ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

দূরপাল্লার পরিবহনসহ সর্বত্র অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের হিড়িক

প্রকাশিত: ০১:৫১, ২০ আগস্ট ২০১৮

দূরপাল্লার পরিবহনসহ সর্বত্র অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের হিড়িক

নিজস্ব সংবাদদাতা, মাদারীপুর ॥ ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের স্রোতে দেখা দেখে কাঁঠালবাড়ি-শিমুলিয়া নৌরুটে। ভোরের আলো ফুটতে না ফুটতেই দূরপাল্লার পরিবহন, লোকাল বাস, লঞ্চ, স্পীডবোট এবং ফেরিতে যাত্রী ও যানবাহনের চাপ চোখে পড়ার মত। প্রতিটি পরিবহন, লঞ্চ ও স্পীডবোটে ধারণ ক্ষমতার চেয়ে অতিরিক্ত যাত্রী বহন করতে দেখা গেছে। এই সুযোগে বাড়তি ভাড়া আদায় করছেন অসাধুরা চালক ও মালিকরা। এছাড়া প্রাইভেট গাড়ীগুলোতেও একই চিত্র। ভিতরে জায়গা না পেয়ে অনেকেই বাসের ছাঁদে উঠে নিজ গন্তব্যে যাত্রা শুরু করেছেন। যাত্রীদের জিম্মি করে নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে দেড়গুণ-দুইগুণ ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। একাধিক সূত্র জানা গেছে, অতিরিক্ত যানবাহনের চাপের কারণে কাঁঠালবাড়ি এলাকায় দীর্ঘ গাড়ির সারি দেখা দেখা গেছে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় নজরদারি বাড়িয়ে দিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের একাধিক টিম কাজ করছে। এই নৌরুটে ১৭টি ফেরি, ৮৭টি লঞ্চ ও দেড় শতাধিক স্পীডবোট চলাচল করেছে। ঈদে যাত্রীদের নিরাপত্তায় সিসি টিভি ক্যামেরার পাশাপাশি ৩শ’র বেশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করছে। যাত্রীদের চাপে বাড়তি আদায়ে শুরু হয়েছে মহোৎসব। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি পোহাচ্ছেন মাইক্রোবাসের চলাচলকারী যাত্রীরা। ফিটনেসবিহীন মাইক্রোবাসে গাদাগাদি করে যাত্রী উঠাচ্ছেন মালিক ও চালকরা। ভাড়াও নেয়া হচ্ছে দেড় থেকে দুই গুণ। লঞ্চ, স্পীডবোট এবং ফেরিতে ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের অতিরিক্ত চাপ দেখা গেছে। কাঁঠালবাড়ি ঘাটে কথা হয় বাগেরহাটের মোল্লারহাট এলাকার যাত্রী সুজন মিয়ার সাথে, তিনি বলেন, ‘সাধারণ সময় বাসে ৩শ’ থেকে সাড়ে ৩শ’ থেকে টাকা নিলেও এখন যাত্রীদের জিম্মি করে ৪শ’ থেকে ৫শ’ টাকা আদায় করা হচ্ছে। এছাড়া বাসের ভিতরেও বাইরে অতিরিক্ত যাত্রী বহন করা হচ্ছে।’ কাঁঠালবাড়ি থেকে মাইক্রোবাস যোগে বরিশালগামী যাত্রী ইসরাত জাহান পুতুল বলেন, ‘সাধারণ সময়ে মাইক্রোবাসে ৩শ’ টাকা নেয়া হলে এখন নিচ্ছে সাড়ে ৪শ’ থেকে ৫শ’ টাকা করে। তা আবার প্রশাসনের সামনেই। প্রচন্ড গরমে মাইক্রোবাসে গাদাগাদি করে লোক ঢুকাচ্ছে।’ শিমুলিয়া ঘাট থেকে লঞ্চে আসা যাত্রী নাজমুল হোসেন বলেন, ‘পদ্মায় পিনাক-৬ দুর্ঘটনায় এতো মানুষ মারা গেল তবুও লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী বহন করা বন্ধ হচ্ছে না। প্রশাসনের এই বিষয়ে নজর দেয়া উচিৎ।’ স্পীডবোটের যাত্রী তমা আক্তার বলেন, ‘এই নৌরুটে আমি নিয়মিত ম্পীডবোটে চলাচল করি, স্বাভাবিক সময়ে ১শ’ ২০ টাকা ভাড়া নিলেও ঈদ উপলক্ষে বকশিসের নাম করে নেয়া হচ্ছে ২শ’ টাকা। এছাড়া যাত্রীদের নিরাপত্তায় প্রতিটি স্পীডবোটে লাইফ জ্যাকেট দেয়ার কথা থাকলেও কেউ এই নিয়ম মানছে না।’ শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাকির হোসেন মোল্লা বলেন, ‘বাড়তি ভাড়া আদায়ের বিষয়টি আমার নলেজে নেই। এই বাড়তি ভাড়া নেয়ার কথা সঠিকও নয়।’ মাদারীপুরের শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইমরান আহম্মেদ বলেন, ‘প্রশাসনের একাধিক টিম বিভিন্ন স্পটে ঘুরে বাড়তি ভাড়া না নেয়ার জন্য বাস ও মাইক্রোবাসের কাউন্টারে গিয়ে তাদেরকে সতর্ক করে দেয়া হয়েছে। কেউ অভিযোগ করলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
×