ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

চিত্তই বিত্ত;###;বিলকিস বেগম

সমাজ ভাবনা ॥ বিষয় ॥ বিত্ত বনাম চিত্ত

প্রকাশিত: ০৬:০১, ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৮

সমাজ ভাবনা ॥ বিষয় ॥ বিত্ত বনাম চিত্ত

চিত্তই যদি না থাকে তবে বিত্ত দিয়ে কী হবে? পরোপকার করে মানুষ যে আনন্দ লাভ করে অন্য কিছুর মাধ্যমে কী তা পূরণ হয়? প্রয়োজনের অধিক ধনসম্পদ অশান্তি ও নানাবিধ বিপদ আপদের কারণ। তাই বুদ্ধিমান ব্যক্তি অতিরিক্ত সম্পদ মানব কল্যাণে ব্যয় করে প্রশান্তি লাভ করে। সমাজে চিত্তবান ও বিত্তবান উভয়েরই প্রয়োজন। হৃদয়বানদের টাকা থাকুক বা না থাকুক তারাই দেশ ও জাতির আসল সম্পদ। প্রত্যেকে যদি তার স্ব স্ব দায়িত্ব সঠিকভাবে সম্পাদন করে তবে তিনি হৃদয়বান। ডাক্তার বলুন, ইঞ্জিনিয়ার বলুন, শিক্ষক বলুন আর মন্ত্রিপরিষদের সদস্যদের কথাই বলুন তারা প্রত্যেকেই যদি নিজ নিজ দায়িত্ব সঠিকভাবে সম্পাদন করে তবে সোনার বাংলা স্বনির্ভর হতে ক’দিন লাগে। দেশ ও জাতির অনগ্রসরতার মূল কারণ হলো প্রত্যেকের ওপর অর্পিত দায়িত্বের অবহেলা। একজন সম্পদশালী ব্যাক্তির প্রধান কর্তব্য হলো নিকটাত্মীয়দের সেবায় এগিয়ে আসা। কেউ কাউকে সারাজীবন সাহায্য করতে পারে না। তাই প্রয়োজন, নিজ আত্মীয়দের স্বনির্ভর করে তোলা। এভাবে নিজ আত্মীয়দের প্রতি দায়িত্ব শেষ হয়ে গেলে মনোযোগ দিতে হবে সমাজের প্রতি। সমাজের দরিদ্র ও দুর্বল ব্যক্তিদের স্বনির্ভর করে গড়ে তুলতে হবে। এভাবে যদি প্রত্যেক ধনী ব্যক্তি নিজ নিজ আত্মীয়স্বজন ও নিজ সমাজের লোকদের স্বনির্ভর করে তুলতে পারে তবে অচিরেই বাংলাদেশ থেকে দারিদ্র্য বিদায় নিবে। আমাদের সমাজে কিছু ধনী ব্যক্তি আছেন, যারা সম্পদশালী হওয়ার পর তাদের নিকটাত্মীয়কেই ভুলে যায়। দরিদ্র আত্মীয়ের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে লজ্জাবোধ করে। সঠিক বিচারবুদ্ধি ও উন্নত মননশীলতার অভাবে কিসে লজ্জা কিসে সম্মান তারা বুঝতে পারে না। আবার অন্যায়ভাবে উপার্জিত সম্পদশালীদের পারিবারিক অশান্তি লেগেই থাকে। নিজেও সর্বদা অস্থির থাকে। নিজেই তো সমাজের সর্বনাশ সাধনকারী, তিনি আর সমাজের কথা কি ভাববেন। তাই অন্যায়ভাবে উপার্জিত সম্পদশালীদের প্রধান কাজ হচ্ছে অন্যায়পথে উপার্জন ছেড়ে দেয়া, সৎ পথে উপার্জনের চেষ্টা করা। এটিই তার জন্য মানবসেবা। ন্যায়সঙ্গতভাবে উপার্জিত সম্পদশালীরা এগিয়ে আসবেন আর্ত মানবতার সেবায়। সমাজে যারা বিত্তবান তারা যদি হৃদয়বানদের পাশে দাঁড়ান তবেই দেশ হবে স্বনির্ভর, স্বার্থক হবে মানবজীবন। প্রেম ও প্রীতির বাঁধনে বাংলা হয়ে উঠবে ছায়া ঢাকা, পাখি ডাকা, শান্তিপূর্ণ শ্যামল বাংলা। মিরপুর ঢাকা থেকে
×