ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সাউথ-বাংলা ব্যাংক

অতিরিক্ত ঋণ সুবিধা পেল ৭ প্রতিষ্ঠান

প্রকাশিত: ০৬:২০, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮

অতিরিক্ত ঋণ সুবিধা পেল ৭ প্রতিষ্ঠান

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদনক্রমে সাতটি প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে ঋণ সীমা অতিক্রম করে অর্থ ছাড় করেছে সাউথ বাংলা এগ্রিকালচারাল এ্যান্ড কমার্স ব্যাংক লিমিটেডের প্রিন্সিপাল শাখা। ঋণের পুরো অর্থ আদায় না হওয়ায় এসব এখন মন্দমানে শ্রেণীকরণ যোগ্য বলে মতামত দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। একই সঙ্গে এসব অনিয়মের সঙ্গে জড়িত বা দায়ী কর্মকর্তাদের চিহ্নিত তাদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়, ব্যাংকের প্রিন্সিপাল শাখা থেকে সজল জুট ট্রেডিংয়ের অনুকূলে ১০ কোটি টাকার ঋণ অনুমোদন করা হলেও ৪ কোটি টাকা অতিরিক্ত বিতরণ করা হয়েছে। অতিরিক্ত অর্থ উত্তোলনের পরও ঋণ হিসাবটি নবায়ন করা হয়েছে। এছাড়া সজল জুট ট্রেডিংয়ের মালিক এস্কান্দার আলী খলিফার স্ত্রীর মালিকানাধীন সেতু জুট ট্রেডিংয়ের অনুকূলে ৩ কোটি ৭৫ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে তা সজল জুট ট্রেডিংয়ের হিসাবে স্থানান্তর করা হয়েছে। সেতু জুট ট্রেডিংয়ের নামে ঋণ নিয়ে সজল জুট ট্রেডিংয়ের ঋণ নবায়ন করা হয়েছে। স্ত্রীর নামের প্রতিষ্ঠানে ঋণ নিয়ে স্বামীর প্রতিষ্ঠানের ঋণ নবায়ন করায় এই ঋণটি বিরূপমানে শ্রেণীকরণ হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতিবেদনে বলছে, মেসার্স সিয়ারস লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠান ব্যবসা শুরুর মাত্র চারদিনের মাথায় ৩৮ কোটি টাকা ঋণ মঞ্জুর করে সাউথ বাংলা ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ। মঞ্জুর করার দুইমাস বাড়িয়ে ঋণ সীমা ৯০ কোটি টাকা করা হয়। গ্রাহকের অনুকূলে ফান্ডেড ঋণ সীমার ৭৫ কোটি বকেয়ার পরিমাণ দাঁড়ায় ৯৬ কোটি টাকায়। অর্থাৎ গ্রাহকের অনুকূলে সীমা অতিরিক্ত ঋণ সুবিধা ছিল ২১ কোটি টাকা। ৩০ জুন ২০১৮ পর্যন্ত ব্যাংকের মোট মূলধন ছিল ৬১৮ কোটি টাকা। একক বৃহত্তম ফান্ডেড ঋণ সীমা ছিল ৯৩ কোটি টাকা। ফান্ডেড বকেয়ার পরিমাণ ছিল ৯৫ কোটি টাকা। যা ব্যাংকটির ফান্ডেড ঋণসীমা থেকে অতিরক্তি ৩ কোটি টাকার ঋণ সুবিধা দেয়া হয়েছে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গ্রাহকের অনুকূলে সীমা অতিরিক্ত উত্তোলন সুবিধা বিদ্যমান থাকা সত্ত্বেও গ্রাহককে অনৈতিক সুবিধা দিতে পরিচালনা পর্ষদ ঋণসীমা পুনরায় বৃদ্ধি ও নবায়ন করেছে। প্রতিবেদন বলা হয়েছে, ইনল্যান্ড ডকুমেন্টারি বিল পার্চেজডের (আইডিবিপি) সুবিধার নামে মেসার্স তাহমিদ এন্টারপ্রাইজের অনুকূলে ২৭ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। কাগজ রফতানির বিল কোন ধরনের যাচাই-বাছাই ছাড়াই ব্যাংক এই অর্থছাড় করেছে। তাহমিদ এন্টারপ্রাইজের মালিক একেএম আমিনুল ইসলাম। মেসার্স আল আমিন পোল্ট্রি ফিডের অনুকূলে একক ঋণ সীমা অতিক্রম করে ১৫০ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করা হয়েছে। ২০১৭ সালের ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকের মূল অনুযায়ী একক ঋণ সীমা ছিল মাত্র ৮৭ কোটি টাকা। সীমা অতিক্রম করে অতিরিক্ত বিতরণ করা হয়েছে ৬৩ কোটি টাকা। মাহবুব ব্রাদাস (প্রা.) লিমিটেডের অনুকূলে ৫৭ কোটি টাকা ঋণ মঞ্জুর করা হলে পরবর্তীতে তা ৭১ কোটি টাকা করা হয়। সেখান থেকে ৩০ কোটি আবার কমানো হলেও পরে ৪৭ কোটি টাকার এসওডি ঋণ মঞ্জুর করে পরিচালনা পর্ষদ। (এসওডি হলো এক ধরনের ঋণ, যার বিপরীতে ১০০ শতাংশ নগদায়ন করার মতো অর্থ থাকে।
×