ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

বীরেন মুখার্জী

মাহফুজামঙ্গল ॥ ঐতিহ্যের নবরূপায়ণ

প্রকাশিত: ০৭:০৮, ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৮

মাহফুজামঙ্গল ॥ ঐতিহ্যের নবরূপায়ণ

‘মাহফুজামঙ্গল’ নামটি মধ্যযুগে রচিত কোন মঙ্গলকাব্যের নাম বলে মনে হতেই পারে। আমারও এমনটি হয়েছিল, সতীর্থ জাহিদ সোহাগের কাছে নামটি প্রথম শুনে। খটকা লেগেছে তখনই। মঙ্গলকাব্যের মধ্যে এই নামটি আগে কখনও শুনিনি। তবে কথা প্রসঙ্গে জেনেছি এর রচয়িতা ‘মজিদ মাহমুদ’। তাহলে এটি কীভাবে মধ্যযুগের রচনা হতে পারে! আমি বিস্ময়াভিভূত। এটি কী আধুনিক কাব্য? উত্তর হ্যাঁ হলে, সাহিত্যের উত্তরাধুনিক যুগে ‘মঙ্গলকাব্য’ রচনার প্রয়োজনীয়তা কতটুকু? প্রশ্ন জেগেছেÑ এটি কী তাহলে ‘ইসলামী আখ্যান’? নিজেকে প্রশ্ন করেছি, আশ্চর্য হয়েছি, পাঠের আগ্রহও বেড়েছে সমানুপাতিক হারে। কারণ ইতোমধ্যে আমি কবি নাসির আহমেদের কাব্যগ্রন্থ ‘বৃক্ষমঙ্গল’ এবং ‘জাকির তালুকদারের উপন্যাস ‘মুসলমানমঙ্গল’ রচনার খবর জানি। যা হোক, মার্চের শেষভাগ, ২০১২ সালের সন্ধ্যা। কবি জাহিদ সোহাগের কাছ থেকে বইটি সংগ্রহ করি। তার মৌখিক শর্ত ছিলÑ ‘পাঠ-উপলব্ধি জানাতে হবে, লিখিতভাবে।’ আমি বাসায় ফিরে কাব্যপাঠে মনোযোগ দিলাম। এ যেন পরীক্ষা প্রস্তুতি! মধ্যযুগের কবিদের রচিত ‘মঙ্গলকাব্য’র মূলে রয়েছে দেব-দেবীর মাহাত্ম্য বর্ণনা। পৌরাণিক ও লৌকিক এ দুই ধারায় রচিত মঙ্গলকাব্যগুলোর অন্যতম হচ্ছে ভারতচন্দ্র রায় গুণাকরের ‘অন্নদামঙ্গল’। হিন্দু পুরাণের নিম্নকোটি দেব-দেবী অর্থাৎ ধর্মশাস্ত্রে রীতিমতো পেছনের সারিতে থাকা দেবতাদের নিয়ে রচিত হয়েছিল এই আখ্যান। প্রচলিত ছিল, মঙ্গলকাব্য শুনলে কিংবা ঘরে সংরক্ষণ করলেও পুণ্য সঞ্চয় হয়। এটি বিশ্বাস, ধর্মবিশ্বাস। কিন্তু ‘মাহফুজামঙ্গলে’ কার বন্দনা করা হয়েছে? কাব্যগ্রন্থের প্রথম কবিতা ‘কুরশিনামা’ থেকে পাঠ নেয়া যাকÑ ঈশ্বরকে ডাক দিলে মাহফুজা সামনে এসে দাঁড়ায় আমি প্রার্থনার জন্য যতবার হাত তুলি সন্ধ্যা বা সকালে সেই নারী এসে আমার হৃদয় তোলপাড় করে যায়। তখন আমার রুকু আমার সেজদা জায়নামাজ চেনে না সাষ্টাঙ্গে আভূমি লুণ্ঠিত হই। ‘মাহফুজা’ এ কাব্যের একটি চরিত্র। কিন্তু কে এই মাহফুজা? ঈশ্বরকে ডাকলে সে এসে হাজির হয়, অহোরাত্র হৃদয় তোলপাড় করে। মাহফুজা কী কোন প্রেমময় সত্তা, যেখানে এক গভীর আবেগে লীন হওয়ার আকুতি জানান কবি? কবিতা পাঠ করতে গিয়ে ধন্দের মধ্যে পড়ি। ‘এবাদত’ কবিতায় তিনি বলেনÑ মাহফুজা তোমার শরীর আমার তছবির দানা আমি নেড়েচেড়ে দেখি আর আমার এবাদত হয়ে যায় তুমি ছাড়া আর কোনো প্রার্থনায় আমার শরীর এমন একাগ্রতায় হয় না নত তোমার আগুনে আমি নিঃশেষ হই যাতে তুমি হও সুখী কী চিন্তাপ্রসূত দার্শনিক কথামালা! উপলব্ধির চরমতম বহির্প্রকাশ। কবিতাগুলো পাঠে যে টান অনুভূত হয়, তা কীসের টান? প্রেমবাস্তবতার নাকি সমকালের কোন প্রপঞ্চের? মাহফুজামঙ্গলের প্রবেশক কবিতা থেকেই এই টান পাঠককে বইয়ের শেষ কবিতা পর্যন্ত নিয়ে যায়। এ মুগ্ধতা যতটা না ‘মাহফুজামঙ্গল’ নামের কারণে, তার চেয়েও অধিক সমকালীন জীবন ও সমাজের ভাষ্য রচনার কারণে। সৃষ্টির আদিতে যেমন মানবমানবীর প্রেম ছিল, তেমনি সে প্রেম এখনও বহমান। এই প্রেমের কারণেই ‘মাফফুজা’ প্রেমের দেবী বা প্রতীকী অর্থে ‘প্রেমের প্রতিমা’য় রূপান্তরিত হয়। তোমাকে পারে না ছুঁতে আমাদের মধ্যবিত্ত ক্লেদাক্ত জীবন। পঙ্ক্তিদ্বয়ের মাধ্যমে সেই মাহফুজাই যেন চিরকালীনতা থেকে সমকালীন প্রেক্ষাপটে উদ্ভাসিত হয়। তবে অনস্বীকার্য যে, একজন কবির শক্তিমত্তা তখনই ফুটে ওঠে, যখন তিনি নিজস্ব ঐতিহ্যে নানা মাত্রিক ব্যঞ্জনা কবিতায় লালন করেন। কবিতায় ঐতিহ্যের নবরূপায়ণ প্রাসঙ্গিক না হলে কবির বোধি সম্পর্কে পাঠক অনাগ্রহী হয়। মালার্মে বলেছিলেন, ‘শব্দই ব্রহ্ম’ আর এই শব্দ নিয়ে খেলেছেন মজিদ মাহমুদ। ‘মাহফুজা’কে তিনি নানা অর্থের পোশাক পরিয়ে বিশিষ্ট করে তুলেছেন। সুতরাং মাহফুজামঙ্গলের কাব্যমূল্য পর্যালোচনার চেয়ে বড় করে দেখার বিষয় হলো, তার সৃষ্টিকর্মের আবেদন কতখানি গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। সুউচ্চ পর্বতের শিখর থেকে গড়িয়ে পড়ার আগে তুমি পাদদেশে নদী বিছিয়ে দিয়েছিলে মাহফুজা আজ সবাই শুনছে সেই জলপ্রপাতের শব্দ নদীর তীর ঘেঁষে জেগে উঠছে অসংখ্য বসতি ডিমের ভেতর থেকে চঞ্চুতে কষ্ট নিয়ে পাখি উড়ে যাচ্ছে কিন্তু কেউ দেখছে না পানির নিচে বিছিয়ে দেয়া তোমার কোমল করতল আমাকে মাছের মতো ভাসিয়ে রেখেছে। এ কাব্যের উত্তরখ-ের ‘নদী’ শিরোনামের দ্বিতীয় কবিতাটি বাঙালীর কৃষিভিত্তিক সমাজব্যবস্থার কথাই স্মরণ করিয়ে দেয়, যা কৌম জীবনব্যবস্থায় কখনও অমলিন হওয়ার নয়। কবিতার ‘প্রতীকী ব্যঞ্জনার আক্ষরিক অর্থ সাধারণ পাঠকের না জানলেও চলে। কিন্তু নদীকেন্দ্রী যে সভ্যতার উন্মেষ ঘটেছিল, যা মানবজাতির সমান্তরালে এখনো বহমান, আবহমান এক অস্তিত্বস্রোত, সেটাকে অস্বীকারের কোন সুযোগ নেই।’ ঐতিহ্যের এই নবরূপায়ণের মধ্য দিয়েই মানুষ ভবিষ্যত অভিমুখে ছুটে চলেছে; কবি তা পাঠককে স্মরণ করিয়ে দেন। এবার একটু ইতিহাসের গর্ভে দৃষ্টি মেলা যাক। ‘মাহফুজামঙ্গল’কে পাঠক-সমালোচক ভিন্ন দৃষ্টিতে বিবেচনা করতেই পারে। পাঠকভেদে হয়তো কবিতার অর্থও বদলে যাবে, যাওয়াটাই সঙ্গত। আমার মনে হয়েছে ‘মাহফুজা’ নামের আড়ালে কবি এক গোপন কাব্যরাজনীতি পোষণ করেন। অনেকে মনে করেন, ভারতচন্দ্র রায়গুণাকরের মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে মঙ্গলকাব্যের সমাধি রচিত হয়েছে। এদের অবস্থান মূলত ভারতীয় ‘পুরাণ’-এর বিপক্ষে। তবে বাংলায় ঔপনিবেশিক সাহিত্যচর্চা নিয়ে অনেক বিতর্ক রয়েছে, সে বিতর্ক ‘মাহফুজামঙ্গল’ পাঠ-উপলব্ধির সঙ্গে সঙ্গত নয় বলেই মনে হয়েছে। এমনটি হলে তা হাজার বছরের বাংলা কবিতার ঐতিহ্যকেই ভিন্ন অর্থে ভূলুণ্ঠিত করা হয়। কবি মজিদ মাহমুদ যে মঙ্গলকাব্যের নবরূপায়ণের মাধ্যমে ঐতিহ্যের উত্তরাধিকারী হয়ে উঠতে চাইছেন, ‘মাহফুজামঙ্গল’ কাব্য এ প্রচেষ্টার ইঙ্গিত বহন করে। আবার মঙ্গলকাব্যের আদলে তিনি ‘ইসলামী চিন্তার’ জাগরণ ঘটাতে চ্যালেঞ্জ নিয়েছেনÑ গোটা কাব্যজুড়ে এমন আবহেরও সন্ধান মেলে। কবিতাগুলো পাঠে কবির ‘কাব্যরাজনীতির অবস্থান’ স্পষ্ট। কবিতায় মঙ্গলকাব্যে ব্যবহৃত ধর্মীয় ঐতিহ্যবাহী শব্দসমবায়Ñ মঙ্গলঘট, মনসা, চ-ী, বেদী, পূজা-অর্চনার নানাবিধ উপকরণজাত শব্দের বিপরীতে ‘জায়নামাজ’, ‘তছবির দানা’, ‘কুরশিনামা’, ‘এবাদত’ ইত্যাদি শব্দপ্রয়োগের মাধ্যমে তিনি ইসলামী মিথদর্শনকে সামনে টেনে আনেন। হতে পারে এটা কবির নতুন কাব্যকৌশল কিংবা রূপান্তরকামী চেতনা। আমার ক্ষুদ্রজ্ঞানে মজিদ মাহমুদের এই কাব্যসন্তরণকে বাঙালী ঐতিহ্যের নবরূপায়ণ বলেই মনে হয়েছে। কারণ ‘মাহফুজামঙ্গল’ কাব্যে ‘মাহফুজা’ প্রতীক মধ্যযুগের মঙ্গলকাব্যে পূজিত মনসা, চ-ী বা অন্নদার চেয়ে ক্ষমতা কিংবা অর্থ কোন অর্থেই খাটো নয়। ‘মাহফুজামঙ্গল’ পাঠে ‘মাহফুজা’ নামের আড়ালে এই নারীকল্পনাই যেন হয়ে ওঠে সর্বাগ্রগণ্য। আবার কখনও ‘মাহফুজা’কে সামনে রেখে কবির প্রেমাকাক্সক্ষা কিংবা আবেগের তীব্র উল্লম্ফন লক্ষণীয় হয়ে ওঠে। আমি তো দেখি তোমার সবুজ-স্তন, আগুনের খেত অসম্ভব কারুকাজে বেড়ে ওঠা তাজমহলের খুঁটি এমন অযোগ্য কবিকে তুমি সাজা দাও মাহফুজা যে কেবল খুঁজেছে তোমার নরম মাংস। কিংবা ‘মাতাল ডোম’ কবিতায়Ñ ‘আজ মধ্যরাতে তোমাকে যেতে হবে/ন্যান্সি রিগানের শয়নকক্ষে/যেখানে লেখা আছে তৃতীয় বিশ্বের বাঁচবার হিসাব/পার যদি সেখান থেকেই দেখে নিও/ক্রেমলিনের রুদ্ধ কপাট/ন্যান্সি তার বিছানায় আছে কিনা/রাইসা তার বিছানায় আছে কিনা/যখন দুই মাতাল পুরুষ মেতেছে পৃথিবীর বণ্টন/তখন তোমার আত্মা বল কার অঙ্কশায়িনী’ আবার উত্তরখ-ের ‘আশ্রয়’ কবিতায়Ñ তোমাকে সঙ্গে পেয়েও মাহফুজা আমার একাকী কেটে গেল দিন তুমিই তো ছিলে আমার শৈশবে মাতৃসঙ্গ আর যৌবনে বৈবাহিক অবস্থা আজ যদিও তোমার লোলচর্ম ঝুলে আছে আমার সমূল তৃষ্ণায় তবু তোমার বাহু ভিন্ন আমার কি রয়েছে আর কোন আশ্রয় এভাবে মাহফুজাকে কখনো ঈশ্বরী, কখনও দেবী কিংবা কামরূপিনী সত্তা হিসেবে চিত্রায়িত করতে সচেষ্ট থেকেছেন কবি। যেখানে মাহফুজা কেবল একটিমাত্র নারী প্রতিমূর্তি হিসেবে নয়, পুরো নারী সমাজেরই প্রতিনিধিত্ব করেছে। কবিতায় নারীকল্পনার এই বহুমাত্রিক রূপান্তরের প্রক্রিয়া বিশ্বসাহিত্য কিংবা বাংলা সাহিত্যের অগ্রজ কবি রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, জীবনানন্দ, শামসুর রাহমান, আল মাহমুদ, আবুল হাসান, সৈয়দ শামসুল হক, নির্মলেন্দু গুণ, মহাদেব সাহাসহ প্রত্যেক কবিই সচেতন-অবচেতনে করেছেন বা এখনও করে চলেছেন। কবিতায় নারীমানস প্রতিষ্ঠা কবিতার ধারাবাহিক পরম্পরা বলে প্রতীয়মান হয়। কবির ঋণগ্রহণ প্রবণতাও সাহিত্যে স্বীকৃত। তাই ‘মাহফুজামঙ্গল’ পাঠে আল মাহমুদের ‘সোনালি কাবিন’-এর বোধগত চেতনা পাখা মেললেও দোষের কিছু নেই। তবে রূপান্তরের সক্ষমতা একজন কবির ‘কবিশক্তির’ অন্যতম পরিচায়ক। কাব্যশক্তির এ কঠিন পরীক্ষায় কবি মজিদ মাহমুদ উত্তীর্ণ হয়েছেন। ‘মাহফুজামঙ্গল’ কাব্যকে পূর্বখ-, উত্তরখ- এবং যুদ্ধমঙ্গলকাব্যÑ এ তিন খ-ে ভাগ করা হয়েছে। তিন খ-ের বিশিষ্টতাও পৃথক। যুদ্ধমঙ্গলকাব্য শেষ হয়েছে ‘সন্ধি’ ও ‘গেরিলা যুদ্ধ’ কবিতা দিয়ে। ‘সন্ধি’ কবিতায় তিনি বলেনÑ অনেক হয়েছে লড়াই এবার সন্ধির পালা ক্লান্ত সৈনিকেরা অনন্ত ঘুমের কোলে নিয়েছে আশ্রয় দূরগামী অশ্বে সওয়ার হয়ে যারা এসেছিল প্রান্তরে কিংবা অগ্রগামী পদাতিকের বেশে তারা আজ কেউ নেই যুদ্ধের ময়দানে তাদের কর্তিত হাত, বিখ-িত দেহ ছিন্ন ভিন্ন পড়ে আছে অপরাহ্নের বাতাসে... সত্যিই তো, মানুষ সৃষ্টির আদি থেকে নানা রকম ঘাত-প্রতিঘাত মোকাবেলা করে চলেছে। কখনও প্রকৃতি আবার কখনও মানবসৃষ্ট নানাবিধ সমস্যার। অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে তাই যুদ্ধ ছাড়া মানুষের আর কিছুই অবশিষ্ট থাকে না। মানুষ যুদ্ধ করে, শক্তিক্ষয় করে ক্লান্ত-অসহায় হয়ে ‘সন্ধি’র কথা ভাবে। এই সন্ধি মানে নতুন করে জেগে ওঠার স্বপ্ন। গেরিলা যুদ্ধের প্রস্তুতি। সেখানেও মাহফুজা এসেছে অবলীলায়। এবার আমি সম্মুখ যুদ্ধের সমাপ্তি ঘোষণা করলাম মাহফুজা। এবার আমি গ্রহণ করলাম গেরিলা যুদ্ধের কৌশল। আমাদের পরস্পরকে ধরাশায়ী করা ছাড়া আর কোন যুদ্ধ থাকবে না পৃথিবীতে। মাহফুজামঙ্গলের সর্বশেষ কবিতা ‘গেরিলা যুদ্ধ’-এর এ পর্যন্ত এসে আবারও বিস্ময় দানা বাঁধে। কবিতাটির মাধ্যমে কবি যেন নতুন কিছুরই ইঙ্গিত দিয়েছেন। এ কবিতায় তিনি আরও বলেছেনÑ তুমি শাদা চামড়ার চতুর ব্রিটিশ! তুমি ভয়াল পাঞ্জাবি! তোমাকে পরাস্ত করা ছাড়া আমার রক্তের উদ্দামতা থামে না। আমাদের এই শত্রুতা আজন্ম মাহফুজা। কবির কাছে আমার প্রশ্ন করতে ইচ্ছে হয়, কেন মাহফুজাকে তিনি শোষক ব্রিটিশ কিংবা পাকিস্তানের রূপক অর্থে দাঁড় করিয়েছেন; যে কিনা বহুগুণে, বিচিত্ররূপে, বৈচিত্র্যময় সত্তা নিয়ে ‘মাহফুজামঙ্গল’ কাব্যে উপস্থিত! মাহফুজামঙ্গল কাব্যের নিবিড় পাঠ শেষে কোন উপসংহারে আসা সম্ভব হয় না। কারণ কবির বোধ প্রবহমান, চিরকালীন। শুধু ‘মাহফুজা’ নামটি নানা অভিঘাতের জন্ম দিয়ে চেতনাজুড়ে উজ্জ্বল থাকে।
×