যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যের ৩ শতাধিক যাজক শিশুদের ওপর যৌন নিপীড়ন চালিয়েছেন। মঙ্গলবার প্রকাশিত স্টেট সুপ্রীমকোর্টের গ্র্যান্ড জুরির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কয়েক দশক ধরে এক হাজারের বেশি শিশু যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছে। গার্ডিয়ান।
প্রায় ৯শ’ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনটি মার্কিন ক্যাথলিক চার্চগুলোতে বিভিন্ন সময় সংঘটিত শিশুদের ওপর যৌন নির্যাতন নিয়ে করা সবচেয়ে দীর্ঘ তদন্ত অনুসন্ধান। এগুলো বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী চার্চগুলোর অন্যতম। সেখানে সংঘটিত অপকর্মের করুণ চিত্র উঠে এসেছে প্রতিবেদনটিতে। ক্যাথলিক চার্চে যৌন নিপীড়নের খবর এর আগেও প্রকাশিত হয়েছে। তবে সেটি এমন মাত্রায় নয়। এর আগে বিচ্ছিন্নভাবে পাওয়া গেলেও এবার এ সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য পাওয়া গেছে। ঘটনাগুলো বাস্তব। এ প্রতিবেদনে এমন একজন যাজকের কথা উঠেছে যিনি একটি শিশুকে গর্ভবতী করে পরে তাকে গর্ভপাতে সহায়তা করেন। শিশুটি এ সময়ে চার্চ প্রাঙ্গণেই ছিল। আরেকজন যাজকের কথা জানা গেছে যিনি অন্তত ১৫ জন বালকের সঙ্গে মুখ ও পায়ু সঙ্গম করেছেন। নিপীড়নের শিকার হওয়া বালকদের একজনের বয়স ৭ বছর ছিল। একজন যাজকের বাড়ি থেকে নিপীড়নের শিকার মেয়েদের প্রস্রাব ও রক্ত উদ্ধার করা হয়েছে। সব ধরনের যৌন নির্যাতনের ঘটনার বিবরণ এতে রয়েছে। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে তাদের বেশিরভাগ এত বৃদ্ধ যে তার বিচার করা সম্ভব নয়। দুই যাজকের বিরুদ্ধে অবশ্য অভিযোগ আনা হয়েছে। তারা ২০১০ সাল থেকে কয়েক বছর দুটি শিশুর ওপর নিয়মিত যৌন নিপীড়ন করেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দুজন যাজক অভিযুক্ত হলেও চার্চগুলোতে যৌন নিপীড়ন বন্ধ হয়নি। যে দুজনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে তারা আলাদা চার্চের। ২৩ জন জুরির দুই বছর ধরে ছয় ভিন্ন চার্চ এলাকা থেকে সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়। অনেক যাজককে জুরি বোর্ডের সামনে ডাকা হয়েছিল। তারা অপরাধের কথা স্বীকারও করেছেন। ঘটনার শিকার শিশুদের সঙ্গেও তারা কথা বলেছেন। বেশিরভাগই ছেলে শিশু। নিপীড়নের শিকার অনেক শিশু আবার জুরি বোর্ডের সামনে হাজির হয়নি। সার্ভাইভর্স নেটওয়ার্ক অব দোজ এ্যাবইউজড বাই ফোর্স (স্প্যাপ) নামে একটি মার্কিন অধিকার গ্রুপ এ বিষয়ে সরকারের জোরালো ভূমিকা আশা করেছে। গ্রুপটির প্রধান টিম লেনন বলছেন, সুশীল সমাজ এখন এ বিষয়ে সচেতন হচ্ছে। তারা প্রতিবেদনকে সঠিক বলে গ্রহণ করছে।