ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মাধ্যমিক শিক্ষা উন্নয়নে ৪ হাজার ৮০ কোটি টাকার ঋণ দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক

প্রকাশিত: ০২:৫০, ১৩ আগস্ট ২০১৮

মাধ্যমিক শিক্ষা উন্নয়নে ৪ হাজার ৮০ কোটি টাকার ঋণ দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ মাধ্যমিক শিক্ষার মান উন্নয়নে ৫১ কোটি মার্কিন ডলার বা স্থানীয় মুদ্রায় ৪ হাজার ৮০ কোটি টাকার ঋণ দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক। এছাড়া গ্লোবাল ফাইনান্সিং ফ্যাসিলিটি (জিএফএফ) অনুদান হিসেবে ১ কোটি ডলার অনুদান সহায়তা দেবে সংস্থাটি। এ লক্ষ্যে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে একটি ঋণ ও অনুদান চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। সোমবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব কাজী শফিকুল আযম এবং বিশ্বব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর রাজশ্রী পারালকার। ট্রান্সফারমিং সেকেন্ডারি এডুকেশন ফর রেজাল্ট অপারেশন (টিএসইআরও) প্রকল্পের আওতায় ৫১ কোটি ডলার ঋণচুক্তি সই হয়েছে। অন্যদিকে গ্লোবাল ফাইন্যান্সিং ফ্যাসিলিটির আওতায় ১ কোটি ডলার অনুদানের চুক্তি সই হয়েছে। চুক্তি সইয়ের পর কাজী শফিকুল আযম বলেন, এ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে মাধ্যমিক শিক্ষার গুনগত মান বৃদ্ধি পাবে। মানব সম্পদ উন্নয়নে প্রকল্পটি বিশেষ ভূমিকা রাখবে। সরকার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে দেশের জনসংখ্যাকে জনশক্তিতে রূপান্তর করার জন্য। সে প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে এ ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। তিনি জানান মানব সম্পদ উন্নয়নে ইতিমধ্যেই বাংলাদেশে অনেক দুর এগিয়েছে। এমনকি ইউএনডিপির হিসাব অনুযায়ী ভারত ও পাকিস্তানকে পেছনে ফেলেছে। তবে মাধ্যমিক শিক্ষার উন্নয়নের জন্য সরকারি ও উন্নয়ন সহযোগীদের অর্থায়নে বিচ্ছিন্নভাবে আর প্রকল্প গ্রহণ করা হবে না। টেকসই ফলাফল অর্জনের লক্ষ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সমন্বিত প্রকল্প হাতে নিচ্ছে। রাজশ্রী পারালকার বলেন, শিক্ষার জন্য এটা একটি সমন্বিত প্রকল্প। আশা করছি ১৩ মিলিয়ন শিক্ষার্থী উপকৃত হবে। শিক্ষার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিগত কয়েক বছরে দারুণ সাফল্য দেখিয়েছে। দেশের উন্নয়নের গতি ধরে রাখতে তরুণ সমাজকে এগিয়ে নিতে হবে। তরুণের সার্বিক শিক্ষার উন্নয়নে বিশ্বব্যাংক সঙ্গী হতে পেরে ধন্য। প্রকল্পের জন্য বিশ্বব্যাংকের ঋণ ছয় বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ ৩৮ বছরে পরিশোধ করতে হবে। এই সহজ শর্তে ঋণের উপর বার্ষিক শূন্য দশমিক ৭৫ হারে সার্ভিস চার্জ দিতে হবে। চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে জানানো হয়, মাধ্যমিক শিক্ষা উন্নয়নের জন্য সরকারি ও উন্নয়ন সহযোগীদের অর্থায়নে অনেকগুলি প্রকল্প বাস্তবায়ন অভিজ্ঞতার প্রেক্ষাপটে সামাজিক খাতের উন্নয়নের জন্য বিচ্ছিন্নভাবে প্রকল্প গ্রহণ না করে অধিকতর কার্যকর ও টেকসই ফলাফল অর্জনের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় একটি পাইলট সমন্বিত কর্মসূচি হিসেবে পাঁচ বছর মেয়াদি সেকেন্ডারি এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম (এসইডিপি) প্রণয়ন করে। এসইডিপি বিষয়ে বিশ্বব্যাংক, এডিবি ও অন্যান্য দাতা সংস্থাও আগ্রহ প্রকাশ করে। মাধ্যমিক শিক্ষা উন্নয়নের জন্য শিক্ষার উন্নততর মান, শিক্ষার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি ও বর্ধিত দক্ষতার বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ, এসইডিপির মূল লক্ষ্য। এসইডিপির প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ১৭ দশমিক ২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এ ধারাবাহিকতায় এসইপি বাস্তবায়নে ট্রান্সফরমিং সেকেন্ডারি এডুকেশন ফর রিসল্টস অপারেশন এর মাধ্যমে সহায়তা করার জন্য বিশ^ব্যাংক এগিয়ে আসে। এসইডিপি বাস্তবায়নে টিএসইআরও এর আওতায় সুনির্দিষ্ট অর্থনৈতিক কোডের মাধ্যমে প্রোগ্রাম ও টেকনিক্যাল এ্যাসিসটেন্স আকারে বিশ^ব্যাংক সহায়তা করবে। এ জন্য তারা ৩৬ কোটি ৬৬ লাখ এসডিআর এর সমতুল্য ৫১ কোটি মার্কিন ডলার বিশ্বব্যাংকের ইন্টারন্যাশনাল ডেভলপমেন্ট এ্যাসোসিয়েশন (আইডিএ) ঋণ এবং জিএফএফ অনুদান বাবদ ১০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার দেবে। টিএসইআরও’এর মূল উদ্দেশ্য হলো, মাধ্যমিক শিক্ষা স্তরের শিক্ষার্থীদের মান এবং মাধ্যমিক শিক্ষা ব্যবস্থার কার্যকারিকতার উন্নয়ন করা। টিএসইআরও চলতি বছরের জানুয়ারি হতে ২০২২ সালে ডিসেম্বরে বাস্তবায়িত হবে।
×