ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

মৌসুমভিত্তিক কুটির শিল্পে জীবিকা

প্রকাশিত: ০৬:৫৮, ১১ আগস্ট ২০১৮

 মৌসুমভিত্তিক কুটির শিল্পে জীবিকা

চলছে শ্রাবণ মাস। ঋতুবৈচিত্র্যে এখন বর্ষাকাল। মাঝে মধ্যেই ঝরে অঝোর ধারায় বৃষ্টি। তখন ঘর থেকে বাইরে বের হওয়ার সুযোগ নেই। এ সময় সবচেয়ে বেশি অলস সময় পার করছে গ্রামের খেটে খাওয়া মানুষ। সংসারে বাড়ছে অভাব অনটন। কিন্তু পুরুষরা অলস সময় পার করলেও নারীরা রয়েছে ব্যস্ত। ঘরে গৃহস্থালি কাজের পাশাপাশি বাঁশ ও বেত দিয়ে বিভিন্ন উপকরণ তৈরি করে হচ্ছে বাড়তি আয়। যা কুটির শিল্প নামে পরিচিত। মীরসরাইয়ের বড়দারোগারহাট, আবুতোরাব বাজার, শান্তিরহাট, মিঠাছড়া, করেরহাট, জোরারগঞ্জ, বারইয়ারহাট পৌরসভাসহ বেশ কয়েকটি বাজারে প্রতি মৌসুমভিত্তিক কুটির শিল্পের কারুকার্য সমৃদ্ধ বিভিন্ন ধরনের সামগ্রী বিক্রির হয়ে থাকে। আগে লাভ বেশি হলেও এখন বাঁশ ও বেতের দাম বেড়ে যাওয়ায় কম লাভ হয়। বর্ষায় নারীরা বেশি সময় পার করে বাঁশ ও বেতের উপকরণ তৈরিতে। বিশেষ করে বর্ষায় মাছ ধরা ছাই, ডুলা, হাঁস-মুরগির খাঁচার বেশি প্রয়োজন হয়। উপজেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাঁশ ও বেতের প্রতিটি মাছ ধরার ছাই বিক্রি হচ্ছে আকার ভেদে ১শ’ থেকে ৩শ’ টাকা, হাঁস-মুরগির খাঁচা বিক্রি হচ্ছে ৫০-১০০ টাকা, ঝুড়ি বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৫০ টাকা, কুলা ৫০-৮০ টাকা। উপজেলার বড়দারোগারহাট বাজারে বাঁশের তৈরি খাঁচার বিক্রি করতে আসা নূর উদ্দিন জানান, গত এক সপ্তাহ ধরে টানা বৃষ্টিতে ঘর থেকে বের হতে পারেননি। ফলে আয় রোজগারও হয়নি। কিন্তু স্ত্রী ও দুই মেয়ে মিলে ৭টি ঝুড়ি তৈরি করেছে। ঝুড়িগুলো বিক্রির জন্য বাজারে এনেছেন। ৩টি বিক্রি করেছেন ৩৬০ টাকা। ঝুড়িগুলো বিক্রির করতে না পারলে স্ত্রী, সন্তান নিয়ে অনাহারে থাকতে হতো। মিরসরাইয়ের দুটি পৌরসভা এবং ১৬ ইউনিয়নের বিস্তৃৃত গ্রামাঞ্চলে অনেক মানুষ এ শিল্পের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে। তবে কর্মজীবী মানুষের প্রায় ২০ শতাংশ এ শিল্পের ওপর নির্ভর করে জীবিকা নির্বাহ করছে। উপজেলার হিঙ্গুলী ইউনিয়নের পূর্ব হিঙ্গুলী গ্রামের মুন্নি বেগম জানান, স্বামী মারা যাওয়ার পর তিনি বাঁশ ও বেত দিয়ে বিভিন্ন জিনিস তৈরি করে ৪ সদস্যের সংসারের হাল ধরেছেন। বর্ষায় বাইরে কাজ না থাকায় ঘরে বসে বাঁশ ও বেতের বিভিন্ন উপকরণ তৈরি করে বাড়তি আয় করা যায়। মিরসরাই উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা সাবরিনা লিনা জানান, বর্ষায় গ্রামের পুরুষ সদস্যরা অলস সময় পার করে। তবে নারীরা বাঁশ ও বেতের জিনিস তৈরি করে বাড়তি আয় করতে পারে। বেত ও বাঁশের সংখ্যা কমে যাওয়ায় এসব শিল্পে কিছুটা ভাটা পড়েছে। -রাজিব মজুমদার, মীরসরাই, চট্টগ্রাম থেকে
×