ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

তফসিল ঘোষণার পর সংসদ আর বসবে না

প্রকাশিত: ০৫:৪৯, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮

তফসিল ঘোষণার পর সংসদ আর বসবে না

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নির্বাচনকালীন সরকার গঠন ও জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনে আমরা সংবিধানের বাইরে যাব না, যাচ্ছিও না। অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশে যেভাবে নির্বাচন হয়, আমাদের দেশেও সেভাবেই নির্বাচন হওয়ার কথা জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। বুধবার ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) নগর ভবনে ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের (ডিটিসিএ) পরিচালনা পরিষদের ১১তম সভা শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন গণতান্ত্রিক দেশের মতো আমাদের দেশেও সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ ক্ষেত্রে সংবিধানের বাইরে বিদেশী চাপের কাছে আমরা নতিস্বীকার করব না। এ ব্যাপারে আমরা সচেতন আছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পদত্যাগের মাধ্যমে নির্বাচনকালীন সরকারের গঠন করতে বিএনপির দাবি প্রসঙ্গে সড়ক পরিবহনমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি মামা বাড়ির পুরনো আবদার। প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করে কার কাছে দায়িত্ব দেবেন? দেশে কি কোন সংবিধান থাকবে না, আইন-কানুন থাকবে না? এটা যেন তাদের মামা বাড়ির পুরনো আবদার। তিনি বলেন, চলমান অধিবেশন শেষে অক্টোবরে আরেকটি সংসদ অধিবেশন বসবে। সেই অধিবেশন সম্ভবত মধ্য অক্টোবরের মধ্যেই শেষ হবে। তফসিল ঘোষণার পর আর সংসদ বসবে না। অক্টোবরের অধিবেশন খুবই সংক্ষিপ্ত হবে। এরপর মন্ত্রীরা কেবল রুটিন ওয়ার্ক করবেন। আর সংসদ আনুষ্ঠানিকভাবে ভাঙবেও না, সংসদের কোন কার্যকারিতাও থাকবে না, নির্বাচনকালে সংসদ বসবেও না। দেশে যদি যুদ্ধ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় সেটা ভিন্ন কথা। তবে আমরা কারও সঙ্গে যুদ্ধ করতে চাই না। আলাপ-আলোচনা করেই সব কিছুর সমাধান চাই। আমরা মিয়ানমারের সঙ্গেই যুদ্ধে জড়াইনি। জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের আমন্ত্রণে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের জাতিসংঘে যাওয়া প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, জাতিসংঘ যদি তাকে আমন্ত্রণ করে, তারা যদি দলের প্রতিনিধিদের নিয়ে জাতিসংঘের মহাসচিবের সঙ্গে দেখা করেন, তাতে কোন অসুবিধা নেই। জাতিসংঘের মহাসচিবের সঙ্গে কী এজেন্ডা আছে আমি তা জানি না। নির্বাচন নিয়েও আলোচনা হতে পারে। তারা তো জাতিসংঘে অবিরাম অভিযোগ দিয়েই যাচ্ছে। দেশের বিরুদ্ধে নালিশ করছে, সরকারের বিরুদ্ধে নালিশ করছে, সেসব নালিশের ব্যাপারে তাদের মতামত কী, সামনাসামনি তাদের পলিটিক্যাল উইং আলাপ করতে পারে বলে অনুমান করছি। সেটা নিয়ে আমাদের আপত্তি করার বিষয় নয়। আমাদের শক্তির উৎস এদেশের জনগণ। নির্বাচনে জনগণ পছন্দের প্রার্থীকে নির্বাচিত করবে। আমাদের সিদ্ধান্ত কোনো সংবিধানবহির্ভূত প্রেসারের’ বা চাপের কাছে আমরা মাথানত করব না। আর নির্বাচনকালীন সরকারের বিএনপিকে তো আমন্ত্রণ করিনি, তারা তো সংসদে নেই। বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি প্রসঙ্গে দলটির নেতাদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য এদেশের জনগণ যদি উতলা হতো, তাহলে গ্রেফতারের পরই বিস্ফোরণ ঘটে যেত। একটা ছোট আন্দোলনও দেখলাম না। ‘তারা সর্বাত্মক আন্দোলন করবে এটা লোকে বিশ্বাস করে না। তাদের নেতাকর্মীদের মধ্যেই ঐক্য নেই। একজন আরেকজনকে বিশ্বাস করে না। একজন আরেকজনকে বলে সরকারের দালাল। তারা নিজেরাই ঐক্যবদ্ধ নয়, সর্বাত্মক আন্দোলন করবে কিভাবে? তাদের সর্বাত্মক আন্দোলন নিরীহ অনশনে পরিণত হয়েছে। এত নিরীহ কর্মসূচীর পর সর্বাত্মক আন্দোলনের সাহস নেই। সাহস থাকলে আগেই হতো, এখন আর সময় নেই। এখন তাদের ডাকে সাড়া দেবে না। জায়গা পাবে না। জনগণ এখন নির্বাচনী মুডে আছে।’ বিএনপির উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, আন্দোলন করেন, জনগণকে নিয়ে করেন। আন্দোলন অহিংস করলে শান্তি। আর যদি সহিংস হয় তাহলে জনগণকে নিয়ে আমরা প্রতিহত করব। বৈঠকে ডিটিসিএ চেয়ারম্যান, রাজউক চেয়ারম্যান আবদুর রহমান, বিআরটিএ চেয়ারম্যান মশিয়ার রহমানসহ সংশ্লিষ্ট কর্তাব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। সংসদে উত্থাপন হচ্ছে সড়ক পরিবহন আইন ॥ আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে উত্থাপতি হবে ‘সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮’। বুধবার ডিটিসিএর বোর্ড সভায় সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেছিলেন, আইনটি আগামী রবিবার সংসদে উত্থাপন করা হবে। কিন্তু সন্ধ্যায় মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানান, আইনটি বুধবার জাতীয় সংসদে উত্থাপিত হবে।
×