ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ব্যক্তিখাতে আয়করসীমা ১০ শতাংশ চান পরিকল্পনামন্ত্রী

প্রকাশিত: ০০:৪৯, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮

ব্যক্তিখাতে আয়করসীমা ১০ শতাংশ চান পরিকল্পনামন্ত্রী

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, ব্যক্তিখাতে আয়করসীমা ১০ শতাংশে নামিয়ে আনা উচিত। এর ফলে কর আদায়ের পরিমাণ বাড়বে। করের হার সহজ করলে করদাতা আড়াই লাখ থেকে বেড়ে পাঁচ লাখে উন্নীত হবে। বাংলাদেশ জার্মান চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (বিজিসিসিআই) আয়োজনে অনুষ্ঠিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ সব কথা বলেন। বৃহস্পতিবার রাজধানীর হোটেল ওয়েস্টিনে ‘উদীয়মান বাংলাদেশ: ব্যবসাবান্ধব নীতি ও পরিকল্পনা’শীর্ষক সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা মন্ত্রী। অনুষ্ঠানে পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, ব্যক্তিখাতের ব্যবসায় সরকার হস্তক্ষেপ করবে না। বরং নীতিসহায়তা দিয়ে সরকার সব সময় উদ্যোক্তাদের পাশে থাকবে। দেশের অর্থনীতির ৮৩ শতাংশ অবদান বেসরকারি খাতের। তাই এ খাতে পণ্য ধরে ধরে প্রনোদনা অব্যাহত রাখা হবে। আগের চেয়ে ব্যবসা বাণিজ্যের পরিবেশ সহজ করা হচ্ছে। বিনিয়োগের পরিবেশ উন্নত হওয়ায় দেশ থেকে বের হয়ে যাওয়া টাকাও বিনিয়োগ হয়ে ফিরে আসবে। জনশক্তিকে অর্থনীতির বড় শক্তি হিসেবে তুলে ধরে পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, তরুণ উদ্যোক্তারা দেশের অর্থনীতির প্রাণ। বর্তমাণে দেশের ৬০ শতাংশ মানুষ কর্মক্ষম। ২০৪১ সাল নাগাদ এর হার ৭০ শতাংশে উন্নীত হবে। শুধু বাংলাদেশে নয় সারা বিশ্বে জনসংখ্যা বাড়ছে। বিডার নির্বাহী পরিচালক কাজী আমিনুল ইসলাম বলেন, উচ্চমাধ্যম আয়ের দেশে যেতে হলে ১৭০০ ডলার থেকে মাথাপিছু আয় ৪ হাজার ডলারে নিয়ে যেতে হবে। উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশ হতে হলে দরকার মাথাপিছু আয় ১২ হাজার ডলার। ২০৪১ সাল নাগাদ উচ্চআয়ের যোগ্যতা ১৫ হাজার ডলারে উঠবে। দেশের জনসংখ্যা বেড়ে তখন ২০ কোটিতে উন্নীত হবে। তবে, এজন্য ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি। দেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে বেসরকারি খাতই নেতৃত্ব দেবে বলে মনে করেন আমিনুল ইসলাম। তিনি বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে নীতিসহায়তা দেয়ার কারণে পোশাক খাত অনেক এগিয়ে গেছে। এ কারণেই ৮০ শতাংশের বেশি রফতানি আয় আসে পোশাক খাত থেকে। তার মতে পোশাক খাতের বাইরে অন্যান্য খাতের বিনিয়োগকারীদের বহির্বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার মতো দক্ষতা নেই। পণ্যে বৈচিত্র্য আনতে উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণের প্রয়োজন রয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। তিনি আরও বলেন, সরকার শিল্পায়নে নীতিসহায়তা দিচ্ছে। এক সময় নিয়োগকারীরা সেবা পেতে হয়রানীর শিকার হতো। এখন সময় বদলেছে। আমলাতান্ত্রিক জটিলতাও আগের চাইতে অনেক কম। বেসরকারি খাতের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াদি নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক, এনবিআরসহ সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে প্রতিনিয়ত আলোচনা হয় জানিয়ে ভবিষ্যতে ব্যবসার পরিবেশ আরও ভালো হবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন। বাংলাদেশ জার্মান চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ এর প্রেসিডেন্ট ওমর সাদাত বলেন, বেসরকারি খাত ও বৈদেশিক ঋণ দুশ্চিন্তার বিষয়। বৈদেশিক ঋণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এখনো অনেক পিছিয়ে। বিনিয়োগকারীরা আসছেন না। যার কারণ, এখনো মূলধন ঘাটতি, শেয়ারবাজারে বৈদেশিক বিনিয়োগের অংশ ততটা বাড়েনি। এ ছাড়া আমলাতান্ত্রিক জটিলতা, ওয়ানস্টপ সার্ভিস ততটা নেই। অদক্ষ শ্রমিকের অভাব নেই। দক্ষতা বাড়াতে সরকারি বেসরকরি অংশিদারিত্বে কারিগরি শিক্ষা ব্যবস্থার উদ্যোগ নিতে হবে। বিনিয়োগকারী এখানে আসলে ২০ থেকে ২৫ বছর ব্যবসার চিন্তা করে আসেন। এ অনুযায়ী আমাদের দেশে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নিয়ে সরকারকে মাঠে নামতে হবে বলেও মনে করেন বিজিসিসিআই প্রেসিডেন্ট।
×