ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

২১ বছরের আগেই চালকের লাইসেন্স!

প্রকাশিত: ০২:২১, ১৪ আগস্ট ২০১৮

২১ বছরের আগেই চালকের লাইসেন্স!

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথিরিটি বিআরটিএ নিয়ম অনুযায়ি ২১ বছরের আগে কোন চালকের লাইসেন্স নয়। পাশাপাশি অপেশাদার চালক পেশাদার হিসেবে গাড়ি চালানো গুরুতর অপরাধ। অপ্রাপ্ত বয়স্ক কোন চালক রাস্তায় গাড়ি নিয়ে নামলে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। কোন বাসের নেই রুট পারমিট। পাওয়া যাচ্ছেনা চালকের লাইসেন্স ও গাড়ির প্রয়োজনীয় কাগজপত্র। গোটা রাজধানী জুড়ে গণপরিবহনের চিত্র ঠিক একই রকম। পুলিশ ও মালিক সমিতির যৌথ অভিযানে এমন চিত্র ওঠে এসেছে। মঙ্গলবার গোটা অভিযানে অপ্রাপ্ত বয়স্ক চালক বেশি পাওয়া গেছে। অপেশাদার চালকের বাস চালানোর কারণে সড়ক দুর্ঘটনা বেশি হচ্ছে বলেও মনে করেন পরিবহন সংশ্লিষ্টরা। বাস্তবতা হলো মালিক সমিতির হুঁশিয়ারির পরও রাজধানীতে চুক্তি ভিক্তিক ও হেলপার দিয়ে বাস চালানো বন্ধ হয়নি। সেইসঙ্গে ফিটনেসবিহীন যানবাহন চলছে দেদার। কাগজপত্র ছাড়াও গাড়ি চালানোর অভিযোগ মিলেছে। মঙ্গলবারও পরিবহন মালিক সমিতি ও পুলিশি তৎপরতা বৃদ্ধি পাওয়ায় রাজধানীতে বাস চলাচল কম ছিল। পুলিশ ও মালিক সমিতির যৌথ অভিযান॥ প্রথমে ট্রাফিক সপ্তাহ সাতদিন থাকলেও পরে তা দশ দিন করা হয়। এদিনেও ট্রাফিক পুলিশের পাশাপাশি বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি চালকদের লাইসেন্স পরীক্ষা করে। মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউতে ভিআইপি পরিবহনের একটি বাস থামিয়ে চালকের লাইসেন্স চেক করেন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ। গাড়িচালক রবিনকে বাস থেকে নামালেন এনায়েত উল্লাহ। পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক সার্জেন্ট ফরহাদ। তাকে লাইসেন্স যাচাই করতে বললেন। সার্জেন্ট লাইসেন্স যাচাই করে দেখলেন এটি অপেশাদার এবং হালকা যান (মোটরসাইকেল, প্রাইভেটকার, অটোরিকশা) চালানোর লাইসেন্স। পরে তাকে মামলা দেন সার্জেন্ট। এনায়েত উল্লাহ বলেন, ‘ওর বয়স ২১ কেমনে হয়? দেখলেই বুঝা যায় ওর ১৫-১৬ বছর। অথচ পেশাদার লাইসেন্স পেতে ২১ বছর হতে হয়। এরা কীভাবে লাইসেন্স পাচ্ছে? কেন ওদের লাইসেন্স দেয়া হচ্ছে?’ জবাবে সার্জেন্ট ফরহাদ বলেন, ‘লাইসেন্স তো বিআরটিএ দেয়।’ ঘণ্টাব্যাপী সড়কে দাঁড়িয়ে এই রুটে চলাচলকারী স্বাধীন, লাব্বায়েক, বিকাশ, ওয়েলকাম ও স্বজন পরিবহনের কয়েকটি বাস থামিয়ে সেগুলোর নিবন্ধন ও চালকের লাইসেন্স যাচাই-বাছাই করতে থাকেন তারা। এ সময় ওয়েলকাম পরিবহনের চালক পলকও অপ্রাপ্ত বয়স্ক হিসেবে শনাক্ত হয়। তবে তার লাইসেন্স আগেই জব্দ করে মামলা দেয়া হয়েছে বলে দাবি করে সে। সার্জেন্টের কাছে মামলার কাগজ দেখায় পলক। কিন্তু অপ্রাপ্ত বয়স্ক এই চালক একটি মামলার কাগজ দেখিয়ে দিব্যি গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছেন। তাহলে সমাধান কোথা থেকে আসবে। চালক জানালেন, মামলার জরিমানা দিলেও সব মওকুফ। প্রশ্ন হলো অপ্রাপ্ত বয়স্ক পলক গাড়ি চালিয়েই যাবে। এর আগে দুপুর সোয়া ১২টায় মানিক মিয়া এভিনিউ পশ্চিম বাসস্ট্যান্ডে অবস্থান নেয় ও অন্যান্য বাস মালিকরা। এছাড়াও রাজধানীর সায়েদাবাদ, মহাখালী বাস টার্মিনাল ও মিরপুরে বাস মালিকরা যানবাহন ও লাইসেন্স যাচাই-বাছাই করেন। এ বিষয়ে খন্দকার এনায়েত উল্লাহ বলেন, দুটা শিশুর মৃত্যুর পর স্কুলের শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করে আমাদের নজর কেড়েছে। আমরা দেখেছি, যে টার্গেট ও চুক্তিভিত্তিক গাড়ি চালানোর কারণে প্রতিযোগিতা ও দুর্ঘটনা ঘটছে। আমরা এসব বন্ধের ঘোষণা দিয়েছি। সকাল থেকে রাস্তায় নেমে কয়েকটি বাস থামিয়ে এগুলোর কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করেছি। আমাদের নজরে এসেছে যে অনেক চালকের ২১ বছর হয়নি, তবুও লাইসেন্স নিয়ে গাড়ি চালাচ্ছে। কেউ কেউ হালকা যানবাহনের লাইসেন্স দিয়ে ভারি যানবাহন চালায়। অনেক চালকের চেহারা দেখে স্পষ্ট বুঝা যায় যে নেশা করে। আমার প্রশ্ন কীভাবে এত অল্প বয়সে তারা লাইসেন্স পাচ্ছে? এদিকে বাস মালিক ও পুলিশের পাশাপাশি মানিক মিয়া এভিনিউয়ে বিআরটিএ’র একটি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হয়। এতে নেতৃত্ব দেন বিআরটিএ’র নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মাজহারুল ইসলাম। দুপুর পর্যন্ত যানবাহন ও চালকের বিরুদ্ধে মোট ২০টি মামলা করা হয়। মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘অধিকাংশ যানবাহনকে রুট পারমিট এবং ফিটনেস ঠিক না থাকায় মামলা দেয়া হয়েছে। আদালতে একজন প্রাইভেট সিএনজি চালককে আটকের নির্দেশ দিয়েছে। ওই চালক প্রাইভেট সিএনজি ভাড়ায় চালনা করেন, তার কাছে লাইসেন্সও নেই। অপ্রাপ্ত বয়স্করা কীভাবে বয়স বাড়িয়ে লাইসেন্স নিচ্ছেন? জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘লাইসেন্স দেয় বিআরটিএ। আমি এখানে আদালত পরিচালনা করছি। আমার পক্ষে এটা বলা সম্ভব নয়। বাস মালিকদের এমন উদ্যোগকে অনেকেই আইওয়াশ বলছেন। সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে খন্দকার এনায়েত উল্লাহ বলেন, এটা আইওয়াশ কি-না ভবিষ্যতে বুঝতে পারবেন। এই সমস্যা রাতারাতি ঠিক না হলেও সড়কে নিরাপদ করেই ঘরে ফিরব। পয়েন্টে পয়েন্টে যানবাহনের কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করলে অনেকেই বাস বের করে না। আসন্ন ঈদুল আজহায় পরিবহন সংকট দেখা দেবে কি-না? সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেন, ঈদের সময় রাস্তায় গাড়ি আটকে কাগজপত্র ও লাইসেন্স যাচাই করা হবে না। বাস মালিকরা টার্মিনালে নিজ নিজ বাসের বিষয়ে নিজেদের পদক্ষেপ নেয়ার নির্দেশ দেয়া হবে। প্রয়াত মেয়র আনিসুল হক বাস শ্রমিকদের বেতনভুক্ত ও সব বাসকে একটি কোম্পানির আওতায় নেয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন। এটির অবস্থা কি জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাস শ্রমিকদের বেতনভুক্ত করার জন্য আমরা সমিতির পক্ষ থেকে তৎকালীন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আনিসুল হক, বাস মালিক, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছি। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের সমাপ্ত পর্যায়ে মেয়রের মৃত্যু হয়। এর দীর্ঘদিন পর প্রধানমন্ত্রী ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের আবারও এই কার্যক্রম বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছেন। সব বাসকে এক কোম্পানিতে আনার কাজ অনেকাংশে এগিয়েছে। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে বেশি দিন লাগবে না বলে ধারণা করছি। তবে সম্প্রতি একটি অনুষ্ঠানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন বলেছেন, নতুন বাস নামানোর উদ্যোগের দায়িত্ব তাকে দেয়া হয়েছে। প্রকল্পটি এখন দ্রুতই সামনের দিকে অগ্রসর হবে। এজন্য যা যা করণীয় সরকিছু করা হচ্ছে। আমরা আশাবাদি প্রকল্পটি বাস্তবায়ন সম্পন্ন হলে রাজধানীর পরিবহন সেক্টরে একটি পরিবর্তন আসবেই। গত ২৯ জুলাই রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের অদূরে বিমানবন্দর সড়কে বাসচাপায় নিহত হয় শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী। এরপর নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনে নামে শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের টানা আন্দোলনে ঢাকা কার্যত অচল হয়ে পড়ে। দাবি পূরণের আশ্বাসে শিক্ষার্থীরা ঘরে ফেরার পর থেকে সড়কে নৈরাজ্য ঠেকাতে নানা ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। আজ থেকে ট্রেনের ফিরতি টিকেট ॥ পবিত্র ঈদুল আজহা পরবর্তী ট্রেনের অগ্রিম ফিরতি টিকেট বিক্রি শুরু হচ্ছে আজ বুধবার থেকে। এর আগে গত ৮ আগস্ট শুরু হয়েছিল ঈদের অগ্রিম টিকেট বিক্রি। ফিরতি টিকেট বিক্রি বুধবার শুরু হয়ে চলবে ১৯ আগস্ট পর্যন্ত। রাজশাহী, খুলনা, রংপুর, দিনাজপুর ও লালমনিহাট স্টেশনে সকাল ৮টা থেকে বিশেষ ব্যবস্থাপনায় এ টিকেট দেয়া হবে। বুধবার পাওয়া যাবে ২৪ আগস্টের টিকেট। একইভাবে ১৬, ১৭, ১৮, ১৯ আগস্ট যথাক্রমে পাওয়া যাবে ২৫, ২৬, ২৭, ২৮ আগস্টের টিকেট। বরাবরের মতো এবারও মোট টিকিটের ৬৫ শতাংশ কাউন্টার থেকে দেয়া হবে। বাকি ৩৫ শতাংশের মধ্যে ২৫ শতাংশ অনলাইন ও মোবাইলে। ৫ শতাংশ ভিআইপি এবং রেল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য বরাদ্দ রয়েছে ৫ শতাংশ। ঈদ যাত্রায় ৯ জোড়া বিশেষ ট্রেন ॥ এবারে ঈদ যাত্রায় ৯ জোড়া বিশেষ ট্রেন চলাচল করবে। এরমধ্যে রয়েছে- দেওয়ানগঞ্জ স্পেশাল : ঢাকা-দেওয়ানগঞ্জ- ঢাকা (ঈদের আগে ১৮, ১৯, ২০ ও ২১ আগস্ট এ চারদিন এবং পরে ২৩ আগস্ট হতে ২৯ আগস্ট সাতদিন চলবে)। চাঁদপুর স্পেশাল-১: চট্টগ্রাম-চাঁদপুর-চট্টগ্রাম (ঈদের আগে ১৮, ১৯, ২০ ও ২১ আগস্ট চারদিন এবং ঈদের পরে ২৪ আগস্ট হতে ৩০ আগস্ট সাতদিন চলবে)। চাঁদপুর স্পেশাল ২: চট্টগ্রাম-চাঁদপুর-চট্টগ্রাম (ঈদের আগে ১৮, ১৯, ২০ ও ২১ আগস্ট চারদিন এবং ঈদের পরে ২৪ আগস্ট হতে ৩০ আগস্ট সাতদিন চলবে)। রাজশাহী স্পেশাল : রাজশাহী-ঢাকা-রাজশাহী (ঈদের আগে ১৮, ১৯ ও ২০ আগস্ট তিনদিন এবং ঈদের পরে ২৪ আগস্ট থেকে ৩০ আগস্ট সাতদিন চলাচল করবে)। দিনাজপুর স্পেশাল: দিনাজপুর-ঢাকা-দিনাজপুর (ঈদের আগে ১৮, ১৯ ও ২০ আগস্ট তিনদিন এবং ঈদের পরে ২৪ আগস্ট হতে সাতদিন চলাচল করবে)। লালমনি স্পেশাল : ঢাকা-লালমনিরহাট-ঢাকা (ঈদের আগে ১৮, ১৯, ২০ ও ২১ আগস্ট চারদিন এবং ঈদের পরে ২৪ আগস্ট হতে ৩০ আগস্ট সাতদিন চলবে)। খুলনা এক্সপ্রেস : খুলনা-ঢাকা-খুলনা (ঈদের আগে ২১ আগস্ট একদিন চলবে)। শোলাকিয়া স্পেশাল-১ : ভৈরব-কিশোরগঞ্জ-ভৈরব রুটে ঈদের দিন চলাচল করবে। শোলাকিয়া স্পেশাল-২ : ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ-ময়মনসিংহ রুটে ঈদের দিন চলবে। এ ছাড়া যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচলের সুবিধার্থে ঈদের তিনদিন আগে থেকে কনটেইনার ও জ্বালানিবাহী ট্রেন ছাড়া কোনো পণ্যবাহি ট্রেন চলাচল করবে না। ঈদের দিন বিশেষ ব্যবস্থাপনায় কিছু মেইল এক্সপ্রেস চলাচল করবে। ঈদের দিন আন্তঃনগর কোনো ট্রেন চলাচল করবে না। তবে ঈদের পাঁচদিন আগে (১৮ আগস্ট) থেকে ঈদের আগের দিন পর্যন্ত সব আন্তনগর ট্রেন সাপ্তাহিক বন্ধের দিনও চলাচল করবে। রেলওয়ে সূত্র জানায়, সুষ্ঠু ও নিরাপদে ট্রেন চলাচলের সুবিধার্থে রেলওয়ে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সব ধরনের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। ২১ ও ২২ আগস্ট মৈত্রী এক্সপ্রেস এবং ২৩ আগস্টে বন্ধন এক্সপ্রেস চলাচল করবে না। ট্রাফিক সপ্তাহের সফলতা ॥ গত ৫ আগস্ট থেকে শুরু হওয়া ট্রাফিক সপ্তাহে সোমবার ৯তম দিন। অভিযানে ফিটনেস, ড্রাইভিং লাইসেন্স ইত্যাদি প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ব্যতীত এবং অন্যান্য আইন অমান্যকারী যানবাহনকে আইনের আওতায় এনে আটক ও জরিমানা করা হয়েছে। ১৩ আগস্ট পর্যন্ত দেশের ৬টি মেট্রোপলিটন এলাকা, ৮টি রেঞ্জ এবং হাইওয়ে রেঞ্জে মোট ১ লাখ ৬১ হাজার ৭৮০ টি যানবাহনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে। এর মধ্যে ৬ হাজার ৬৮৩ জন চালকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে। এ সময়ে ৬ কোটি ২৯ লাখ ৯৩ হাজার ৯৭৯ টাকা বিভিন্ন আইনগত অনিয়মের কারণে জরিমানা আদায় করা হয়। এছাড়া আইনগত ব্যবস্থা হিসেবে ৪ হাজার ৪৫০টি যানবাহন আটক করা হয়েছে। নবম দিনে রাজধানীতে আট হাজার ৩৭৬টি মামলা ও ৫৩ লাখ ৭৩ হাজার ১৫০টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
×