চলছে শরতকাল। আকাশে সাদা মেঘের শুভ্রতা, নদীর তীরে কাঁশফুলের খেলা। সব মিলিয়ে যেন প্রকৃতি এক নবরূপে ধরণীতে ধরা দিয়েছে। নদীমাতৃক বাংলাদেশে যেমন রয়েছে হাজারো ছোট-বড়, নদ-নদী ঠিক তেমনি বেশ কটি দ্বীপ, ব-দ্বীপ ও রয়েছে। চারদিকে অথৈ পানি, চারপাশে জলরাশি মাঝখানে দ্বীপের মধ্যে একটি জেলা, এ যেন প্রকৃতির ভিন্ন এক রূপ। প্রাকৃতিক শোভায় সুশোভিত বাংলাদেশের বৃহত্তম প্রাচীন গাঙ্গেয় ব-দ্বীপ ভোলা। ইতিহাস, ঐতিহ্য আর পর্যটনের ব্যাপক সমাহার রয়েছে জেলাটি জুড়ে। ভোলা জেলার নামকরণ নিয়ে রয়েছে নানা মতভেদ। ‘অনেকেই মনে করেন ভোলা শহরের মধ্যে দিয়ে বয়ে যাওয়া বেতুয়া নামক খালটি এখনকার মতো অপ্রশস্ত ছিল না। এক সময় এটি বেতুয়া নদী নামে ও স্থানীয়দের কাছে বেশ পরিচিত ছিল। খেয়া নৌকার সাহায্যে নদীতে লোকজন পারাপারের ব্যবস্থা ছিল। বুড়ো এক মাঝি খেয়া নৌকার মাধ্যমে লোকজন এ-পাড় থেকে ওপাড় পারাপারের কাজ করত। তার নাম ছিল ভোলা গাজী পাটনি। অনেকেই মনে করেন হয়ত এ ভোলা গাজীর নামানুসারে ভোলার নামকরণ।’ ভোলায় রয়েছে বেশকিছু দৃষ্টিনন্দন স্থান। প্রিয় পাঠক আজ আমরা আপনাদের ভোলা জেলার পর্যটন কেন্দ্রিক কয়েকটি স্থানের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেব।
মনপুরা দ্বীপ
মনপুরার প্রধান আকর্ষণ হলো হাজার হাজার একরের ম্যানগ্রোভ বন। দিগন্ত জোড়া গাছের সারি মনপুরাকে আরও দৃষ্টিনন্দন করে তুলেছে। শীত মৌসুমে মনপুরাতে গেলে আপনি দেখতে পাবেন বাহারি রকমের অতিথি পাখি এবং তাদের কলকাকলিতে চারিপাশ যেন মুখরিত। সেখানে আরও দেখা মিলে হরিণের । হরিণের পালের ছোটাছুটির দৃশ্য দেখতে কার না মন চায় বলুন? সুবিশাল নদীর ওপর জেলে নৌকাসহ ছোট-বড় অসংখ্য নৌযানের সঙ্গে সাক্ষাত হয় সেখানে। মাঝে মাঝে মহিষের পালের সঙ্গেও দেখা হয়ে যায়। সরকারী সূত্র মতে বিগত এক দশক আগে চর মনপুরায় বনায়ন কর্মসূচী হাতে নেয়া হয়, যা থেকে এটি একটি আকর্ষণীয় পর্যটন স্থানে পরিণত হয়। এখানে প্রতিবছর ঐতিহ্যবাহী কৃষ্ণপ্রসাদ মেলা বসে। মনপুরার ইলিশও নাকি খুবই সুস্বাদু।
চর কুকরি মুকরি
নামটা শুনলেই কেমন যেন অদ্ভুত একটা ভাব চলে আসে। অনেকেই এ চরটিকে দ্বীপকন্যা হিসেবেও আখ্যায়িত করে থাকেন। ভোলা জেলার অন্যতম সৌন্দর্যম-িত স্থানগুলোর মধ্যে এটি অন্যতম। সাগর, ম্যানগ্রোভ বন, বন্যপ্রাণী সব মিলিয়ে যেন এক ভিন্নতার ছড়াছড়ি চরটিতে। স্থানীয়দের ধারণা আজ থেকে প্রায় চারশ’, পাঁচশ’ বছর পূর্বে এ দ্বীপটির আবির্ভাব। বিগত কয়েক বছর ধরে প্রশাসন স্থানটিতে বনায়ন কর্মসূচীর আওতায় এনে প্রচুর বৃক্ষরোপণ করে পর্যটনকেন্দ্র হিসাবে গড়ে তোলে। রয়েছে সুবিশাল বালুচর। মেঘনা নদীর এমন ঢেউ যেন আপনি সেখানে দাঁড়িয়ে অনায়াশে সাগর সৈকতে অবস্থান করছেন বলে মনে হতে পারে। প্রকৃতির অপরূপ এক সৌন্দর্য ফুটে উঠেছে স্থানটিতে।
ভ্রমণ ডেস্ক
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: