ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বেশিরভাগ মহাসড়কেই দীর্ঘ যানজট

ঈদ যাত্রা ॥ চরম ভোগান্তিতে ঘরমুখো মানুষ

প্রকাশিত: ২০:৪২, ২১ আগস্ট ২০১৮

ঈদ যাত্রা ॥ চরম ভোগান্তিতে ঘরমুখো মানুষ

অনলাইন ডেস্ক ॥ ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে ঘরমুখো মানুষের ভোগান্তির শেষ নেই। বরাবরের মত এবারও বিড়ম্বনার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে মহাসড়কে ভয়াবহ যানজট। যানজটের কারণে বিভিন্ন রুটের বাস নির্ধারিত সময়ে ছাড়া সম্ভব হচ্ছে না। কোনো যানবাহনই সময়মতো গন্তব্যে পৌঁছতে পারছে না। সড়কপথে এমন কোনো রুট নেই যে পথে যানজট নেই। প্রতিটি মহাসড়কে এখন বিরাজ করছে বিরক্তিকর যানজট। ট্রেনের ক্ষেত্রেও ভিন্ন কারণে শিডিউলে হেরফের ঘটছে। মাত্রাতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে চলাচল করছে প্রতিটি ট্রেন। প্রতিটি স্টেশনে বিপুলসংখ্যক যাত্রী ওঠানামা করায় যাত্রা বিলম্বিত হচ্ছে। রেললাইনের পাশে কোথাও কোথাও গরুর হাট বসায় ট্রেন চলাচল করছে সতর্কভাবে। ফলে লণ্ডভণ্ড হয়ে যাচ্ছে ট্রেনের শিডিউল। এদিকে, নদীপথের যাত্রীদের প্রতিটি ঈদের মতো এবারও জীবন হাতে নিয়ে লঞ্চে উঠতে হচ্ছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় কর্তৃপক্ষীয় সতর্কতা সত্ত্বেও প্রতিটি লঞ্চ ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি যাত্রী নিয়ে চলাচল করছে। প্রায় এক কোটি মানুষ স্বজনদের সঙ্গে ঈদ করতে ঢাকা, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ তথা বৃহত্তর ঢাকা ছাড়ছেন। স্বভাবতই মহাসড়কগুলোর ওপর স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে কয়েকগুণ চাপ পড়েছে। ফলে সড়ক ব্যবস্থাপনায় আগের চেয়ে অগ্রগতি ঘটলেও মহাসড়কগুলোতে যানজট এড়ানো কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাড়তি চাপের অনিবার্য পরিণতিতে প্রতিবারের মতো এবারও ঈদযাত্রায় বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়কে শুরু হয়েছে ভোগান্তি। আগামীকাল পবিত্র ঈদুল আযহা। কিন্তু মহাসড়কে যানজট ভয়াভহ আকার ধারণ করছে। কোনোভাবেই যেন যানজট কমছে না রাজধানী ঢাকা থেকে বেরোনোর সড়কে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দীর্ঘ এলাকাজুড়ে গতকাল থেকেই দেখা গিয়েছে যানজট। কুমিল্লার দাউদকান্দির গৌরীপুর থেকে মেঘনা সেতু পর্যন্ত ৪০ কিলোমিটার যানজটে যাত্রীদের নাকাল হতে হচ্ছে। মহাসড়কে এই দীর্ঘ যানজটের ফলে দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে ঘরমুখো মানুষের ঈদ যাত্রা। তবে উত্তরাঞ্চলে যাওয়ার মহাসড়কের অবস্থা সবচেয়ে নাজুক। সড়কের পাশেই গরুর হাট, স্থানে স্থানে খানাখন্দ, বৃষ্টির পানি জমে জলাবদ্ধতা, সড়কের দুই পাশে অবৈধ স্থাপনা ও উন্নয়ন সংস্কারে থমকে আছে ঈদে ঘরমুখো মানুষের যাত্রা। রাজধানী থেকে আব্দুল্লাহপুর হয়ে ঢাকা-ময়মনসিংহ ও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের চিত্রটাও ঠিক এমনই। মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুট, শরীয়তপুর-চাঁদপুর রুটে মেঘনার নরসিংহপুর ফেরিঘাট ও রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ঘাটে ফেরি পারাপার বিঘ্নিত হচ্ছে বলেই জানা গেছে। মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে অতিরিক্ত যানবাহনের চাপে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন ঈদে ঘরমুখো যাত্রীরা। পর্যাপ্ত ফেরি থাকার পরও সড়কে দীর্ঘতর হচ্ছে যানবাহনের লাইন। শিমুলিয়া-কাওড়াকান্দি নৌরুটে ফেরি চলাচল ব্যাহত হওয়ায় এ রুটে গাড়ির চাপ বেড়েছে। মাত্র দুটি ফেরি চলার কারণে শরীয়তপুর-চাঁদপুর রুটে মেঘনার নরসিংহপুর ফেরিঘাটে দুই শতাধিক গাড়ি পার হওয়ার অপেক্ষায় থাকছে। গাজীপুরে মহাসড়কে খানাখন্দের কারণে দীর্ঘদিন ধরে বিরাজ করছে যানজটের অভিশাপ। সড়ক মেরামতকারী ও পুলিশের সমন্বয়ের অভাবে এ পথে যাতায়াতকারী মানুষজন সীমাহীন কষ্টের শিকার হচ্ছেন। দেশের সড়ক ব্যবস্থাপনায় রয়েছে মারাত্মক ত্রুটি। যেনতেনভাবে সড়ক নির্মাণ এবং মেরামতের কাজ হওয়ায় নির্মাণ বা মেরামতের কিছু দিন পরেই সড়কগুলো বেহাল হয়ে পড়ে। এদিকে কর্তৃপক্ষের কড়া নজর ছাড়া ঈদের আগে জোড়াতালি দিয়ে সড়কগুলো চলাচলের উপযোগী করার যত চেষ্টাই হোক না কেন, তাতে স্বস্তি পাওয়ার সুযোগ কম।
×