ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বাউফলে অস্ত্র আইনের মামলায় ফাঁসিয়ে দেয়া হলো ৬ শিক্ষার্থীকে

প্রকাশিত: ০২:৫২, ১৪ আগস্ট ২০১৮

বাউফলে অস্ত্র আইনের মামলায় ফাঁসিয়ে দেয়া হলো ৬ শিক্ষার্থীকে

নিজস্ব সংবাদদাতা, বাউফল॥ পটুয়াখালী সরকারী কলেজ ও পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ৬ শিক্ষার্থীকে অস্ত্র আইনের মামলায় ফাঁসিয়ে দেয়া হয়েছে। পুলিশ জানায়, ওইসব শিক্ষার্থীরা বাউফলের কাছিপাড়া বাজারের অপরাধ কর্মকান্ড চালাতে এসে জনতার হাতে আটক হয়েছেন। তাদের কাছ থেকে ১টি খেলনা পিস্তল, ১টি চাপাতি ও ১টি ফল কাটার চাকু উদ্ধার করা হয়েছে। তবে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন তারা কালিশুরী এলাকায় এক আত্বিয়ের বাড়ি বেড়াতে এসেছিলেন। তাদের কাছে কোন ধরণের অস্ত্র পাওয়া যায়নি। জানা গেছে, পটুয়াখালী সরকারী কলেজের অর্নাস দ্বিতীয় বর্ষের (অর্থনীতি) ছাত্র আল আমিন (২০), অর্নাস ফাইনাল ইয়ারের (রাষ্ট্রবিজ্ঞান) ছাত্র রাজিব দেবনাথ (২৭), অর্নাস প্রথম বর্ষের ( গনিত) ছাত্র মিজানুর রহমান (২১), পটুয়াখালী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র মেহেদী হাসান তুহিন (২০) একই ইনস্টিটিউটের ছাত্রজোবায়ের হোসেন(২০) ও বরিশাল ইসলামিয়া কলেজের ছাত্র রাকিবুল ইসলাম (১৯) ঘটনার দিন সোমবার বিকালে পটুয়াখালীর সবুজবাগ থেকে ইমামুল হোসেন মিলন (৪৩) নামের এক ব্যাক্তির সাথে বেড়াতে তার শ্বশুর বাড়ি বাউফলের কালিশুরী দলাপাড়া গ্রামে বেড়াতে আসেন। মিলন ৭-৮মাস আগে ওই গ্রামের আবদুল জলিল মল্লিকের মেয়ে আক্তার জাহান মুন্নীকে বিয়ে করে। ওই সময় বিয়ে অনুষ্ঠানে এদের মধ্যে কয়েক শিক্ষার্থী এসেছিল। শিক্ষার্থীরা জানান, ৪টি ভাড়ায় চালিত মটর সাইকেল যোগে তারা জন পটুয়াখালীর লোহালিয়া খেয়াঘাট থেকে বাউফলের বগা বন্দরে আসেন। সেখান থেকে বিকলা তিনটার দিকে ইমামুল হোসেন মিলনের সাথে তার শ্বশুর বাড়ি যান। ওই বাড়িতে যাওয়ার পর মিলনের সাথে তার স্ত্রী মুন্নীর ঝগড়া ঝাটি শুরু হয়। এসময় মুন্নী ডাকাত ডাকাত বলে ডাক চিৎকার করলে তারা ভয়ে পালিয়ে গিয়ে পাশ্ববর্তী কাছিপাড়া বাজারে আশ্রয় নেন। সেখানে স্থানীয় লোকজন তাদেরকে আটক করে। পরে খবর পেয়ে রাত সারে ৮টার দিকে পুলিশ গিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করে। আলআমিন নামের এক শিক্ষার্থী জানান, স্কুল ব্যাগটি তাদের ছিলনা। ব্যাগটি ছিল ইমামুল ইসলাম মিলনের। ওই ব্যাগে কি ছিল তারা জানেননা। ব্যাগ থেকে উদ্ধারকৃত খেলনা পিস্তল ও ফল কাটার ছুড়ি রেখে তাদেরকে ফাঁসানো হয়েছে। তারা পড়া লেখার পাশাপাশি সবুজ বাগ এলাকায় ইয়াং পেগাসার্স নামের একটি ক্লাবের সাথে জড়িত। এটি আর্থ সামাজিক, বিজ্ঞান চর্চা ও ব্লাড ডোনেশন ক্লাব হিসাবে পরিচিত । স্থানীয় একটি সূত্র জানায়, জাহান মুন্নী ছিল ইমামুল হোসেনের তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী। ২০১৭ সালের ২ ডিসেম্বর তাদের বিয়ে হয় এবং চলতি বছরের ২৯ জুলাই তাদের মধ্যে তালক হয়। মুন্নির বাবা আবদুল জলিল মল্লিক অভিযোগ করে বলেন,‘তাঁর মেয়েকে জোড়পূর্বক অপহরনের চেষ্টা করে । এ ঘটনায় তিনি ঘটনার দিন সোমবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে বাউফল থানায় মামলা করতে গিয়ে জানতে পারেন, পুলিশ বাদি হয়ে ৬ জনকে আসামী করে অস্ত্র আইনে একটি মামলা করেছেন। তবে এই মামলায় ইমামুল হোসেন মিলনকে আসামী করা হয়নি। এ ব্যাপারে বাউফর থানার ওসি মোঃ মনিরুল ইসলাম বলেন, অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে ১৮৭৮ সালের আমর্স এ্যাক্টের সংশোধনী ২০০২ এর ১৯-এ ধারায় পুলিশ বাদি হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন। (মামলা নম্বর ১২ তারিখ-১৩/৮/১৮) । তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে। গ্রেফতার কৃত ৬ শিক্ষার্থীকে আজ মঙ্গলবার দুপুরে পটুয়াখালী কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।
×