ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

সরকার চায় না খালেদা জিয়া মুক্তি পাক ॥ মওদুদ

প্রকাশিত: ২২:৪১, ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৮

সরকার চায় না খালেদা জিয়া মুক্তি পাক ॥ মওদুদ

অনলাইন রিপোর্টার ॥ আজ বুধবার রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন চত্বরে দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে পূর্বঘোষিত প্রতীকী অনশন কর্মসূচি শেষ কেরেছে বিএনপি। এই সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, সরকার যতই ষড়যন্ত্র করুক না কেন ২০১৪ সালের মতো একতরফা নির্বাচন দেশে আর হতে দেয়া হবে না। ২০১৪ সালে দেশে কোনো নির্বাচন হয়নি। সকাল ১০টায় শুরু হওয়া এ কর্মসূচিতে বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সর্বস্তরের নেতাকর্মীসহ ২০ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতারা অংশ নেন। সরকার ও পুলিশকে উদ্দেশ্য করে মোশাররফ বলেন, আপনাদের সময় শেষ। মামলা গ্রেফতার করে বিএনপির দাবি আদায়ের আন্দোলন দমন করা যাবে না। খালেদা জিয়ার মুক্তি ছাড়া দেশে গণতন্ত্রের মুক্তি হবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি। প্রতীকী অনশনে অংশ নিয়ে স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, সময় আসতেছে, আর বেশি দেরি নাই। এমন কর্মসূচি দেয়া হবে যে এই সরকারের নৌকা ভেসে যাবে। তিনি বলেন, খালেদা জিয়াকে নির্জন কারাগারে একটি পরিত্যাক্ত কক্ষে আবদ্ধ করে রাখা হয়েছে। একজন মন্ত্রী বলেছেন বিএনপির আইনজীবীরা নাকি আইন জানেন না। উনি কি ভুলে গেছেন যে সংবিধান হচ্ছে সবচেয়ে বড় আইন? তিনি প্রশ্ন করেন সংবিধানের কথা বড়, নাকি একজন মন্ত্রীর কথা বড়? মওদুদ বলেন, সরকার চায় না খালেদা জিয়া মুক্তি পাক। আইনি প্রক্রিয়ায় খালেদা জিয়ার মুক্তি হবে বলে অন্তত আমার মনে হয় না। তাই খালেদা জিয়ার মুক্তির একমাত্র পথ রাজপথ আন্দোলন। ইনশাল্লাহ আমরা খালেদা জিয়াকে আন্দোলনের মাধ্যমেই কারামুক্ত করবো। স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, দেশনেত্রী খালেদা জিয়া কারাগারে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাকে সুস্থ করতে সরকারের কোনো উদ্যোগ নেই। বরং সেখানে তাকে তিলে তিলে মারার ষড়যন্ত্র করছে সরকার। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া কারাগারের ভেতরে স্থাপিত বিশেষ আদালতে উপস্থিত হয়ে বলেছেন ‘আমি অসুস্থ। বার বার হাজিরা দিতে আসতে পারবে না। এখানে ন্যায় বিচার হয় না। তাই আপনারা যা ইচ্ছে সাজা দেন। আমি আসতে পারব না।’ কাজেই নেত্রীর বার্তার প্রতি সমর্থন জানিয়ে আমরাও বলছি এই আদালতের রায় আমরা মানি না। দেশের জনগণও মানে না। গয়েশ্বর বলেন, ‘১/১১ সময় যারা ষড়যন্ত্র করেছিল তারা অনেকে এখন ভালো হয়ে গেছে। আমাদের মধ্যে কেউ যদি আবারও ষড়যন্ত্র করে সরকারের আঁতাতের নির্বাচনে অংশ নিতে চায় জনগণ তাদেরকে প্রতিরোধ করবে এবং তাদেরকে সমুচিত জবাব দেয়া হবে।’ তিনি বলেন, গণতন্ত্রের মাতা খালেদা জিয়া আজ কারারুদ্ধ। তাকে মুক্ত করতে হবে। কারামুক্ত খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি আগামী নির্বাচনে অংশ নেবে। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তুলতে চেষ্টা করতে হবে। ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, এই দেশের কোটি কোটি মানুষ খালেদা জিয়াকে কারামুক্ত করে আগামীতে চর্তুথবারের মতো দেশের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করবে। নজরুল ইসলাম খান বলেন, খালেদা জিয়ার নেতৃত্বেই গণতান্ত্রিক লড়াই চলবে। সেই লড়াইয়ের অংশ হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেবে বিএনপি। বিজয়ী হয়ে খালেদা জিয়াকে প্রধানমন্ত্রী করবো। এ সময় নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বানও জানান সাবেক এই রাষ্ট্রদূত। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, 'সরকার নিজেরা ভয়ে কম্পমান, শেখ হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচন সুষ্ঠ হতে পারে না এবং হতে দেয়া হবে না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি প্রফেসর এমাজ উদ্দিন আহমেদ বিএনপির সিনিয়র নেতাদের পানি পান করিয়ে নির্ধারিত সময়ের শেষে প্রতীকী অনশন ভাঙান। সমাপনী বক্তব্যে তিনি বলেন, আজ দেশের গণতন্ত্র ভুলন্ঠিত। এর থেকে উত্তোরণের পথ আগামী জাতীয় নির্বাচন। যে নির্বাচন হতে হবে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে। কারণ আমরা মৌলিক অধিকার, আইনের শাসন, মানবাধিকার ও গণতন্ত্র হারিয়েছি। তা খালেদা জিয়ার মুক্তি ও আগামী সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে ফিরে পেতে চাই।
×