ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

লাব্বাইক, আল্লাহুম্মা লাব্বাইক ধ্বনিতে মুখরিত আরাফাত ময়দান

প্রকাশিত: ০৪:১০, ২০ আগস্ট ২০১৮

লাব্বাইক, আল্লাহুম্মা লাব্বাইক ধ্বনিতে মুখরিত আরাফাত ময়দান

অনলাইন রিপোর্টার ॥ সারাবিশ্ব থেকে যাওয়া ২০ লাখেরও বেশি হাজি উপস্থিত হয়েছেন সৌদি আরবের মক্কার আরাফাতের ময়দানে। সবার মুখে ‘‘লাব্বাইক, আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হাম্দা ওয়ান্নি’মাতা লাকা ওয়ালমুল্ক্’ ধ্বনি। যার অর্থ -‘আমি হাজির, হে আল্লাহ আমি হাজির, তোমার কোনও শরিক নেই, সব প্রশংসা ও নিয়ামত শুধু তোমারই, সব সাম্রাজ্যও তোমার।’ মহান আল্লাহর কাছে নিজেকে উৎসর্গ করতে যাওয়া হাজিদের খুতবা শেষ হয়েছে। এই ময়দানেই মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা) তার বিদায় হজের ভাষণ দিয়েছিলেন। হাজিদের উদ্দেশে এবার খুতবা দেন নামিরা মসজিদের ইমাম শেখ হুসেইন বিন আবদেল আজিজ আল আল শেইখ। নামিরা মসজিদ থেকে দেওয়া এবারের খুতবায় বলা হয়েছে, সম্মানজনক আচরণ ও ভালো চরিত্র ইসলামের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা। খুতবার মাধ্যমে হজের মূল আনুষ্ঠানিকাত শুরু হয়। হজের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হচ্ছে আরাফাত ময়দানে অংশগ্রহণ। সোমবার (২০ আগস্ট) সকাল থেকেই ময়দানে জড়ো হতে শুরু করেছেন মুসল্লিরা। মিনা থেকে ১০ কিলোমিটার পায়ে হেঁটে এখানে যেতে হয়। হাজিরা এখানে খুতবা শোনার পর একই সঙ্গে জোহর ও আসরের নামাজ সংক্ষিপ্তভাবে আদায় করবেন। তারপর হজ কবুল হওয়ার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া ও কোরান তেলওয়াতের মাধ্যমে সূর্যাস্তের অপেক্ষা করবেন। সূর্যাস্তের পর হাজিরা মাগরিবের নামাজ আদায় না করেই আরাফাতের ময়দান থেকে রওনা দেবেন মুজদালিফার দিকে। সেখানে পৌঁছে মাগরিব ও এশার নামাজ একসঙ্গে আদায় করবেন তারা। এখানে খোলা আকাশের নিচে রাত যাপন করবেন হাজিরা। তারপর মিনার জামারায় (প্রতীকী) শয়তানকে নিক্ষেপের জন্য পাথর সংগ্রহ করবেন। মঙ্গলবার (২১ আগস্ট) সকালে ফজরের নামাজ শেষে হাজিরা আবার ফিরে আসবেন মিনায়। বুধবার (২২ আগস্ট) সকালে জামারাতে পাথর নিক্ষেপ ও পশু কোরবানির পর পুরুষরা মাথা মুণ্ডন করে ইহরাম ত্যাগ করবেন। এরপর পবিত্র কাবা শরিফে বিদায়ী তাওয়াফ করে হজের পূর্ণ আনুষ্ঠানিকতা শেষ করবেন হাজিরা। হজের অন্যতম আনুষ্ঠানিকতা কাবা শরীফের গিলাফ পরিবর্তন করা হয়েছে সোমবার সকালেই। প্রায় দুই লাখ সৌদি রিয়াল খরচ করে নতুন গিলাফ তৈরি করা হয়েছে। নতুন গিলাফ তৈরিতে ৬৭০ কেজি খাটি রেশম, ১২০ কেজি সোনা ও ১০০ কেটি রুপা ব্যবহার করা হয়েছে। মসজিদ-উল-হারামের ইমাম ড. আব্দুর রহমান আসুদাইস ও মক্কার গভর্নর খালিদ ফয়সাল এই অনুষ্ঠানে অংশ নেন। এবছর বাংলাদেশ থেকে এক লাখ ২৬ জন হজ পালন করছেন। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হজ অফিসের (ঢাকায়) পরিচালক সাইফুল ইসলাম জানিয়েছেন, সৌদি আরবের বাংলাদেশ মিশনসহ প্রায় ২৫০ জন বাংলাদেশি কর্মকর্তা হজ পালনের সময় গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে মোতায়েন থাকবেন। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের বেশিরভাগ কর্মকর্তা ইতোমধ্যেই সৌদি আরব গেছেন বাংলাদেশি হজযাত্রীদের সহযোগিতা ও জরুরি সেবা দেওয়ার জন্য। জেদ্দা, মক্কা ও মদিনাতে তিনটি মেডিক্যাল স্থাপন করা হয়েছে। এসব ক্যাম্পে ৩০ জন চিকিৎসক ও নার্স হজযাত্রীদের চিকিৎসা সেবা দেবেন।
×