ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সারোয়ার জাহান সাগর

ঈদ করতে দেশের বাইরে

প্রকাশিত: ০৩:৪৮, ১৬ আগস্ট ২০১৮

ঈদ করতে দেশের বাইরে

আজকাল ঈদ উদযাপনের রীতিনীতিতে পরিবর্তন এসেছে। বর্তমানে ঈদ উদযাপন ঈদ শপিংকে কেন্দ্র করে। এখন আর জামা বানানোর জন্য দর্জিবাড়ি ছুটতে হয় না। রংবেরঙের রেডিমেড পোশাকের পসরা সাজিয়ে বসে ফ্যাশন হাউজগুলো। এখন ঈদ শুভেচ্ছা জানানো হয় সম্পূর্ণ ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে, ফোন কল বা মেসেজের মাধ্যমে। অনেকে সে কষ্টটাও করতে চান না। ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েই শুভেচ্ছা জানানোর কাজটা সেরে ফেলেন। অর্থনৈতিকভাবে স্বচ্ছল বহু পরিবারই এখন আর ঈদ করতে গ্রামের বাড়ি যান না। তাদের প্রথম পছন্দ এখন বিদেশের বিভিন্ন ট্যুরিস্ট স্পট। নিজের বাস্তুভিটায় দুটো দিন থাকার বদলে পৃথিবী ঘুরে দেখতেই এখন বেশি আগ্রহ পান তারা। যারা ঢাকায় থাকেন তারাও আজকাল আর আতœীয়-পরিজনদের বাড়িতে তেমন বেড়াতে যান না। ফ্যান্টাসি কিংডম, হাতিরঝিল কিংবা চিড়িয়াখানাই তাদের পছন্দের গন্তব্য। মহল্লা সংস্কৃতি উঠে যাওয়ায় ঈদের আগের রাতে হাই ভলিউমে গানও আর শোনা যায় না। এছাড়া প্রায় প্রতি গ্রামেই এখন ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। ঈদ জামাতকে ঘিরে বিভিন্ন গ্রামের মানুষের মিলনমেলার ঘটনাও এখন অতীত। দেশে ক্যাবল লাইন আসার পর মধ্যবিত্তের ড্রয়িং রুম থেকে বিটিভি তার একচ্ছত্র আধিপত্য হারিয়েছে। আনন্দমেলা, ছায়াছন্দ আর বিশেষ নাটকের জন্য অপেক্ষা এখন আর কেউ করে না। দেশের বিভিন্ন স্যাটেলাইট চ্যানেলেই এখন মানুষ ঈদ বিনোদন খুঁজে নেয়; অনেকে তো আবার হিন্দি, ইংরেজি চ্যানেলেই বুদ হয়ে থাকেন। আলাদাভাবে ঈদের অনুষ্ঠান দেখার বিষয়টি তাদের মধ্যে কাজ করে না। খাদ্য তালিকায় এখনো আগের মতো ঐতিহ্যবাহী পোলাও, কোরমার আর সেমাইয়ের চল রয়েছে। কিন্তু তার সাথে যুক্ত হয়েছে নানান দেশের নানান পদ। কাস্টার্ড, চিলি বিফ, স্টেকের মতো পশ্চিমা খাবারও জায়গা করে নিয়েছে বাঙালির ঈদের রেসিপিতে। ঈদের চাঁদ দেখার জন্য এখন আর কেউ মাঠে কিংবা ছাদে ছুটে যায় না। টিভির ব্রেকিং নিউজ কিংবা ফেসবুকের মাধ্যমেই চাঁদ ওঠার খবর পেতে সবাই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে। এত পরিবর্তনের পরও ঈদ এখনও বাঙ্গালির জীবনে আসে সৌহার্দ্য, সম্প্রীতি ও আনন্দের বার্তা নিয়ে। গণ বিশ্ববিদ্যালয়, সাভার থেকে
×