ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

বিত্তের প্রাসাদে দরিদ্র মন

প্রকাশিত: ০৬:০৩, ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৮

বিত্তের প্রাসাদে দরিদ্র মন

সম্পদশালী হওয়ার ভেতর কোন গর্ব থাকা উচিত নয়। কেননা এটা স্রষ্টার দেয়া কল্যাণ। অন্যদিকে বর্তমানে ভাল হৃদয় বা দয়াবান ব্যক্তির খুবই অভাব। এর দ্বারা উপলব্ধি করা যায় যে, সম্পদ এবং হৃদয় দুটিই সম্পদ। তবুও দুয়ের মাঝে ব্যাপক পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। যেমন অর্থন্বেষা মানুষকে বিপথে পরিচালিত করে পক্ষান্তরে হৃদয়বান ব্যক্তি বা হৃদয়বান হতে চাইলে বিপথকে পরিহার করে। আমাদের বর্তমান সমাজে সম্পদ অর্জনকারী মানুষে ভরপুর। কিন্তু ভাল মনের মানুষ পাওয়া যায় না বললেই চলে। একটা দিক লক্ষ্য করলে আমরা বুঝতে পারি, সম্পদশালী যে কেহই হতে পারেন। এবং সেটা জোরপূর্বক পাওয়া সম্ভব। বিরাজমান অবস্থার দিকে তাকালে সহসাই বোঝা যায় মানুষ সম্পদের দিকে ছুটছে। শুধু তাই নয়; সম্পদের জন্য একজন অন্যজন এমনকি আপন ছেলেও বাবা-মায়ের সঙ্গে ঝগড়া করছে। এছাড়াও সম্পদ ভ্রাতৃত্ব নষ্ট, সুদ, ঘুস, চাঁদাবাজি, লুণ্ঠন, ডাকাতি, চুরি, হত্যা, রাহাজানি ইত্যাদি ঘটারও অন্যতম কারণ। অনেকে আবার সম্পদের মালিক হয়ে হিং¯্র হয়ে যায়। সম্পদকে অবহেলায় যেখানে-সেখানে ব্যয় করে। রাস্তায় পড়ে থাকা অবহেলিত মানুষ, অসহায়, গরিব-দুঃখী এবং খেটে খাওয়া মানুষকে দান-সদকা করতে ভুলে যায়। পরোপকারেই যে পরম বা শ্রেষ্ঠ ধর্ম তাও সে অনুধাবন করতে পারে না। এতে সম্পদশালীদের ক্ষীণ মনমানসিকতা এবং পাষাণবৎ হৃদয় ফুটে উঠে। অপরদিকে চিত্ত বা হৃদয়। শত চেষ্টা করেও কেউ এই সম্পদ জোরপূর্বক ছিনিয়ে নিতে পারে না। এটা চিরস্থায়ী। একজন ভাল মনের মানুষ সর্বদা সুখে জীবনযাপন করে। এই গুণ তাকে মন্দ কাজ থেকে দূরে রাখে। তার কোন শত্রু থাকে না। অর্থ সম্পদ যে কোন সময় চলে যেতে পারে এবং তা অস্থায়ী। কিন্তু ভাল হৃদয় সর্বদাই সঙ্গে থেকে যায় এবং সেটা স্থায়ী। কিছু কিছু ক্ষেত্রে হৃদয়ের দিক থেকে সম্পদশালী ব্যক্তি যদিও অভাব অনটনে ভোগে। তবে সে ভাল মনমানসিকতার অধিকারী হওয়ায় সকলের কাছে শ্রদ্ধার পাত্রে পরিণত হয়। এক হিসেবে অর্থ সম্পদশালী ব্যক্তির স্থান মানুষের মুখে থাকে। অপরদিকে হৃদয়বান ব্যক্তির স্থান মানুষের অন্তরে। অবশ্যই আমরা অর্থসম্পদ আয় করব। তবে সেদিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে অর্থসম্পদ যেন আমাদের বিপথে নিয়ে না যায়। আমাদের উদারচিত্তের পরিচয় দিতে হবে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে
×