ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সুমন্ত গুপ্ত

জেনিফার লরেন্স

প্রকাশিত: ০৭:০৭, ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৮

জেনিফার লরেন্স

অভিনয় করে এরই মধ্যে এ্যাকাডেমি এ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন জেনিফার লরেন্স। ২২ বছর বয়সে লরেন্স টিফ্যানি ম্যাক্সওয়েলের নির্দেশনায় একটি রোমান্টিক কমেডি চলচ্চিত্র সিলভার লিনিংস প্লে­বুক-এ অভিনয় করেন। এই অভিনয়ের জন্য তিনি দর্শকজনপ্রিয়তা এবং কয়েকটি পুরস্কার লাভ করেন। পুরস্কারের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল গোল্ডেন গ্লোব এ্যাওয়ার্ড ফর বেস্ট এ্যাক্ট্রেস এবং এ্যাওয়ার্ড ফর বেস্ট এ্যাক্ট্রেস। এই পুরস্কার জয়ের মাধ্যমে তিনি অস্কারে দ্বিতীয় সর্বকনিষ্ঠ সেরা অভিনেত্রীর খেতাব লাভ করেন। ২০১৩ সালে কমেডি ড্রামা এ্যামেরিকান হাসেল-এ অভিনয়ের জন্যে লরেন্স গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কার, বাফটা এ্যাওয়ার্ড এবং তৃতীয়বারের মতো এ্যাকাডেমি পুরস্কার জয় করেন। ফোর্বস ম্যাগাজিনের তৈরি তালিকা অনুযায়ী জেনিফার লরেন্স ২০১৫ সালের সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিকপ্রাপ্ত অভিনেত্রী। ক’দিন আগেই সংবাদ মাধ্যমগুলোর শিরোনামে উঠে এসেছিলেন রেড স্প্যারোখ্যাত তারকা জেনিফার লরেন্স। রেড স্প্যারো চলচ্চিত্রের মূল গল্প গড়ে উঠেছে একজন গুপ্তচরকে নিয়ে। প্রিমা ব্যালেরিনা ডোমিনিকা এগরোভা। হঠাৎ করে চোট পেয়ে নিজের চেনা পৃথিবীকে হারিয়ে ফেলে যে। যোগ দেয় রেড স্প্যারোতে। সেখানে নিজেকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করতে শেখে ডোমিনিকা। কঠিন ধাপ আর শিক্ষা পার করে গুপ্তচর হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করে সে। যোগ দেয় মিশনে। রাশিয়ান গুপ্তচর হিসেবে কাজ করে। তাকে কাজ দেয়া হয় সিআইএর ভেতরে গিয়ে কাজ করার, খবরাখবর সংগ্রহ করার। কিন্তু শক্তিশালী আর কঠোর এই নারীই একসময় ভালবেসে ফেলে সিআইএ অফিসার জোয়েল এডগার্টনকে। নিজের চারপাশের সব অবিশ্বাসের ভিড়ে বিশ্বাস করতে শুরু“ করে কেবল ওই একটি মানুষকেই। একটা সময় প্রশ্ন উঠে আসলেও কি শুধুই একজন রাশিয়ান গুপ্তচর সে, নাকি কেবল একজন ডাবল এজেন্ট? আঙ্গুল ওঠে তার দিকে! ফ্রান্সিস লরেন্স পরিচালিত এই চলচ্চিত্রটিতে আরও অভিনয় করেছেন জোয়েল এডগার্টন, শার্লট র‌্যামপিং, জেরেমি আয়রন্স, মেরি-লুইস পার্কারসহ আরও অনেকে। জেসন ম্যাথিউসের বই রেড স্প্যারো অনুসারে চিত্রায়িত এই চলচ্চিত্রটির ডোমিনিকা এগোরোভা চরিত্রে জেনিফার নিজের সর্বোচ্চটাই দিয়েছেন। তবে ছবিটি মুক্তি দিতে বেশ বেগ পেতে হয়েছে ছবির কলাকুশলীকে। প্রথমদিকে আর রেটিং পেয়ে অনেকটা বিপাকেই পড়ে গিয়েছিল রেড স্প্যারো। নৃশংসতা, নগ্নতা, অপ্রীতিকর ভাষা এবং যৌন নৃশংসতার জন্য আটকে যায় ছবিটি। যুক্তরাজ্যে আন্ডার ফিফটিন এবং কানাডায় ১৮এ রেটিং পায় চলচ্চিত্রটি। এ ছাড়া অস্ট্রেলিয়া ও অন্যান্য দেশে সহিংসতা এবং যৌনতার জন্য সমালোচিত হয়েছে চলচ্চিত্রটি। যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় মুক্তি পাওয়ার প্রথম সপ্তাহেই ১৮ থেকে ২৫ মিলিয়ন ডলার আয় করে নেবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সমালোচনায় অনেক এগিয়ে থাকলেও রোটেন টম্যাটোজের কাছ থেকে ৬৪ শতাংশ রেটিং পেয়েছে মুভিটি। ১০-এর মধ্যে একে দেওয়া হয়েছে ৬। মেটাক্রিটিক অবশ্য আরও একটু বেশি সমালোচনা করার মাধ্যমে ছবিটিকে দিয়েছে মাত্র ৫৬ শতাংশ রেটিং। ছবিটি জেনিফার লরেন্সের, গল্পটি যে বইটির ছায়া অবলম্বনে তৈরি করা হয়েছে সেটিও বেশ বিখ্যাত। ১৪০ মিনিট দৈর্ঘ্যরে মুভিটির শূটিং হয়েছে হাঙ্গেরীর বুদাপেস্ট, অস্ট্রিয়ার ভিয়েনা ও লন্ডনে। ২৭ বছর বয়সী জেনিফার লরেন্স ২০০৬ সাল থেকে অভিনয়ের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত রয়েছেন। একবার এ্যাকাডেমি এ্যাওয়ার্ড, একবার বাফটা এ্যাওয়ার্ড, তিনবার গোল্ডেন গ্লোব এ্যাওয়ার্ড, দুবার স্ক্রিন এ্যাক্টরস এ্যাওয়ার্ড, চারবার ক্রিটিকস চয়েস মুভি এ্যাওয়ার্ড বিজয়ী জেনিফার লরেন্স স্কুল জীবনেই বিভিন্ন নাটকে অভিনয় করতেন। মাত্র ১৪ বছর বয়সে নিউইয়র্ক শহরে নতুন মেধাবী মুখ খোঁজার প্রতিযোগিতায় নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। এরপর লস এ্যাঞ্জেলসে পাড়ি জমান জেনিফার। টিভি সিরিজে ছোটখাটো চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে নিজেকে একটি পর্যায়ে নিয়ে যেতে চেষ্টা শুরু করেন। ছোট পর্দা দিয়ে ক্যারিয়ার শুরু করে এক পর্যায়ে বড় পর্দার সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন তিনি। প্রথম তাকে বড় পর্দায় দেখা গিয়েছিল ‘গোল্ডেন পার্টি’ নামের মুভিতে। এরপর ‘দ্য পোকার হাউস’, ‘দ্য বার্নি প্লেইন উইন্টার বোন’, ‘লাইক ক্রেজি’, ‘দ্য বিভার’, ‘এক্সম্যান : ফার্স্ট ক্লাস’-এর মতো মুভিগুলোয় অভিনয় করতে নিজেকে দারুণ পরিপক্ব করে তোলেন। সেই পরিপক্বতার প্রমাণ পাওয়া যায় ‘দ্য হাঙ্গার গেমস’ সিরিজের সিনেমাগুলোয়। এখানে ‘ক্যাটনিস এভারডিন’ চরিত্রে জেনিফার লরেন্সের দুর্দান্ত অভিনয় দর্শকদের এতটাই আলোড়িত করে যে, ‘হাঙ্গার গেমস’ সিরিজের মুভিগুলোতে তিনি আবশ্যকীয় তারকায় পরিণত হয়েছেন। পাশাপাশি ‘এক্স ম্যান’ সিরিজের বিভিন্ন মুভিতে ‘র‌্যাভেন ডার্কহোলম’ চরিত্রেও তার অনবদ্য পারফরম্যান্স দর্শক-সমালোচকদের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা অর্জন করেছে বার বার। এর বাইরে ‘এ্যামেরিকান হাসেল’, ‘সারেনা’, ‘জয়’, ‘প্যাসেঞ্জার’ প্রভৃতি সিনেমায় বিচিত্র চমক নিয়ে উপস্থিত হয়েছেন।
×