ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

আজ বাংলাদেশ আফগানিস্তান ম্যাচ

প্রকাশিত: ০৫:৪৭, ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৮

আজ বাংলাদেশ আফগানিস্তান ম্যাচ

মিথুন আশরাফ ॥ এশিয়া কাপের গ্রুপপর্বের শেষ ম্যাচে আজ আফগানিস্তানের বিপক্ষে লড়াই করবে বাংলাদেশ। ম্যাচটি বাংলাদেশ সময় বিকেল সাড়ে ৫টায় শুরু হবে। ম্যাচটি আবুধাবির শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে। ম্যাচটি বাংলাদেশের জন্য মহাগুরুত্বপূর্ণ। আফগানিস্তানের বিপক্ষে খেলা তাই। এশিয়া কাপে আফগানদের বিপক্ষে একবার খেলে (২০১৪ সালে) হেরেছে বাংলাদেশ। এবার প্রতিশোধ নেয়ার বিষয়ও আছে। এই ম্যাচটিতে কোনভাবেই হারা যাবে না। তাহলে সমালোচনা হবে। আর জিতলে সাধুবাদ পাওয়ার খুব বেশি সুযোগ নেই। বাংলাদেশ আগেই ‘সুপারফোরে’ খেলা নিশ্চিত করে নিয়েছে। তবে একসঙ্গে অনেক ঝামেলায় পড়ে গেল বাংলাদেশ দল। তামিম ইকবাল নেই। তার স্থানে মুমিনুল হক না নাজমুল হোসেন শান্তকে খেলাবে টিম ম্যানেজমেন্ট তা নিয়ে ভাবনা থাকছে। সাকিব আল হাসানের আঙ্গুলে চোট এখনও আছে। তা নিয়েই খেলছেন সাকিব। তবে আজকের ম্যাচে সাকিবকে বিশ্রাম দেয়া হতে পারে। আবার মুশফিকুর রহীম যে পাজরে ব্যথা নিয়ে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে খেলে সেঞ্চুরি করেছেন, মুশফিককেও নাকি বিশ্রামে রাখার পরিকল্পনা চলছে। এমন মহাগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগে একাধিক সিনিয়র ক্রিকেটার বিশ্রামে থাকতে পারেন। এখন প্রশ্ন উঠতে পারে কেন বিশ্রাম? বিশ্রাম দেয়াই উপযুক্ত হতে পারে। কারণ ‘সুপারফোরে’র খেলাটি যে পরেরদিন, শুক্রবারই খেলতে হবে। তাও আবার ভারতের মতো শক্ত প্রতিপক্ষের বিপক্ষে। গ্রুপপর্বের খেলা শেষ না হতেই ‘সুপারফোরে’র সূচী ঘোষণা করেই সব ঝামেলা পাকিয়ে দিয়েছে এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল (এসিসি)। যেখানে ভারতকে সবধরনের সুবিধা দেয়া হয়েছে। এশিয়া কাপের অন্য দলগুলো দুবাই ও আবুধাবিতে খেলবে। কিন্তু ভারত শুধুই দুবাইয়ে খেলবে। বাংলাদেশের ম্যাচ রয়েছে আজ আবুধাবিতে। পরেরদিনই দুবাইয়ে ভারতের বিপক্ষে খেলবে বাংলাদেশ। আজকের ম্যাচটিতে তাই জয়-হার কোন গুরুত্বই বহন করে না। কারণ এসিসি বাংলাদেশকে ‘বি’ গ্রুপ থেকে গ্রুপপর্বের দ্বিতীয় সেরা দল বিবেচনা করে নিয়েছে। আফগানিস্তানকে গ্রুপসেরা ধরেই ‘সুপারফোরে’র সূচী বানিয়েছে। আরেকদিকে ভারতকে গ্রুপসেরা ও পাকিস্তানকে গ্রুপ রানার্সআপ ধরেই ‘সুপারফোরে’র সূচী করেছে। তাতে বাংলাদেশেরই সবচেয়ে বেশি অসুবিধা হয়েছে। বাংলাদেশকেই শুধু টানা দুইদিন দুই ভেন্যুতে খেলতে হবে। মহা ঝামেলাতেই পড়ে গেছে বাংলাদেশ। এখন এমনই অবস্থা হয়েছে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচকে নিয়ে যত না ভাবনা হচ্ছে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচটি নিয়েই ভাবতে হচ্ছে কেশি। সাকিব ও মুশফিককে বিশ্রামে দেয়ার ভাবনা হতে পারে ভারতের বিপক্ষে ‘সুপারফোরে’র ম্যাচটিকে আমলে নিয়েই। আবার আফগানদের বিপক্ষে ম্যাচকেও গুরুত্ব না দিয়ে উপায় নেই। বাংলাদেশ ওয়ানডে দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা তাই আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচকেও গুরুত্ব দিচ্ছেন। বলেছেন, ‘রিল্যাক্সড হওয়ার সুযোগ নেই। কিন্তু আমার কথা হলো এই ম্যাচে যারা জিতবে তারা চ্যাম্পিয়ন হওয়ার কথা ছিল। মানে ‘বি ১’। কিন্তু সেটা আর হচ্ছে না। আমরা আগে থেকেই জানছি যে আমরা কার্যত এই গ্রুপের দ্বিতীয় দল জিতি বা হারি। এটা নিয়মের বাইরে চলে গেছে। এটাই মূল কথা। যারা খেলবে, দুই দলের কেউ রিল্যাক্সড হয়তো থাকবে না। কিন্তু পরিস্থিতিটা এমন করে তোলা হলো যে ব্যাখ্যা করা কঠিন।’ ‘সুপারফোরে’র অদ্ভুতুড়ে সূচী নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন মাশরাফি। বলেছেন, ‘সূচী বদল নিয়ে চিন্তা করার সুযোগই পাইনি। তবে অবশ্যই এটা হতাশার। প্রথম থেকেই আমাদের পরিকল্পনায় ছিল যে শ্রীলঙ্কাকে প্রথম ম্যাচে হারাতে পারলে আমরা হয়তো গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পথে এগিয়ে যাব। এরপর গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হলে ‘এ’ গ্রুপের রানার্সআপ দলের সঙ্গে প্রথম ম্যাচ খেলব সুপারফোরে। কিন্তু আজকে (বুধবার) সকালে জানতে পেরেছি, আমরা আফগানিস্তানের বিপক্ষে জিতি আর হারি আমরা ‘বি ২’ হয়ে গেছি। এটা অবশ্যই হতাশার। আফগানিস্তানের সঙ্গে ম্যাচটি এখন অবশ্যই আন্তর্জাতিক ম্যাচের মূল্য আছে। কিন্তু গ্রুপ ম্যাচ বলেন বা যা বলেন, একটা নিয়ম থাকে টুর্নামেন্টের। সেই নিয়মের বাইরে চলে যাচ্ছি আমরা। এটাই হতাশার।’ এমন সূচীতে কাজটা কঠিন হয়ে গেল বলেই মনে করছেন মাশরাফি, ‘জেদ নয়, কিন্তু কাজটা কঠিন। দেখুন ব্যাক টু ব্যাক ম্যাচ খেলছি আমরা কখন? একটা গ্রুপ পর্যায়ের ম্যাচ খেলে মূল ম্যাচে যখন ঢুকছি, তখন এই গরমে আমরা ব্যাক টু ব্যাক খেলছি। ২১, ২৩ ও ২৫ তারিখের ম্যাচগুলোই হলো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। সেখানে আমরা শুরু করছি ব্যাক টু ব্যাক খেলে। আমাদের তো ২৪ জন ক্রিকেটার নেই যে কালকে (আজ) মূল ১১ জনকে বিশ্রাম যদি দেই, অন্য ১১ জন খেলাব। আমাদের জন্য কাজটা আগে থেকেই কঠিন ছিল, ২০ তারিখ ম্যাচ খেলেই ২১ তারিখ সুপারফোরের প্রথম ম্যাচ খেলা। রিকভারির সময়ই তো নেই। ধরুণ কাল (আজ) পরে ফিল্ডিং করলাম, তারপর ২১ তারিখের ম্যাচে আগে ফিল্ডিং করলাম, তাহলে মাঝে ১০ ঘণ্টাও রিকভারির সময় নেই। এটা তো সত্যি, শরীরের সঙ্গে জোর করা চলে না। এই কন্ডিশনে যতটা ঘাম ঝরে, সেটা পুষিয়ে নিতেই ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টা লাগে অনেক সময়। আমি অজুহাত দিতে চাই না। কিন্তু ব্যাপারটা হলো, আগে তবু একটা ব্যাপার ছিল, গ্রুপ পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন হলে পরের ম্যাচে আমরা দেখতে পেতাম কোন প্রতিপক্ষ পাই বা কেমন হয়। কিন্তু এই সমীকরণের কোন সুযোগই নেই এখন। আমরা ‘বি ২’ হয়ে গেছি। খারাপ জিনিসটিই আমাদের দিকে এসেছে। এটা কতটা প্রভাব ফেলছে আমাদের মানসিকতায় সেটি নিয়ে কাজ করতে হবে।’ এখন এসব বিষয় নিয়ে ভাবনা বেশি না করে আফগানিস্তানকে আজ হারাতে পারলেই হয়।
×