ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

‘যুক্তরাষ্ট্রে আগামীকাল দুদিনব্যাপী টিকফা চুক্তির চতুর্থ বৈঠক ’

প্রকাশিত: ০২:০০, ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৮

‘যুক্তরাষ্ট্রে আগামীকাল দুদিনব্যাপী টিকফা চুক্তির চতুর্থ বৈঠক ’

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে দুদিনব্যাপী (১৩-১৪ সেপ্টেম্বর) টিকফা চুক্তির চতুর্থ বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এবারের বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সংক্রান্ত ইস্যু নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে। বাংলাদেশ পোশাকের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করার দাবি করবে। তবে ইতোমধ্যে তিনটি বৈঠকের পরও শুল্কমুক্ত বাজার সুবিধার বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্র এড়িয়ে যাওয়ায় এবার আর জিএসপি নিয়ে আলোচনা করতে আগ্রহী নয় বাংলাদেশ। তবে যুক্তরাষ্ট্র চায়, বাংলাদেশ শ্রমিকবান্ধব আইন ও মেধাস্বত্ব অধিকার নিশ্চিত করুক। বাংলাদেশের বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ পরিবেশেরও উন্নয়ন হোক, সেটিও চায় দেশটি। জানা গেছে, বাংলাদেশ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ সহযোগিতা ফোরাম (টিকফা) কাউন্সিলের চতুর্থ বৈঠক যোগ দিতে বাণিজ্যসচিব শুভাশীষ বসুর নেতৃত্বে ছয় সদস্যের একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল গত সোমবার যুক্তরাষ্ট্র গেছে। দলের অন্য সদস্যরা হলেন শ্রমসচিব আফরোজা খান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডব্লিউটিও সেলের মহাপরিচালক মুনীর চৌধুরী, পরিচালক জিয়াউল হক ও উপপরিচালক খলিলুর রহমান এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক নজরুল ইসলাম। এছাড়া ওই বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশ দূতাবাসের শীর্ষ কয়েকজন কর্মকর্তা বৈঠকে যোগ দিবেন। চুক্তির পর গত চার বছরে ঢাকায় টিকফা কাউন্সিলের দুটি এবং ওয়াশিংটনে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এদিকে, এবারের বৈঠকের জন্য বাংলাদেশের আলোচ্যসূচি ঠিক করা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি। এর আওতায় দেশের অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে বড় বিনিয়োগ চাবে বাংলাদেশ। বাংলাদেশি পণ্যের ন্যায্যমূল্য ও নৈতিক কেনাবেচার চর্চা। এক্ষেত্রে পোশাকের সঠিক দাম নিশ্চিত করার কথা বলা হবে। বাংলাদেশ থেকে কম দামে কেনা হলেও যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে উচ্চমূল্যে সেই পোশাক বিক্রি করা হচ্ছে। এছাড়া প্রযুক্তি হস্তান্তর ও বাণিজ্যবিষয়ক সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং বাণিজ্য সহযোগিতা চুক্তি (টিএফএ) বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা হবে। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের পাঁচ আলোচ্যসূচি হচ্ছে বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্ক বৃদ্ধি, বাজার প্রবেশাধিকার, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ পরিবেশ, সরকারি ক্রয় এবং শ্রম অধিকার। তবে যুক্তরাষ্ট্রের বাজার প্রবেশাধিকারের ইস্যুতে আরও চারটি বিষয় রয়েছে। সেগুলো হচ্ছে বীমা, তুলা, ওষুধ ও মেডিকেল ডিভাইস এবং ডিজিটাল অর্থনীতি। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে আলোচ্যসূচিতে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ পরিবেশ বিষয়েও কয়েকটি ইস্যু স্থান পেয়েছে। যেমন ই-বর্জ্য, ড্রাগস এ্যান্ড কসমেটিকস আইন, টিএফএ বাস্তবায়নে সহযোগিতা এবং মেধাস্বত্ব অধিকার। জানা গেছে, রানা প্লাজা ধসের পর দেশের পোশাকখাতে ব্যাপক সংস্কার করা হয়েছে। দেশের বেশির ভাগ কারখানা এখন কমপ্লায়েন্স। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক এ্যাকশন প্লান নামে ১৬টি পূরণ করতে সক্ষম হয়েছে বাংলাদেশ। এতসব হওয়ার পরও জিএসপি সুবিধা পাওয়া যায়নি। অন্যদিকে আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করে পোশাকের দামও বাড়ানো হচ্ছে না। এ কারণে এবারের বৈঠকে রফতানিকৃত পণ্যের ন্যায্যদামের বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হবে।
×