ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

মোহামেডানে ব্রিটিশ কোচ ইভান্স

প্রকাশিত: ০৭:০৩, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮

মোহামেডানে ব্রিটিশ কোচ ইভান্স

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ দলগত শিরোপা জিততে হলে চাই ভাল দলগঠন। এ জন্য চাই দক্ষ, কার্যকর ও কুশলী ফুটবলার। সেই সঙ্গে উপযুক্ত প্রশিক্ষণ ও কিছুটা ভাগ্যের পরশও। ঘরোয়া পেশাদার বাংলাদেশ লীগের পরিসাপ্তির পর আবারও চলে এসেছে নতুন মৌসুম। ফুটবলাররা আবারও ব্যস্ত হয়ে পড়বেন। তবে তার আগে কিছু আনুষ্ঠানিকতা বাকি আছে। সেটা হচ্ছে নতুন মৌসুমের দলবদল। ঘর গোছানোর কাজ নিয়ে সবদলই ব্যস্ত। ঐতিহ্যবাহী মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব লিমিটেডও এর ব্যতিক্রম নয়। তারা মোটামুটি দল গুছিয়ে ফেললেও বাকি ছিল কোচ নিয়োগ দেয়া। মঙ্গলবার সেই আনুষ্ঠানিকতাও সেরে ফেললো তারা। পরিচয় করিয়ে দিল নতুন ব্রিটিশ কোচ ক্রিস্টোফার ইভান্সের সঙ্গে। ক্লাবের বাইরের উদ্যানে প্রখর খরতাপে সংবাদ সম্মেলন। শুরু হয় একঘণ্টা দেরিতে। মজার ব্যাপারÑ প্রেস মিটের ব্যানারে ইংরেজীতে সংবাদ সম্মেলনের সময় লেখা ছিল রাত ১২টায়! আরও মজার ব্যাপারÑ ১৯ বারের লীগ চ্যাম্পিয়ন মোহামেডান প্রিমিয়ার লীগ জিততে চায় না (সর্বশেষ লীগ জয় ২০০২ সালে)। ক্লাবের ডিরেক্টর ইনচার্জ লোকমান হোসেন ভুঁইয়া তো তাই বললেন, ‘আমরা অস্বীকার করছি না আমাদের আর্থিক অনটন আছে। গত লীগে ১২ দলের মধ্যে আমরা পঞ্চম হয়েছিলাম। এবারের লীগে তারচেয়ে একটু ওপরে থাকতে চাই।’ মজার এখানেই শেষ নয়। ক্লাব যদি এতই অর্থকষ্টে ভোগে, তাহলে তারা কিভাবে বলে কোরিয়া-জাপান-অস্ট্রেলিয়া বা ইংল্যান্ড থেকে ভালমানের বিদেশী খেলোয়াড় সংগ্রহ করবে? আপাতত এক মৌসুমের জন্য কাজ করবেন ইভান্স। তার বায়োডাটা ঘেঁটে দেখা গেছে কোচিংয়ের চেয়ে তিনি বিভিন্ন ক্লাবের প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবেই বেশি কাজ করেছেন। কোচ হিসেবে তার সে রকম কোন উজ্জ্বল সাফল্যও নেই। এমনকি তার কোন ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট, এমনকি তার নামে কোন উইকিপিডিয়াও নেই! ফলে মোহামেডানের ফুটবল সমর্থকরা সংশয় প্রকাশ করেছেন সস্তা-মানহীন কোচকে নিয়ে আসা হয়েছে! উয়েফা ‘এ’ লাইসেন্সধারী’ কোচ ইভান্স বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ক্লাবের (যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, ভারত, জার্মানি) সিইও, যুব প্রকল্পের কর্মকর্তা, ম্যানেজার, টেকনিক্যাল ডিরেক্টর হিসেবে কাজ করেছেন। মোহামেডান জানিয়েছে, ইভান্সকে পাওয়া গেছে বাফুফের টেকনিক্যাল ডিরেক্টর পল স্মলির মাধ্যমে। তিনি নাকি পলের পরিচিত। ক্লাবই যেখানে শিরোপা জিততে চায় না, সেখানে মোহামেডানে কোচের লক্ষ্য কী? ‘ক্লাব যেভাবে চাইবে, আমি সেভাবেই কাজ করতে প্রস্তুত।’ ইভান্সের কৌশলী জবাব। তাছাড়া তিনি আভাস দিয়েছেন নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলেরও কোচ হতে চান। খেলোয়াড়-কোচের পারিশ্রমিক ঠিকমতো পরিশোধ না করার দুর্নাম মোহামেডানের বহুদিনের। নাইজেরিয়ান কোচ এমেকা ইউজিগো তো ফিফায় নালিশ দিয়ে মোহামেডানের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের বকেয়া অর্থ আদায় করে নিয়েছিলেন। ইভান্সের ভাগ্যে কী ঘটবে? তিনি অবশ্য এ নিয়ে ভাবিত নন। মোহামেডান ইতোমধ্যেই ২৫ স্থানীয় ফুটবলারকে চূড়ান্ত করে ফেলেছে, যাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন লিংকন, কোমল, মিন্টু শেখ, শরীফ, অনীক, ফজলে রাব্বি, তকলিস, এমিলি, মিঠুন, সোহাগ প্রমুখ। দু’তিন বিদেশীকে ‘প্রায়’ দলভুক্ত করে ফেলেছিল মোহামেডান। কিন্তু সেটা স্থগিত করা হয়েছে ইভান্সের পরামর্শেই। আজ থেকে বুয়েট মাঠে দলের অনুশীলন শুরু হবে। সেখানে বিদেশীদের পরখ করবেন তিনি। সেই সঙ্গে প্রতিটি পজিশনও খতিয়ে দেখবেন। কোন দুর্বলতা থাকলে তার পরামর্শ অনুযায়ী বিদেশ থেকে অন্য ভালমানের ফুটবলার আনা হবে। এখন দেখার বিষয়, মোহামেডান এবারের লীগে কেমন ফল করে।
×