ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

দুঃশাসন ও স্বৈরশাসনের যাতাকলে মানুষের মনে ঈদের আনন্দ নেই ॥ রিজভী

প্রকাশিত: ২১:৪৫, ২০ আগস্ট ২০১৮

দুঃশাসন ও স্বৈরশাসনের যাতাকলে মানুষের মনে ঈদের আনন্দ নেই ॥ রিজভী

অনলাইন রিপোর্টার ॥ বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবীর রিজভী আহমেদ বলেছেন, ‘আর একদিন পরেই ঈদুল আজহা। ঈদ মানেই উৎসব, ঈদ মানেই আনন্দ। কিন্তু মানুষের মনে ঈদের কোনো আনন্দ নেই। দেশে যে ভয়াবহ দুঃশাসন ও স্বৈরশাসন চলছে এর যাতাকলে পিষ্ট হয়ে গোটা জাতি আজ আতঙ্কিত উৎকণ্ঠিত।’ সোমবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনস্থ বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। রিজভী বলেন, অবৈধ সরকারের দুর্নীতি, টাকা পাচার, লুটপাট, চাঁদাবজি, দখলবাজিতে মানুষ অতিষ্ট। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে মানুষ দিশেহারা। বাড়িভাড়া বেড়েছে, গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বেড়েছে দফায় দফায়। দৈনন্দিন খরচ মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে মধ্যবিত্ত ও নিম্ন-মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষ। এরই মাঝে যোগ হয়েছে মামলা হামলাসহ নানা আতঙ্ক।’ তিনি বলেন, ‘শুধু কিছু সংখ্যক আওয়ামীপন্থী লোক হয়তো তাদের নিজেদের নিরাপদ মনে করতে পারে, কিন্তু বিএনপিসহ বেশিরভাগ রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, দেশের সাধারণ মানুষ, শিক্ষক, সাংবাদিক, পেশাজীবী, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধরাণ শিক্ষার্থী, কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীরা এখন অবৈধ সরকারের নানা বাহিনী দ্বারা আক্রান্ত, ক্ষতবিক্ষত। এতদিন শুধু বিএনপি ও বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা, হামলা, জেল-জুলুম, অপহরণ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে তুলে নেয়া, গুম, খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যাসহ নির্যাতন-নিপীড়নের খড়্গ চলছিল। এখন সাধারণ মানুষও এর থেকে রেহাই পাচ্ছে না ’ বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা ন্যায় সঙ্গত ও যৌক্তিক আন্দোলনে অংশ নিয়ে ন্যায্য দাবিতে প্রতিবাদ করে এখন তারা কারাবন্দি। যদিও গতকাল কিছু শিক্ষার্থী জামিন পেয়েছে কিন্তু এখনও বহু নিরপরাধ শিক্ষার্থী কারাগারে বন্দী। তাদের মাথার ওপর মিথ্যা মামলার খড়্গ ঝুলছে। কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতাকর্মীদের জামিন মেলেনি এখনও। তাদের এবং তাদের অভিভাবকদের আহাজারি আর কান্নায় বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে। অভিভাবকরা এক থানা থেকে আরেক থানা, এক আদালত থেকে আরেক আদলতে ছুটাছুটি করেও জামিন করাতে পারেননি তাদের প্রিয় সন্তানদের। অজ্ঞাত নামা মামলার নামে হাজার হাজার জনকে আসামি করে মামলা দায়েরের ঘটনায় সারাদেশের অভিভাকরা অজানা আতঙ্কে আছেন।’ রিজভী বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের ন্যায় সঙ্গত আন্দোলন কি অপরাধ? অন্যায়ের বিরুদ্ধে মতপ্রকাশ করা কি অপরাধ? বেআইনি অস্ত্রে সজ্জিত হেলমেটধারী সরকারি দলের ক্যাডাররা ধাওয়া করে শিক্ষার্থীদের ওপর আক্রমণ করে রক্তাক্ত করা কি ন্যায় সঙ্গত? আওয়ামী ক্যাডারদের হাতে আইন তুলে নেয়া কি বৈধ কাজ? তাদের নামে মামলা হলো না কেন! তারা কেন গ্রেফতার হলো না! তাদের রিমান্ডে নেয়া হলো না কেন! তারা কেন এখন কারাগারে নেই! মনে হয় সরকারি দলের ক্যাডারদের প্রকাশ্যে সহিংস সন্ত্রাসের জন্য লাইসেন্স দেয়া হয়েছে । সে কারণে তারা আইনের ঊর্ধ্বে। সেজন্যেই প্রধানমন্ত্রী নিজ দলীয় ক্যাডারদের দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন। অথচ তিনি আহত কোমলমতি শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকদের দেখতে যাওয়ার সময় পাননি!’ তিনি খালেদা জিয়াসহ সকল রাজবন্দি, নিরাপদ সড়ক আন্দোলন ও কোটা সংস্কার আন্দোলনে আটককৃত সকল শিক্ষার্থী এবং ড. শহিদুল আলমসহ সকল শিল্পী কুশলীদের মুক্তি দাবি করেন। সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, সহ দফতর সম্পাদক মো. মুনির হোসেন, সহ প্রচার সম্পাদক আসাদুল করিম শাহীন, নির্বাহী কমিটির সদস্য আমিনুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
×