বিশেষ প্রতিনিধি ॥ সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা তার নতুন বইয়ে সরকারের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ করেছেন সেসব ‘মনগড়া কথা’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, তিনি (বিচারপতি সিনহা) সাবেক হয়ে গেছেন। সাবেক হওয়ার অন্তর্জ্বালা আছে। সাবেক হওয়ার অন্তর্জ্বালা থেকেই তিনি এই মনগড়া বই লিখেছেন। আর কী পরিস্থিতিতে তিনি সাবেক হয়েছেন তা সবাই জানে। আমার প্রশ্ন, বিচারপতি সিনহা কেন আগে এসব বলেননি, দেশে ফিরে তিনি কেন জনগণের মুখোমুখি হচ্ছেন না?
বৃহস্পতিবার ঢাকার বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পিরোজপুর জেলা নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, বই লিখে মনগড়া কথা বলবেন বিদেশে বসে, সেটা নিয়ে কথা বলার কোন প্রয়োজন আছে? এখন বইতে যা লিখেছেন, তখন তা বলার সৎসাহস একজন বিচারপতির কেন ছিল না? এখন বিদায় নিয়ে কেন পুরনো কথা নতুন করে বলছেন? যা খুশি তাই বলছেন।
ক্ষমতা হারালে অনেক রকম ‘অন্তর্জ্বালা’ তৈরি হয় মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘তিনি যদি সত্যই বলতেন, তাহলে যখন প্রধান বিচারপতি ছিলেন তখন বললেন না কেন? সত্য কথা দেশের জনগণের মাঝে এসে বললেন না কেন? এখন বিদেশে বসে আপন মনে ভুতুড়ে কথা ছাপছেন। এটা কী আমাদের ও দেশের মানুষের বিশ্বাস করতে হবে? এর কোন যৌক্তিকতা নেই।’
নির্বাচন সামনে রেখে রাজনীতির মাঠে নতুন নতুন জোট গড়ে ওঠার বিষয়টি কিভাবে দেখছেন জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, দলে দলে জনে জনে যে ঐক্যের কথা আসছে, এসব কি জনমনে কোন প্রভাব ফেলবে? প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা কি কমে যাবে? আমাদের আস্থা আছে, বাংলাদেশের জনমত শেখ হাসিনার পক্ষে রয়েছে। আর নেতায় নেতায় ঐক্য হলে জনতার মধ্যে কোন প্রভাব পড়বে না। দেশের বর্তমান চিত্র অনুযায়ী এই মুহূর্তে জনমনে এর কোন প্রতিফলন হবে না। এটাই আমাদের অভিজ্ঞতা।
ওবায়দুল কাদের বলেন, জাতিসংঘের মহাসচিব নাকি তাদের (বিএনপি মহাসচিব) ডেকেছিলেন। কিন্তু পরে জানা গেল, জাতিসংঘের মহাসচিব তাদের আমন্ত্রণ করেননি। এটা এখন দিবালোকের মতো পরিষ্কার। তারা জাতিসংঘের প্রধান ফটকে গিয়ে বারবার অনুরোধ করে একটা তৃতীয় পর্যায়ের কর্মকর্তার সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন। বিএনপি জাতিসংঘের মহাসচিবের আমন্ত্রণপত্র নিয়েও মিথ্যাচার করেছে, প্রতারণা করেছে। এতে তারা দেশের জনগণকে অপমাণিত করেছে, গণতন্ত্রকে অসম্মান করেছে।
পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের আগে ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এবং তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক এ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
