স্টাফ রিপোর্টার ॥ তফসিল ঘোষণার আগে সংসদ ভেঙে দিয়ে ‘নিরপেক্ষ তদারকি সরকার’ গঠনের মাধ্যমে নির্বাচন অনুষ্ঠানসহ ১০ দফা দাবিতে বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশন ঘেরাওয়ের ঘোষণা দিয়েছে বাম গণতান্ত্রিক জোট।
মঙ্গলবার রাজধানীর পুরানা পল্টনের মুক্তি ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে এই কর্মসূচী ঘোষণা করেন দেশের বাম দলগুলোর জোটের সমন্বয়ক সাইফুল হক। বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির এই সাধারণ সম্পাদক জানান, ওইদিন সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাব থেকে মিছিল নিয়ে আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ঘেরাওয়ের উদ্দেশ্যে রওনা করবেন তারা।
একইদিন জেলা পর্যায়ে সকালে জেলা নির্বাচন কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভের কর্মসূচীও ঘোষণা করেন সাইফুল হক। ইভিএম চালু ও ডিজিটাল ভোট ডাকাতির পাঁয়তারা বন্ধ করা, প্রার্থীর জামানত ৫ হাজার টাকা ও নির্বাচনী ব্যয় ৩ লাখ টাকা নির্ধারণ করে কঠোরভাবে তা মেনে চলতে বাধ্য করা, অনলাইনে মনোনয়পত্র জমা দেয়ার বিধান চালু করা, ভোটার ইচ্ছায় জনপ্রতিনিধি প্রত্যাহার করা এবং ‘না’ ভোটের বিধান চালু করা এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীর ক্ষেত্রে ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থনসূচক সইয়ের বিধান বাতিল করা প্রভৃতি রয়েছে বাম জোটের অন্য দাবির মধ্যে।
রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংলাপ থেকে আসা সুপারিশের ভিত্তিতে নির্বাচনী ব্যবস্থার গণতান্ত্রিক সংস্কারের উদ্যোগ নির্বাচন কমিশন নেয়নি বলে লিখিত বক্তব্যে অভিযোগ করেন বাম জোটের সমন্বয়ক সাইফুল হক। সমস্ত কিছু বাদ দিয়ে, এমনকি একজন নির্বাচন কমিশনারের প্রতিবাদের মুখেও নির্বাচনে বিতর্কিত ও স্বচ্ছতাহীন ইভিএম ব্যবস্থা যুক্ত করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
নির্বাচনে ডিজিটাল কারচুপির মাধ্যমে সরকারি দলকে বাড়তি সুবিধা দিতে ইভিএম ব্যবহারের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। বরিশালসহ কয়েকটি সিটি করপোরেশনের বিগত নির্বাচনের উদাহরণ টেনে সাইফুল হক বলেন, ভোট জালিয়াতি, প্রশাসনিক কারসাজি, মিডিয়া নিয়ন্ত্রণ, সচতুর কায়দায় কেন্দ্র দখল, সন্ত্রাস, মাস্তানি, হয়রানি, ভীতি প্রদর্শন ও সীমাহীন অর্থব্যয়ের মধ্য দিয়ে সমগ্র নির্বাচনকে অর্থহীন ও অকার্যকর করে তোলা হয়েছে। নিয়ন্ত্রিত নির্বাচনের এক অভিনব মডেলও চালু করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে সিপিবি সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, বাসদ (খালেকুজ্জামান) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বজলুর রশীদ ফিরোজ, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন নান্নু, গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতা ফিরোজ আহমেদ, বাসদের (মার্ক্সবাদী) কেন্দ্রীয় নেতা ফখরুদ্দিন কবির আতিক উপস্থিত ছিলেন। আটটি বামপন্থি রাজনৈতিক দল মিলে গত ১৮ জুলাই ‘বাম গণতান্ত্রিক জোট’ যাত্রা শুরু করে।