাসে অবস্থান করছেন ১৮০ জন। তিনজন ভোটার এলাকা ছেড়ে চলে গেছেন। এদিকে মেয়র পদে আরিফুল হক চৌধুরী এগিয়ে থাকায় বিজয় ঘোষণা করা এখন সময়ের বিষয় মাত্র। কারণ প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ প্রার্থী বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের চেয়ে বিএনপি প্রার্থী ৪ হাজার ৬২৬ ভোট বেশি পেয়ে এগিয়ে আছেন। এই সিটিতে মেয়র পদে আরিফুলের জয়ের জন্য প্রয়োজন মাত্র ১৬১ ভোট। অপর দিকে আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে জিততে হলে স্থগিত ২ কেন্দ্রের মোট ভোটের প্রায় সবই তার বাক্সে পড়তে হবে। যা মোট ভোটের শতকরা প্রায় ১শ’ ভাগের কাছাকাছি। তবে আরিফুলের হিসাব মতে, মৃত ভোট এবং প্রবাসী ভোট বাদ দিয়ে যদি বাকি ভোট আওয়ামী লীগ প্রার্থী বাক্সে যায় তাহলেও তিনি জিততে পারবেন না। এই হিসেবে বলা যায় সিলেট সিটিতে আরিফুলের মেয়র হিসেবে ঘোষণা এখন সময়ের বিষয় মাত্র। পদ্মা সেতুর প্রথম খুঁটির পাইল সম্পন্ন স্টাফ রিপোর্টার, মুন্সীগঞ্জ ॥ পদ্মা সেতুর প্রথম খুঁটির পাইল শুক্রবার সম্পন্ন হয়েছে। বহু প্রতিক্ষিত মাওয়া তীরের এই খুঁটির (পি-১) ১৬টি রোরিং পাইলের মধ্যে ১৬টিই সম্পন্ন হয়েছে। এটি দেশের বৃহত্তম খুঁটি। ১৬টি পাইল দিয়ে বিশাল এই খুঁটি বিরল। পদ্মা সেতুর জাজিরা তীরে ১৬ পাইলের অনুরূপ খুঁটি তৈরি হয়েছে। জাজিরা প্রান্তের অর্থাৎ পদ্মা মূল সেতুর সর্বশেষ খুঁটি (পি-৪২) এটি। মূল সেতুর আরও যে ৪০টি খুঁটি রয়েছে নদীতে। এর মধ্যে ১৮টি খুঁটিতে ৬টি করে পাইল আর ২২টিতে ৭টি করে পাইল বসছে। নদীতে স্টিল পাইল যা হ্যামার দিয়ে নদীর তলদেশে প্রবেশ করানো হচ্ছে। আর তীরে ৪২ ও ১ নম্বর খুঁটিতে বোরিং পাইল বসেছে। এদিকে ৩নং মডিউলের স্প্যান চীন থেকে আসতে শুরু করেছে। পদ্মা সেতুর দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকৌশলীরা জানিয়েছেন ১৪ থেকে ২১নং খুঁটি পর্যন্ত এই ৩নং গ্রুপের স্প্যানগুলো অল্প সময়ের মধ্যেই কুমারভোগের বিশেষায়িত ওয়াকশপে এসে পৌঁছাবে। এই স্প্যানের একটি চালান ইতোমধ্যে সমুদ্রপথে চীন থেকে রওনা হয়েছে। এদিকে নদীতে ৪০ খুঁটিতে ২৬২টি পাইলের মধ্যে ১৬২টি এবং দু’তীরের দুই খুঁটির মূল সেতুর ১৯০ পাইল স্থাপন হওয়ায় মধ্য দিয়ে ভরা বর্ষায়ও সেতুর কাজের অগ্রগতির সোনালী বার্তা দিয়ে যাচ্ছে। নদীতে স্টিল পাইল যা হ্যামার দিয়ে নদীর তলদেশে প্রবেশ করানো হচ্ছে। মূল পদ্মায় এখন ১৬২টি পাইল পুরোপুরি বসে গেছে। আর ১৩টি পাইলের বটম সেকশন হয়েছে। ৬.১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এই মূল সেতুর সঙ্গে দু’পারে সংযুক্ত আরও প্রায় তিন কিলোমিটার দীর্ঘ সংযোগ সেতুর কাজও সন্তোষজনকভাবে এগুচ্ছে বলে সেতু কর্তৃপক্ষ শুক্রবার জানিয়েছে। দেশী-বিদেশী কয়েক হাজার প্রকৌশলী, কর্মকর্তা ও শ্রমিক দিনরাত অবিরাম কাজ করে যাচ্ছে। ইন্টারনেট বিচ্ছিন্ন ॥ চট্টগ্রামে ট্রেনের আগাম টিকেটের লাইনে দুর্ভোগ বিডিনিউজ ॥ ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় ঈদের অগ্রিম টিকেট বিক্রির তৃতীয় দিনে দীর্ঘ সময় ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে চট্টগ্রাম রেল স্টেশনে রাত থেকে অপেক্ষায় থাকা টিকেটপ্রত্যাশীদের। কথা ছিল শুক্রবার সকাল ৮টায় কাউন্টার খুলে টিকেট বিক্রি শুরু হবে। কিন্তু ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় সার্ভার জটিলতার কারণে সকাল নয়টা ৪০ মিনিটের দিকে টিকেট বিক্রি শুরু করে রেল কর্তৃপক্ষ। এরমধ্যে লাইন দীর্ঘ হতে হতে কাউন্টারের সামনের অংশ পার হয়ে স্টেশন প্রাঙ্গণের বাইরে ছাড়িয়ে যায়। বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে লাইনে দাঁড়ানো টিকেটপ্রত্যাশীরা পড়েন চরম ভোগান্তিতে। লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষায় থাকা অনেক টিকেট প্রত্যাশীকে ক্লান্ত হয়ে মাটিতে বসে পড়তে দেখা যায়। আবার লাইনে দাঁড়ানো কেউ কেউ উত্তেজিত হয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছিলেন। পতেঙ্গা থেকে টিকেট কিনতে আসা বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী রাকিবুল আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ভোর রাতে লাইনে দাঁড়িয়েছি। ইন্টারনেট লাইন যে কাটা পড়েছে সেটা জেনেই তাদের আগে থেকে ব্যবস্থা নেয়া দরকার ছিল। এতগুলো মানুষ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকল তার কী হবে? নগরীর হালিশহর থেকে আসা তাহমিনা আক্তার বলেন, ‘ঘরে বাচ্চাদের রেখে এসেছি। টিকেট বিক্রি শুরুই হল দেড় ঘণ্টা পর। কখন টিকেট পাব, আর কখন বাসায় ফিরব?’ এ বিষয়ে জানতে চাইলে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় বাণিজ্য কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ‘ফাইবার অপটিক লাইন কাটা পড়ায় সার্ভার সচল ছিল না। তাই সকালে নির্ধারিত সময়ে টিকেট বিক্রি শুরু করা সম্ভব হয়নি। এখন স্বাভাবিক নিয়মে টিকেট বিক্রি চলছে।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ফাইবার অপটিক লাইন কীভাবে কাটা পড়ল তা তারা খোঁজ নিয়ে দেখবেন। কোরবানির ঈদ সামনে রেখে গত ৮ আগস্ট থেকে ঢাকার পাশাপাশি চট্টগ্রাম রেল স্টেশন থেকে ট্রেনের অগ্রিম টিকেট বিক্রি হচ্ছে। চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা, চাঁদপুর, সিলেটসহ বিভিন্ন গন্তব্যের ১২টি ট্রেনের অগ্রিম টিকেট দিচ্ছে রেল কর্তৃপক্ষ। শোকের মাস বিশেষ প্রতিনিধি ॥ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালীর অবিসংবাদিত নেতা। তাঁর অমোঘ গর্জনে, নেতৃত্বে, দর্শনে, অঙ্গুলী হেলনেÑ কোটি কোটি বাঙালীই একদিন নেমেছিল পথে, আন্দোলনে, সশস্ত্র মুক্তি সংগ্রামে। সুশিক্ষিত পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে যার যা আছে তাই নিয়ে সম্মুখ সমরে অবতীর্ণ হয়েছিল। ত্রিশ লাখ মানুষ হাসতে হাসতে জীবন দিয়ে ছিনিয়ে এনেছিল মহার্ঘ্য স্বাধীনতা। বাঙালীর জীবনে শোকাহত ও অভিশপ্ত আগস্ট মাসের আজ এগারোতম দিন। সেই ভয়াল ও নিষ্ঠুরতম রক্তাক্ত ১৫ আগস্ট যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই অসংখ্য শোকের অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর পলাতক খুনীদের দেশে ফিরিয়ে এনে ফাঁসি কার্যকরের মাধ্যমে জাতিকে পুরোপুরি কলঙ্কমুক্ত করার দাবি ততই শাণিত হচ্ছে। একদিনে আসেনি বাঙালীর হাজার বছরের এই লালিত স্বপ্নের বাংলাদেশের স্বাধীনতা। বাঙালীর অধিকার আদায়ের সব সংগ্রামেই বঙ্গবন্ধু ছিলেন প্রথম সারিতে, অনন্য ভূমিকায়। তাঁর ডাকেই সূচিত হয়েছিল ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ঐতিহাসিক ৬ দফা আন্দোলন, ’৫৪-এর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, ’৭০-এর বৈপ্লবিক নির্বাচন এবং একাত্তরের মুক্তি সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বাঙালীর কাক্সিক্ষত স্বাধীনতা। আগস্ট এলেই তাই কাঁদে বাঙালী। বাঙালীর মন খারাপের মাস এটি। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রতিটি বাঙালীর হৃদয়ে বঙ্গবন্ধু চিরঞ্জীব। এ-প্রান্ত থেকে সে-প্রান্ত, এঘর থেকে সেঘর, সবখানে, সর্বত্র, সমানভাবে জুড়ে রয়েছেন তিনি আজও। শাহাদাতের ৪৩ বছর পরও, আজও, আলোয়-উদ্ভাসনে, সঙ্কটে ও সম্ভাবনায়, বাঙালীর চিরমানসপটে চির সমুজ্জ্বল জাতির জনক বঙ্গবন্ধু। কারণ তিনিই তো বাঙালীর শত-সহস্র বছরের অবিস্মরণীয় এক রাজনৈতিক নেতা, বাঙালীর জাতির পিতা। বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার ৪৩ বছর পেরিয়ে গেছে। কিন্তু দীর্ঘ এতটি বছর পরও দেশের নানা স্থানেই যখন বেজে ওঠে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা সংবলিত সেই বজ্রনির্ঘোষ ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ, তখনই নতুন করে শিহরিত হয়ে ওঠে বাঙালী। রক্তে জ্বলে ওঠে বঙ্গবন্ধুর দেয়া স্বাধীনতা রক্ষায় যে কোন ত্যাগ স্বীকারের মন্ত্র। স্বাধীনতাবিরোধী ও সাম্প্রদায়িক অপশক্তির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ লড়াই করার প্রেরণা জোগায়। বাঙালী জাতির মুক্তির মন্ত্রের সেই ঐতিহাসিক ভাষণটি আজ ইউনেস্কোর স্বীকৃতি পেয়েছে। ইতিহাসে হয়ত এ মাসে অনেক বিজয়ের কাহিনী লেখা আছে। কিন্তু বিজয়ের সেসব কাহিনী রক্তের স্রোতধারায় মিশেছে আগস্টে এসে। এ মাস নতুন করে ভাবতে শেখায়। এ মাস প্রতিশোধের চেতনায় শাণিত করে সবাইকে। কেননা এ মাসেই আমরা হারিয়েছি ইতিহাসের শ্রেষ্ঠ বাঙালী কালজয়ী মহাপুরুষ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। বঙ্গবন্ধু ইতিহাসের বাঁকঘোরানো এক সিংহপুরুষ। বাঙালী জাতির চরিত্র সম্পর্কে তাঁর চেয়ে বোধকরি আর কেউ জানতেন না। তবুও তিনি জীবনের বিনিময়ে সেই জাতির জন্যই রচনা করেন ইতিহাসের এক অমোঘ অধ্যায়। পৃথিবীতে কোন জাতিই মাত্র ৯ মাসে স্বাধীনতা লাভ করতে পারেনি আর স্বাধীনতার জন্য এই স্বল্পতম সময়ে প্রায় ত্রিশ লাখ বাঙালীর আত্মদানের ঘটনাও ইতিহাসে বিরল। শত ষড়যন্ত্রের বেড়াজাল ছিন্ন করে সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত ঘৃণিত খুনীদের বিরুদ্ধে ফাঁসির রায় কার্যকর হয়েছে। এখনও ক’জন মৃত্যুদ-প্রাপ্ত বঙ্গবন্ধুর খুনী বিদেশে পালিয়ে থেকে ষড়যন্ত্র করছে। তাই এবারের জাতীয় শোক দিবসের প্রতিটি অনুষ্ঠানেই সোচ্চার দাবি দ্রুত খুনীদের ফিরিয়ে এনে ফাঁসির রশিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদ- কার্যকরের মাধ্যমে জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করা হোক। শোকের মাসের এগারোতম দিনে আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সহযোগী সংগঠন নানা কর্মসূচী পালন করেছে। আজকের বিষয় : নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের পর বাস মালিক সমিতির পদক্ষেপে আপনি কি সন্তুষ্ট? প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে দশ দফা দাবি স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর জন্য প্রতি বছর মোট বাজেটের ৪-৫ শতাংশ বরাদ্দ, সরকারী চাকরিতে প্রতিবন্ধীদের জন্য কমপক্ষে ৩ শতাংশ কোটাসংরক্ষণ, জাতীয় সংসদে প্রতিবন্ধীদের প্রতিনিধি হিসেবে ২-৩টি সংরক্ষণ, দুস্থ প্রতিবন্ধীদের ভাতা বৃদ্ধি, স্বাস্থ্য-শিক্ষা, চিত্তবিনোদন, সর্বস্তরে প্রবেশগম্যতা নিশ্চিত করাসহ দশ দফা দাবি পেশের মধ্য দিয়ে সমাপ্ত হয়েছে দেশে প্রথম বারের মতো আয়োজিত দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে বিতর্ক প্রতিযোগিতা। শুক্রবার এফডিসিতে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত এই প্রতিযোগিতার গ্র্যান্ড ফিনালে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন দুর্নীতি দমন কমিশনের কমিশনার ড. মোঃ মোজাম্মেল হক খান। ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সঙ্গীত শিল্পী মমতাজ বেগম এমপি। ‘প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর অধিকার ও সুরক্ষায় সরকারের করণীয়’-শীর্ষক চূড়ান্ত লড়াইয়ে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় চ্যাম্পিয়ন, ইডেন মহিলা কলেজ রানার আপ এবং চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয় তৃতীয় স্থান অধিকার করেছে। প্রধান অতিথির বক্তব্যে দুর্নীতি দমন কমিশনের কমিশনার ড. মোঃ মোজাম্মেল হক খান বলেন, সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট গোলের মূল লক্ষ্য- উন্নয়নের ধারায় কাউকে কোনভাবেই পেছনে রেখে যাবে না। প্রতিটি মানুষকেই উন্নয়নের ধারায় সম্পৃক্ত করতে হবে। এজন্য দেশের ১৬ মিলিয়ন প্রতিবন্ধী মানুষকে অবশ্যই উন্নয়নের মূল ধারায় যুক্ত করতে হবে। এই বিরাট জনগোষ্ঠীর উন্নয়নের কৌশলগুলো চিহ্নিত করে তাদের ইচ্ছে ও কর্মশক্তিকে বাড়াতে হবে। এতে করে তারা আরও কাজ করতে উৎসাহী হবে। তাদেরকে উন্নয়নের ধারায় সম্পৃক্ত করতে না পারলে আমাদের সব উন্নয়ন ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে। প্রতিবন্ধীদের উন্নয়নে এই সরকারের অবদান অন্য যে কোন সরকারের তুলনায় অগ্রসর। প্রতিবন্ধী বান্ধব এই সরকারের গৃহীত উদ্যোগগুলোকে আরও এগিয়ে নেয়া প্রয়োজন। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত জনপ্রিয় সঙ্গীত শিল্পী মমতাজ বেগম এমপি বলেন, বর্তমান সরকার প্রতিবন্ধীদের উন্নয়নে অনেক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এসব পদক্ষেপ আগে গ্রহণ করা হলে এখন সমস্যায় পড়তে হতো না, ৪৭ বছরে অনেক এগিয়ে যেতাম। ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, পিছিয়ে পড়া প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর সাংবিধানিক অধিকার বাস্তবায়নসহ তাদের মূল ধারায় সম্পৃক্ত করতে সরকারের প্রচেষ্টা থাকলেও তা পর্যাপ্ত নয়। ২০০৮ সালের মহানগর ইমারত বিধিমালায় প্রতিবন্ধীদের জন্য আলাদা পার্কিং, টয়লেট, র‌্যাম্প তৈরির কথা উল্লেখ করলেও এখনও তা বাস্তবায়ন হয়নি। ২০১৩ সালের প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার ও সুরক্ষা আইনে ভাতা প্রদান, শিক্ষা গ্রহণ ও চিকিৎসা সেবাসহ নানা অধিকারের কথা বলা থাকলেও এর দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই। টাইলস মিস্ত্রির আত্মহত্যা, ভবন থেকে পড়ে মৃত্যু স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীর খিলগাঁওয়ে এক টাইলস মিস্ত্রি আত্মহত্যা করেছে। রামপুরায় ভবন থেকে পড়ে এক নিরাপত্তারক্ষীর মৃত্যুর হয়েছে। শুক্রবার বিকেলে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে দুজনের লাশের ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, শুক্রবার সকালে খিলগাঁও মেরাদিয়া ভূঁইয়াপাড়া এলাকার ২০৪ নম্বর ভবনের নিজ কক্ষ থেকে ইব্রাহিম (৩০) এক ব্যক্তিকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে জরুরী বিভাগে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহতের বাবা হিরণ মিয়া জানান, ছেলে ইব্রাহিম পেশায় টাইলস মিস্ত্রি ছিলেন। ছয়মাস আগে বিয়ে করে। তিনি জানান, শুক্রবার সকাল ৬টার দিকে খিলগাঁও মেরাদিয়া ভূঁইয়াপাড়া এলাকার নিজের রুমে ফ্যানের সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দেন ইব্রাহিম। পরে পরিবারের লোকজন দেখতে পেয়ে তাকে সেখান থেকে নামিয়ে দ্রুত ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়। তবে কি কারণে ইব্রাহিম আত্মহত্যা করেছে তা জানাতে পারেন নি তিনি। এদিকে একই সময় রামপুরা বনশ্রীর জে-ব্লকের ৭ নম্বর রোডের ১ নম্বর নিমার্ণাধীন ভবনের ছয়তলা থেকে পড়ে বিল্লাল হোসেন (২৫) নামে এক নিরাপত্তারক্ষীর মৃত্যু হয়েছে। নির্মাণাধীন ওই ভবনের ঠিকাদার আব্দুর রশিদ জানান, ভবনের নিরাপত্তরক্ষী ছিলেন বিল্লাল। সেখানেই থাকতেন তিনি। তার গ্রামের বাড়ি চাঁদপুর জেলায়। তিনি জানান, শুক্রবার সকাল ৬টার দিকে বিল্লাল হোসেন নির্মাণাধীন ওই নয়তলা ভবনের ছয়তলায় উঠে মোটর দিয়ে দেয়ালে পানি দেয়ার সময় ভবন থেকে পড়ে যান। ভবনের শ্রমিকরা তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢামেক হাসপাতালে নেয়। রাখাইনে চিকিৎসা না পেয়ে ধুকে ধুকে মরছে রোহিঙ্গারা এইচএম এরশাদ, কক্সবাজার ॥ মিয়ানমারের উত্তর রাখাইনে চিকিৎসা সেবা না পেয়ে রোহিঙ্গারা ধুকে ধুকে মরছে বলে জানা গেছে। বিভিন্ন এনজিও সংস্থার চিকিৎসক দল বিশেষ করে এমএসএফ ইতোপূর্বে রাখাইন প্রদেশে উত্তর রাখাইনে মানবিক চিকিৎসা সেবা চালিয়ে আসছিল। রাখাইন রাজ্যে সন্ত্রাসী আটকের নামে শুদ্ধি অভিযান চলাকালে হঠাৎ করে বন্ধ করে দেয়া হয় এমএসএফ এর কার্যক্রম। এমনকি ওই সময় তাদের ৪টি মেডিক্যাল সেন্টারের মধ্যে তিনটি পুড়িয়ে ছারখার করে দেয়া হয়েছে। বর্তমানে রাখাইন প্রদেশের উত্তর রাখাইনে রোহিঙ্গা রোগীদের জন্য কোন ধরনের মানবিক চিকিৎসা সেবা পাওয়া যাচ্ছে না বলে সীমান্তের একাধিক সূত্রে জানা গেছে। আন্তর্জাতিক মানবিক চিকিৎসা সংস্থা মেডিসিন্স স্যান্স ফ্রন্টিয়ার্স-ডক্টরস উইদাউট বর্ডার্স (এমএসএফ) এর মতে স্বাধীন মানবিক সংস্থাগুলো উত্তর রাখাইনের অরক্ষিত ও ঝুঁকিতে থাকা সম্প্রদায়ের কাছে সাহায্য পৌঁছানোর ক্ষেত্রে এখনই যথেষ্ট বাধার সম্মুখীন হচ্ছে। ফলে উদ্ভুত পরিস্থিতিতে প্রয়োজনীয় মানবিক ও চিকিৎসা সেবা প্রদানের অনুপযুক্ত পরিবেশ নিয়ে উদ্বেগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০১৭ সালের ১১ আগস্টে আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা)’র আক্রমণ ও পরবর্তীতে মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর তথাকথিত ক্লিয়ারেন্স অপারেশনের ঠিক দুই সপ্তাহ আগে মিয়ানমার সরকার এমএসএফ-এর উত্তর রাখাইনের মেডিক্যাল কার্যক্রমের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল। এক বছর পার হয়ে যাওয়ার পরও এখনও পর্যন্ত এমএসএফ সেখানে কাজ করতে পারছে না। এমএসএফ-এর মিয়ানমারের অপারেশন ম্যানেজার বেনোয়া দ্য গ্রিজ বলেন, উত্তর রাখাইনে স্বাধীন ও স্বতন্ত্র পরিস্থিতির যাচাই ও মূল্যায়নের অভাবের কারণে এখন পর্যন্ত কেউই পুরোপুরি জানতে পারছে না যে, সেখানকার মানবিক সহায়তা ও স্বাস্থ্যসেবার চাহিদা আসলে কতটুকু। মিয়ানমার সরকারের কাছে এমএসএফ বারবার আবেদন করেছে স্বাস্থ্যসেবা বঞ্চিতদের চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় যাতায়াত ও মেডিক্যাল কার্যক্রমের অনুমতি চেয়ে। কিন্তু প্রশাসনিক ও আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কল্যাণে এটি এখনও সম্ভব হয়ে উঠেনি।
×