স্টাফ রিপোর্টার ॥ জাতির জনক, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৩তম শাহাদাৎ বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বুধবার সারাদেশের মসজিদ, মন্দির, গীর্জা ও প্যাগোডায় বিশেষ দোয়া প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এসময় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে স্বাধীনতার মহানায়ক, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ নিহত সকলের আত্মার শান্তি এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দীর্ঘায়ু কামনা করা হয়।
বুধবার সারাদেশে মসজিদে মসজিদে বিশেষ মিলাদ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। মসজিদ ছাড়াও দিবসটি উপলক্ষে গৃহিত বিভিন্ন কর্মসূচী পালনকালেও বিশেষ দোয়া প্রার্থনা করা হয়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রূহের মাগফিরাত কামনা করে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে কুরআনখানি, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। মোনাজাতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তার পরিবারের শাহাদাতবরণকারী সব সদস্যের রূহের মাগফিরাত কামনা করে মহান আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা করা হয়। এসময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘ নেক হায়াত কামনা করা হয়। এছাড়া দেশ, জাতি ও মুসলিম উম্মাহর শান্তি, সমৃদ্ধি ও কল্যাণ কামনাও করা হয়।
আর বুধবার সকাল সাড়ে ৭টায় বনানী কবরস্থানে ১৫ আগস্টের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এর শ্রদ্ধা নিবেদনের পর বনানীতে মাজার জিয়ারত, ফাতেহা পাঠ, মোনাজাত ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করে আওয়ামী লীগ। সকাল ১০টায় গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন, ফাতেহা পাঠ, মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে অংশ নেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ দলটির শীর্ষ নেতারা। বাদ জোহর দেশের সকল মসজিদে দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। বাদ আছর বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এতে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাও অংশ নেন। বাদ জোহর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মসজিদুল জামিয়াসহ প্রত্যেক হল ও আবাসিক এলাকার মসজিদে শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া মাহফিল এবং বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার অন্য ধর্মীয় উপাসনালয়ে বিশেষ প্রার্থনার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। এদিকে সমাজসেবা অধিদফতরের মহাপরিচালক গাজী মোহাম্মদ নূরুল কবির জনকণ্ঠকে জানান, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার সঙ্গে শাহাদতবরণকারী সব শহীদের জন্য ১০ হাজার ১৫২ বার পবিত্র কোরআন খতম সম্পন্ন করা হয়েছে।
গীর্জায় গীর্জায় বিশেষ প্রার্থনা
বুধবার গীর্জায় গীর্জায় অনুষ্ঠিত হয়েছে বিশেষ প্রার্থনা সভা। বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের সদস্যসহ অন্যান্য যারা ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট শহীদ হয়েছিলেন তাঁদের আত্মার কল্যাণ কামনা করে এই প্রার্থনা সভার আয়োজন করা হয়। রাজধানীতে প্রধান প্রার্থনা সভা বাংলাদেশ খ্রীষ্টান এসোসিয়েশন ও খ্রিস্টান ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের যৌথ উদ্যোগে তেজগাঁও হলি রোজারি চার্চে অনুষ্ঠিত হয়। খ্রিস্টযাগে পৌরহিত্য করেন তেজগাঁও ধর্মপল্লীর পালপুরোহিত ফাদার কমল কোড়াইয়া।
খ্রিস্টযাগের পূর্বে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ খ্রীষ্টান এসোসিয়েশনের সভাপতি ও খ্রিস্টান ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি এর সচিব নির্মল রোজারিও। প্রার্থনা সভা শেষে অনুষ্ঠিত হয় সংক্ষিপ্ত বক্তব্য অনুষ্ঠান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন এসোসিয়েশনের মহাসচিব হেমন্ত আই, কোড়াইয়া, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য উপাধ্যক্ষ রেমন্ড আরেং, খ্রিস্টান ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি হিউবার্ট গমেজ, জেমস সুব্রত হাজরা, বাংলাদেশ খ্রীষ্টান এসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা জোনাস গমেজ, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক থিউফিল রোজারিও, শিক্ষা সম্পাদক ডানিয়েল সিকদার, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক জন অরুনেশ বাড়ৈ, ময়মনসিংহ জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও এসোসিয়েশনের সহ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক নিখিল মানখিন, নির্বাহী সদস্য ভিক্টর রে’সহ ব্রতধারি-ব্রতধারিনী ও বিপুল সংখ্যক খ্রিস্টভক্ত উপস্থিত ছিলেন। দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন এতিমখানা ও দাতব্য প্রতিষ্ঠানে দুস্থদের জন্য বিশেষ খাবার পরিবেশনের আয়োজন করা হয়।
মন্দিরে মন্দিরে বিশেষ প্রার্থনা
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৩তম শাহাদৎ বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দিরে বিশেষ প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার সকাল ১১টায় এই প্রার্থনা সভার আয়োজন হয়। প্রার্থনা সভায় বিপুল সংখ্যক সনাতন ধর্মালম্বী অংশ নেন। এসময় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে স্বাধীনতার মহানায়ক, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ নিহত সকলের আত্মার শান্তি কামনা করা হয় ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দীর্ঘায়ু কামনা করা হয়। বিশেষ প্রার্থনা পাঠ করান সিদ্ধেশ্বরী মন্দিরের পুরোহিত বাবু পরিতোষ। প্রার্থনা সভায় উপস্থিত ছিলেন, সাবেক রাষ্ট্রদূত ড. নিম চন্দ্র ভৌমিক, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাবু মিলন কান্তি দত্ত, সাধারন সম্পাদক বাবু নির্মল চ্যাটার্জি, যুব মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক অপু উকিল, মহানগর পূজা উদযাপনের সভাপতি শৈলেন মজুমদার, বাংলাদেশ পূজা উদযাপনের সাবেক সভাপতি স্বপন সাহা, সাবেক সাধারন সম্পাদক এ্যাড. তাপস কুমার পাল, সাবেক সভাপতি ডি.এন চ্যাটার্জি, সাবেক সাধারন সম্পাদক শ্যামল কুমার রায়, সাবেক ছাত্রনেতা বলরাম পোদ্দার, আওয়ামী যুব লীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক সুব্রত কুমার পাল, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সাংস্কৃতিক বিষয়ক উপ কমিটির সদস্য সুব্রত চন্দ, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জয়দেব নন্দী, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সাংস্কৃতিক উপ কমিটির সদস্য সৌমেন বসু, মহানগর তাতী লীগের শিল্প ও বানিজ্য বিয়ষক সম্পাদক সুদীপ হালদার প্রমুখ।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: