ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বগুড়ায় গ্রহণযোগ্যতা বাড়াতে মাঠে সম্ভাব্য প্রার্থীরা

প্রকাশিত: ০৬:০১, ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৮

বগুড়ায় গ্রহণযোগ্যতা বাড়াতে মাঠে সম্ভাব্য প্রার্থীরা

স্টাফ রিপোর্টার, বগুড়া অফিস ॥ দেশের প্রাচীন নগরী মহাস্থানগড়ের বড় অংশটি বগুড়া-২ শিবগঞ্জ আসনের মধ্যে পড়েছে। জাতীয় সংসদের একাদশ নির্বাচনে মনোনয়ন দৌড়ে আছেন উল্লেখযোগ্য দলের অনেক প্রার্থী। সাধারণের মধ্যে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের গ্রহণযোগ্যতা বেশি। তবে এই আসন পঁচাত্তর-পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগ পায়নি। প্রতিবারই তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পড়তে হয়েছে। ১৯৯৬ ও ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালীন শিবগঞ্জ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) ছিলেন বিএনপি দলীয় এ্যাডভোকেট হাফিজার রহমান। ২০১৪ সালের দশম নির্বাচনে এমপি হন জাতীয় পার্টি বগুড়া জেলা সভাপতি শরিফুল ইসলাম জিন্নাহ। তার কর্মকা- এলাকার মানুষের মধ্যে তেমন সাড়া ফেলতে পারেনি। একই কারণে ইতোপূর্বে বিএনপির এমপিরাও এগোতে পারেননি। এই অবস্থায় আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের প্রতি সাধারণের আগ্রহ বেড়েছে। ওই আসনে মাঠ চষে বেড়াতে বেশি দেখা যাচ্ছে আওয়ামী লীগের দুইজন প্রার্থীকে। প্রায় তিন মাস ধরে এলাকায় জনসংযোগের পাশাপশি উঠান বৈঠক করছেন আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী আকরাম হোসেন। ২০১৪ সালের নির্বাচনে এই আসন শরিক জাতীয় পার্টিকে (জাপা) ছেড়ে দিলে এমপি হন জাপার শরিফুল ইসলাম জিন্নাহ। এবার একাদশ নির্বাচনের আগে আকরাম হোসেন মাঠ পর্যায়ের সাধারণের মধ্যে গ্রহণযোগ্যতা বাড়িয়ে তুলতে সর্বাত্মক চেষ্টা করছেন। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত তিনি ১শ’ ৪২টি উঠান বৈঠক করেছেন। প্রতিদিন বিকেলে ও মাগরিব নামাজের পর তিনি দুইটি করে গ্রামে যাচ্ছেন। বাড়ির বহির্আঙ্গিনায় (স্থানীয় কথায় খুলি) গিয়ে লোকজনদের সঙ্গে তার কর্মকা- তুলে ধরেছেন। ব্যক্তি ইমেজে তিনি বাহাদুরপুর নারায়নপুর ধাওয়াগিড়িসহ বিভিন্ন গ্রামে সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে এলাকার উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছেন। মহাস্থান ডিগ্রী কলেজের উন্নয়নকল্পে তিনি আর্থিক সহযোগিতাসহ নানা সহযোগিতা দিয়েছেন। শিবগঞ্জ সদর ইউনিয়নে তিনি নৌকাবাইচের আয়োজন করে গ্রামীণ সংস্কৃতি তুলে ধরেন। তার পাশপাশি বাংলাদেশ মেডিক্যাল এ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) বগুড়া জেলা শাখা ও স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) বগুড়া শাখার সাধারণ সম্পাদক ডাঃ রেজাউল আলম জুয়েল চিকিৎসা ক্যাম্পসহ নানা ধরনের সমাজ উন্নয়নমূলক কাজ করছেন। তিনি বরলেন, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) প্রত্যাহার করা হলে তিনি এবারের মনোনয়ন প্রত্যাশী। দলের স্বার্থে মনোনয়ন প্রত্যাশী হয়ে মাঠ পর্যায়ে সাধারণের মধ্যে গণযোগাযোগ অব্যাহত রেখেছেন। জাপার শরিফুল ইসলাম জিন্নাহ এবারও মনোনয়নের আশা করে আছেন। জাতীয় পার্টির আরেক মনোনয়ন প্রত্যাশী আবুল কাশেম ফকির দীর্ঘদিন থেকে এলাকায় গণসংযোগ করছেন। ভাল অবস্থান তৈরি করতে পেরেছেন। বিএনপির সাবেক এমপি হাফিজার রহমান এবারও মনোনয়ন প্রত্যাশী হয়ে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। বিএনপিতেই তার প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে আছেন মীর শাহে আলম, নূর আফরোজ বেগম জ্যোতি, এম আর ইসলাম স্বাধীন। জলঢাকায় গণসংযোগ স্টাফ রিপোর্টার নীলফামারী থেকে জানান, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নীলফামারী ৩ (জলঢাকা) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা সাবেক উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আব্দুল ওয়াহেদ বাহাদুর এলাকায় জনসংযোগ শুরু করেছে। বৃহস্পতিবার তিনি জলঢাকা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় জনসংযোগ পরিচালনা করে। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমি এই আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী। এ জন্য উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন ও একটি পৌর এলাকায় উঠান বৈঠক, পথসভা করছি। সেই সঙ্গে নির্বাচন পরিচালনার কমিটি গঠন করছি। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি দলের মনোনয়ন পাই বা না পাই তবে শেখ হাসিনাকে পুনরায় ক্ষমতায় রাখতে তাঁর মনোনীত প্রার্থীর বিজয় সুনিশ্চিত করতে কাজ করে যাব। তবে তিনি প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার কাছে দাবি করেছেন দুর্নীতিবাজ, জামায়াতপ্রীতি ও কর্মী বিচ্ছিন্ন নেতাকে যেন মনোনয়ন দেয়া না হয়। ঈশ্বরদীতে প্রার্থিতা চূড়ান্ত করতে মরিয়া তৌহিদ আক্তার পান্না ঈশ্বরদী থেকে জানান, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগ ও বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা নিজ নিজ দলীয় প্রার্থিতা চূড়ান্ত করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছেন। সব দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা তাদের সাধ্যমতো নানা কৌশল ও কর্মসূূচীর মাধ্যমে নিজেকে যোগ্য ও জনপ্রিয় প্রমাণ করার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। কোন কোন প্রার্থী বিলবোর্ড, পোস্টার, ফেস্টুন, দেয়াল লিখন এত পরিমাণ হয়েছে, যা দেখে মনে হচ্ছে নির্বাচনী এলাকা আকর্ষণীয় নানা ধরনের গহনার চাদরে আবৃত হয়েছে। আবার ঐসব প্রার্থীরাই ঘন ঘন শোডাউন, গণসংযোগ, পথসভা, সভাসমাবেশ, বঙ্গবন্ধুর নিহত পরিবারের এবং নিজ পরিবারের প্রয়াত সদস্যদের আত্মার শান্তি কামনায় মসজিদে মসজিদে মিলাদ মাহফিল ও কর্মী সমাবেশ ও খানাপিনার আয়োজন করছেন। এসব প্রার্থীদের মধ্যে নব্বইয়ের গণআন্দোলনে রাবির বিপ্লবী ছাত্র নেতা, রাবি ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি, কেন্দ্রীয় আওয়ামী যুবলীগের সাবেক সহ-আইন বিষয়ক সম্পাদক, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সম্পাদক ও বাংলাদেশ সুপ্রীমকোর্টের আইনজীবী নেতা এবং বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার অন্যতম আইনজীবী এবং আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী রবিউল আলম বুদু, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম লিটন, সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ ও পাবনা জেলা আওয়ামী লীগ নেতা ব্যারিস্টার সৈয়দ আলী জিরু এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি চারবার নির্বাচিত ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ এমপির নাম উল্লেখযোগ্য। এছাড়া বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী সাবেক এমপি সিরাজুল ইসলাম, শামসুদ্দিন আহমেদ মালিথা, জাকারিয়া পিন্টু, আকরাম আলী খান সঞ্জু, জামায়াতের অধ্যাপক আবু তালেব মন্ডল, জাতীয় পার্টির আনোয়ার হোসেন রুমি, হায়দার আলীকে গণসংযোগে দেখা যাচ্ছে।
×