ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

নতুন আঙ্গিকে ‘নৃত্য যোগসুত্র’ মঞ্চায়ন

প্রকাশিত: ০১:৪৫, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮

নতুন আঙ্গিকে ‘নৃত্য যোগসুত্র’ মঞ্চায়ন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মাইকে ধ্বণিত হচ্ছে ‘তম্ তা তাকে ধিম্ ধিম্ তাক্ তাক্ তেটেকতা তম্’। তার সঙ্গে নুপুরের ঝংকারে মঞ্চ কাঁপিয়ে নেচে চলেছে এক ঝাঁক শিল্পী। প্রত্যেকের চোখে-মুখে, সারা শরীরে ফুটে উঠছে শিল্পের ছটা। শিল্পকলার জাতীয় নাট্যশালার চিলেকোটা যেন রূপ নিয়েছে নৃত্যনন্দনে। ভরত নাট্যমের সঙ্গে যোগ ব্যামের নিবিড় সম্পর্ককে তুলেধরার জন্য ‘নৃত্য যোগসুত্র’ শিরোনামের ব্যতিক্রমী এ নৃত্য সন্ধ্যার আয়োজন করেছে নৃত্যনন্দন। ভারতের তরুণ নৃত্যশিল্পী রাহুল দেব মন্ডলের অক্লান্ত পরিশ্রম ও নিষ্ঠায় মাত্র এক সপ্তাহে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের শিক্ষার্থীরা রপ্ত করে নিয়েছে যোগ ব্যামের এই শারিরীক কসরত, যা ভরত নাট্যমের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। নৃত্যশিল্পী রাহুল কলকাতার রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃত্য বিভাগের শিক্ষক। নৃত্যনন্দন আয়োজিত ব্যাতিক্রমী এ নৃত্য কর্মশালায় অংশ নিয়েছে প্রায় ৭০ জন শিক্ষার্থী। কর্মশালার এ সমাপ্তি ঘটে শিক্ষার্থীদের এ নান্দনিক পরিবেশনার মধ্যদিয়ে। অনুষ্ঠানে শিক্ষক রাহুল দেবও তার পারফরর্মেন্সে মুগ্ধ করেন সকলকে। বিষয়ভিত্তিক প্রতিটি নাচের মূদ্রার সঙ্গে সঙ্গে তিনি বলে দিচ্ছেন এর উপকারিতা এবং কেন নাচে এটা বাবহার হয়। তিনি বলেন, আমরা যারা আধুনিক যোগ নিয়ে কাজ করছি। তারা কর্ম যোগকে প্রাধ্যান্য দিচ্ছি। আমরা নৃত্যে সমাধি নামে একটি শব্দ উচ্চারণ করে থাকি। সমাধি বলতে স্পিরিচুয়াল কল্পনা ও হেলেন্দি বডিকে বোঝায়। স্পিরিচুয়াল ও কল্পনার বডি যখন হেলেন্দি বডিতে মিশে যায়, তখন তাকে আমরা বলি ক্রিয়াযোগ। এই যোগকে পরবর্তিতে যখন আধুনিকভাবে গ্রহণ করা হয়েছে, সমাধিকে সেই ভাবেই দেখা হয়। এই সমাধিকে কর্মের মধ্যে রেখেছে। এরা যারা সাত দিন ধরে ওয়ার্কশপ করেছে তারা দেখেছে ওদের সামাধি। ওরা যখন পারফরমেন্স করছে পরে তা দেখে আপনারা যারা দর্শক হাত তালি দিচ্ছেন, তখনই ওদের সমাধি প্রাপ্তি হচ্ছে। কর্মের প্রকাশ আধুণিক বিশ্বে সমাধি নামে পরিচিত। আমরা নৃত্যশিল্পীরা যে কাজটা করেছি, তার প্রকাশ হচ্ছে আমাদের সমাধি। শিল্পী রাহুলের নির্দেশনায় এক সপ্তাহ ধরে শিক্ষার্থীরা ভরতনাট্যমের যে বিষয়গুলো রপ্ত করেছে অনুষ্ঠানে তার অংশ বিশেষ প্রদর্শন করে। এরমধ্যে ছিল ভূমি সঞ্চার, গমুখা আসন, পার্শ্ব সঞ্চার, সম্মূক সঞ্চার, এক পথরাজ কপতসেনা, তিল্লানা, নটেশ্বর কভুত্তম, পুস্পাঞ্জলি প্রভৃতি। সব শেষে ছিল শিল্পী রাহুল দেব মন্ডলের একক ভরত নাট্যম পরিবেশনা। তিনি শিব বন্দনা ও অষ্টপদী পরিবেশনার মধ্যদিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি টানেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নৃত্যশিল্পী লায়লা হাসান, আমানুল হক, শর্মীলা বন্দোপাধ্যায়, আনিসুল ইসলাম হীরু প্রমুখ।
×